ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সম্পদ ব্যবহারে করণীয়

প্রকাশিত: ০৪:৩০, ১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

সম্পদ ব্যবহারে করণীয়

এটা বড় আতঙ্কের বিষয় যে, মহামূল্যবান এবং সীমিত দুটি সম্পদ গ্যাস ও পানির ব্যাবহার সম্পর্কে আমাদের দেশের মানুষ একেবারেই অসচেতন। অধিক জনসংখ্যার এ বাংলাদেশ, যদি তার জনগণ সচেতন না হয় তবে যে কোন সম্পদ বিলীন হতে বেশি সময় লাগবে না। এ সচেতনতা নিয়ে কোন কাজও চোখে পড়ছে না। পাঠ্যবই, বিভিন্ন সচেতনতা মূলক বিজ্ঞাপন এমনকি কোন আলোচনায় পর্যন্ত বিষয়গুলো আসতে দেখি না। অথচ ভবিষ্যত বিশ্ব যে সঙ্কটে সবচেয়ে বেশি ভোগবে তা হলো : বিশুদ্ধ মিষ্টি পানি সঙ্কট, শক্তি সঙ্কট, জলবায়ু ও পরিবেশ বিপর্যয়, অধিক জনসংখ্যার আগ্রাসনে ভূমি এবং খাদ্য সঙ্কট। বাংলাদেশ এ সবগুলো সঙ্কটের মাঝখানে। বাংলাদেশের জন্য সঙ্কটগুলো আরও ভয়াবহ কারণ অসচেতন অধিক জনসংখ্যা। এ সঙ্কটের ভবিষ্যত কী? ভবিষ্যত আরও বিশৃঙ্খল হয়ে ওঠার আশঙ্কা। কীভাবে আমরা এ সঙ্কট তৈরি করছি : এক গ্লাস পানি টেপ থেকে নিতে গিয়ে দুই গ্লাস পানি ফেলে দিচ্ছি। বিভিন্ন হোটেল হাত ধোঁয়ার জন্য সাবান ব্যবহার করে যে সাবান সহজে গলে না ফলে এ সাবান ব্যবহারে পানি অপচয় হচ্ছে। আবাসিক এলাকায় যারা বসবাস করে তারা গ্যাস-পানি ব্যবহারে মোটেই সতর্ক ও সচেতন নয়। গ্যাসের চুলায় জামা কাপড় শুকাতে দেওয়া ইত্যাদি। কী করণীয় : বিদ্যালয় থেকে শুরু করতে হবে। পাঠ্যপুস্তকে ‘সম্পদ সংরক্ষণে সচেতন ও করণীয়’ এবং ‘ভবিষ্যত শক্তির উৎস’ সম্পর্কে অধ্যায় রাখতে হবে। বিশেষ করে শহরের বিদ্যালয়গুলোতে প্রতিমাসে ১বার শিক্ষক-শিক্ষার্থী-অভিভাবক সভা হতে হবে। শিক্ষকদের সচেতনতা বিষয়ে মনোযোগ দিতে হবে আর গুরুত্বের সঙ্গে বিষয়টা শিক্ষার্থীদের আর অভিভাবক সভায় তুলে ধরতে হবে। চলচ্চিত্র, নাটক, গণমাধ্যম ও শিল্প সাহিত্যের সব বিভাগেই আসতে হবে। এ বিষয়ে চিত্রনাট্য, কলাম আহ্বান করা যেতে পারে জনসাধারণের কাছ থেকে। নবায়নযোগ্য জ্বালানির দিকে অধিক গুরুত্ব দিতে হবে। গ্যাসের ওপর চাপ কমিয়ে এখন থেকেই সৌরবিদ্যুতের দিকে ঝোঁক সৃষ্টি করতে হবে। নদী রক্ষার জন্য বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ রাখা উচিত। যেভাবেই হোক নদী রক্ষা করতেই হবে। জনগণ সচেতন হলে বিশাল চাহিদার ওপর জোগানের চাপ কমবে। তাই জনগণকে সচেতন করতে সরকারের উচিত অর্থ বরাদ্দ রাখা। শিল্প কারখানা করার আগে পরিবেশের দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে। কৃষি পণ্যের ব্যাবহার সর্বাধিক করতে হবে এবং কৃষিভিত্তিক শিল্প তৈরিতে ঝোঁক দেখাতে হবে। শিল্পের আবর্জনা পুনঃব্যবহার অবশ্যই নিশ্চিত প্রয়োজনে রিসাইক্লল শিল্পের কথা চিন্তা করতে হবে। শিল্প হতে হবে সৌরবিদুতের ওপর ভিত্তি করে। ব্যবহারের বদলে অপচয়ই বেশি করি আমরা এ মহামূল্যবান প্রাকৃতিক আর জীবন ধারণের মৌলিক সম্পদ। তাই অভাব অথবা সঙ্কট রুখতে সচেতনতার বিকল্প কিছুই নয়। লক্ষ্মীপুর থেকে
×