ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় দুদকের কৌঁসুলি

খালেদাসহ ৪ আসামির সর্বোচ্চ শাস্তি ৭ বছর কারাদণ্ড দাবি

প্রকাশিত: ০৫:৫৭, ৩১ জানুয়ারি ২০১৮

খালেদাসহ ৪ আসামির সর্বোচ্চ শাস্তি ৭ বছর কারাদণ্ড দাবি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুনীতি মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তিতর্ক শেষ হয়েছে। দুদকের প্রধান কৌঁসুলি মোশারফ হোসেন কাজল মঙ্গলবার যুক্তিতর্কে বলেন, খালেদা জিয়া অন্য আসামিদের সহযোগিতায় ক্ষমতার অপব্যবহার করে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে অবৈধ উৎস থেকে ট্রাস্টের হিসাবে মোট ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা অবৈধভাবে সংগ্রহ, জমা এবং উত্তোলন করে পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার করে ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ ২নং আইনের ৫(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। তাই আমরা বেগম খালেদা জিয়াসহ চার আসামির সর্বোচ্চ শাস্তি ৭ বছরের কারাদ- দাবি করছি। তিনি ৩২ জন আসামির সাক্ষ্য গ্রহণের বিষয় এবং মামলার সারমর্ম তুলে ধরেন আদালতে। মঙ্গলবার রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান কৌঁসুলি মোশারফ হোসেন কাজল তার যুক্তিতর্ক শেষ করেন। এর পর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার আসামি ট্রাফিক বিভাগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্নার পক্ষে পরবর্তী যুক্তি উপস্থাপনের জন্য আজ বুধবার দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। রাজধানীর বকশীবাজারের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার খেলার মাঠে স্থাপিত ঢাকার ৫নং বিশেষ জজ ড. আখতারুজ্জামান এ আদেশ প্রদান করেছেন। এদিন সকাল ১১টা ৫৪ মিনিটে আদালতে উপস্থিত হন বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া। এরপর দুপুর ১২টা ১০ মিনিটে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি মোশারফ হোসেন কাজল যুক্তি উপস্থাপন শুরু করেন। বেলা ২টা ৫৮ মিনিটে তিনি যুক্তি উপস্থাপন শেষ করেন। বেগম জিয়া তিনটায় আদালত ত্যাগ করেন। দুদকের আইনজীবী মোশারফ হোসেন কাজল প্রায় দুই ঘণ্টা যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে এ কারাদ- চান। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কাজ নির্ধারিত থাকে। অথচ প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে খালেদা জিয়া পদ গোপন করে নামসর্বস্ব জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট গঠন করেন। কিন্তু এ ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে অর্থ সংগ্রহ করে এর কল্যাণে কোনো কাজ করেননি। প্রধানমন্ত্রীর পদ একটি প্রতিষ্ঠান। তার কাজ নির্ধারিত থাকে। প্রধানমন্ত্রীর পদ গোপন করে প্রধানমন্ত্রী থাকা অবস্থায় খালেদা জিয়া নামসর্বস্ব জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট গঠন করেন। কিন্তু অবৈধভাবে অর্থ সংগ্রহ করে ট্রাস্টের কল্যাণে সরষে পরিমাণ কাজও করেননি। এর আগে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বেগম খালেদা জিয়ার সর্বোচ্চ সাজা যাবজ্জীবন কারাদ- দাবি করেছেন দুদকের আইনজীবী মোশারফ হোসেন কাজল। খালেদা জিয়া ছাড়াও বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ৬ জন আসামি রয়েছে। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলার রায় ঘোষণা করা হবে আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি। আদালতে দুদকের পক্ষে প্রধান কৌঁসুলি মোশারফ হোসেন কাজল খালেদা জিয়াসহ ছয় আসামির সর্বোচ্চ সাজা দাবি করেন। অন্যদিকে খালেদা জিয়ার আইনজীবী আবদুর রেজাক খান মামলাটিকে সারবত্তাহীন উল্লেখ করে খালেদা জিয়ার খালাস চান। দুটি মামলাই করেছে দুদক। এদিকে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় মঙ্গলবার যুক্তিতর্কে মোশারফ হোসেন কাজল বলেন, খালেদা জিয়া ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে তার নিজের ছয় নম্বর শহীদ মঈনুল রোডের বাড়ির নাম ব্যবহার করে শহীদ জিয়াউর রহমান চ্যারিটেবল ট্রাস্ট নামে গুলশান সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে ট্রাস্টটি রেজিস্ট্রি করেন। উক্ত দলিলে তার কোন সম্পত্তি রেজিস্ট্রি করেছেন তার উল্লেখ নেই। ট্রাস্ট সম্পর্কে অন্য কোন ব্যক্তির কিছু জানার সুযোগ ছিল না। তিনি ট্রাস্টের কাজে তার রাজনৈতিক সচিব আবুল হারিছ চৌধুরী এবং তার এপিএস জিয়াউল ইসলাম মুন্না ও অন্যদের সহযোগিতায় সোনালী ব্যাংক প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় শাখায় লেনদেন করেন। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রীর পদমর্যাদার বলে ক্ষমতা অবৈধ প্রভাব খাটিয়ে সংগৃহীত ১ কোটি ৩৫ লাখ টাকা তার রাজনৈতিক সচিবের সহযোগিতায় সংগ্রহ করেন। খালেদা জিয়া উক্ত টাকার বৈধ উৎসের বিষয়ে জানতে না চেয়ে বরং উহার বৈধতার প্রচেষ্টায় মেট্রোমেকার্স এ্যান্ড ডেভেলপার লিমিটেড এর নাম ব্যবহারের অপচেষ্টা করেছেন।
×