ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

সমস্যায় জর্জরিত রাঙ্গুনিয়া স্বাস্থ্য কেন্দ্র

প্রকাশিত: ০৬:১৯, ৩১ জানুয়ারি ২০১৮

সমস্যায় জর্জরিত রাঙ্গুনিয়া স্বাস্থ্য কেন্দ্র

নিজস্ব সংবাদদাতা, রাঙ্গুনিয়া, ৩০ জানুয়ারি ॥ নানা সমস্যায় আক্রান্ত রাঙ্গুনিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্র। হাসপাতালের একমাত্র এক্সরে মেশিনটি সচল ছিলনা কোনদিন । চিকিৎসা সামগ্রীর অভাব নিরাপত্তাহীন ক্যাম্পাস, পানীয় জলের সঙ্কট, পর্যাপ্ত ওষুধপত্র নেই ইত্যাদি দুরবস্থায় সাধারণ রোগীরা চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। প্রতিদিন গড়ে কমপক্ষে সাড়ে ৩শ’ রোগী হাসপাতালের বহির্বিভাগে চিকিৎসার জন্য আসে। কিন্তু পর্যাপ্ত ডাক্তার থাকলেও পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যবস্থা না থাকায় অনেকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পায় না। জরুরী বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা দুর্ঘটনাজনিত রোগীর পর্যাপ্ত চিকিৎসা ব্যবস্থা নেই। প্রায়ই রোগীকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়। ৫০ শয্যার এই হাসপাতালে অধিকাংশ সিট ভাঙ্গাচোরা। সুপেয় পানির ব্যবস্থা নাই। ব্যবহারের পানি সরবরাহ থাকলেও সুয়ারেজ সমস্যায় পানি জমে বাথরুমগুলো ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে যায়। হাসপাতালের এক্সরে মেশিনটি অকেজো। হাসপাতালের একমাত্র এক্সরে মেশিন ১০/১৫ বছর ধরে অব্যবহৃত অবস্থায় অকেজো হয়ে রয়েছে। জানা গেছে, এক্সরে মেশিন আনা হলেও ব্যবহারের জন্য হাসপাতালে টেকনিশিয়ান নিয়োগ দেয়া হয়নি। অব্যবহৃত অবস্থায় নতুন এক্সরে মেশিন অকেজো হয়ে গেছে। সম্প্রতি মেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার এক্সরে মেশিনটি সম্পূর্ণ অকেজো হয়ে গেছে বলে ঘোষণা দিয়েছেন। বর্তমানে এর মেরামতও অযোগ্য হয়ে গেছে। হাসপাতালে ওটি রুম থাকলেও শল্যচিকিৎসার প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি নেই। সোলার বিদ্যুত ব্যবস্থা নেই। জেনারেটরটিও অকেজো । সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলা সদর ইছাখালীতে হাসপাতাল ক্যাম্পাসের সীমানা প্রাচীর বিভিন্ন স্থানে ভেঙ্গে গেছে, স্থানীয় বাজারের ময়লা আবর্জনা এনে ফেলা হচ্ছে ক্যাম্পাসের ভেতরে। আবর্জনার ভাগারে পরিণত হয়েছে ক্যাম্পাসের একাংশ। দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে হাসপাতাল এলাকায়। তাছাড়া কর্মচারী ও ডাক্তারগণের বাসা এবং আবাসিক ভবনগুলোও একেবারে জরাজীর্ণ অবস্থা। নিরাপত্তাজনিত আতঙ্ক বিরাজ করে সবসময়। ভাঙ্গা সীমানা প্রাচীর দিয়ে সহজে হাসপাতালে প্রবেশ করে বখাটেরা উৎপাত করে। হাসপাতালের একমাত্র এ্যাম্বুলেন্সটি জরাজীর্ণ অবস্থা। প্রায় সময় অচলাবস্থায় থাকে। জরুরী রোগী পরিবহনের সুযোগ সুবিধা পায় না রোগীরা। উপজেলার রাজানগর গ্রামের মোহাম্মদ হোসেন (৬০) পেটের ব্যথায় আক্রান্ত হয়ে গত রবিবার সকাল বেলা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। একই গ্রামের আবু আহমদ (৬৫) শ্বাসকষ্টজনিত রোগে ১০ দিন আগে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রয়োজনীয় ওষুধের বেশিরভাগই বাজারের দোকান থেকে কিনে আনতে হয়। আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডাক্তার এসএম ইফতেখারুল ইসলাম হাসপাতালে বিরাজমান দুরবস্থার বিষয়ে জানান, হাসপাতালে ২১ জন ডাক্তারের পদ থাকলেও নিয়োগ আছে ১৬ জন। তাতেও ছুটি, ট্রেনিং , প্রেষণে অন্যত্র দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে দৈনিক ৭/৮ জন ডাক্তারের অনুপস্থিতি থাকে। বর্তমানে অসুস্থতার কারণে বেশ কিছুদিন ধরে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ছুটিতে আছেন। ৬/৭ ডাক্তারকে প্রতিদিন আউট ডোরে অতিরিক্ত রোগীর লোড নিয়ে চিকিৎসা সেবা দিতে হয়। হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার ওষুধপত্র ছাড়া জটিল ও কঠিন রোগের চিকিৎসা সেবা দেয়ার সুযোগ নেই।
×