ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

খালেদার মামলার বিষয়ে বিদেশী কূটনীতিকদের সাহায্য চাইল বিএনপি

প্রকাশিত: ০৫:৪৮, ৩১ জানুয়ারি ২০১৮

খালেদার মামলার বিষয়ে বিদেশী কূটনীতিকদের সাহায্য চাইল বিএনপি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মামলায় ফাঁসিয়ে খালেদা জিয়াকে নির্বাচন থেকে দূরে সরিয়ে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে বিদেশী কূটনীতিকদের কাছে নালিশ দিয়েছে বিএনপি। খালেদা জিয়াকে যেন অন্যায়ভাবে মামলায় ফাঁসানো না হয় এবং একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন যেন অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে করার ব্যবস্থা হয় সে ব্যাপারে বিদেশী কূটনীতিকদের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে দলটির পক্ষ থেকে। মঙ্গলবার বিকেলে বিএনপি চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয়ে বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠককালে বিএনপি নেতারা দলের পক্ষ থেকে এ সহযোগিতা চান বলে জানা গেছে। সূত্র জানায়, বৈঠকের শুরুতেই বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার দুর্নীতি মামলার রায়কে সামনে রেখে ঢাকায় কর্মরত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের কাছে খালেদা জিয়ার মামলা ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ দেশের সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে একটি লিখিত প্রতিবেদন আকারে তুলে ধরেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। খালেদা জিয়ার মামলার রায় নেতিবাচক হলে এ রায় কিভাবে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে তাও কূটনীতিকদের জানানো হয়। বিকেল সোয়া ৪টায় বৈঠক শুরু হয়ে চলে সোয়া ৫টা পর্যন্ত এক ঘণ্টা। বৈঠকে ভারত, পাকিস্তান, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য, জাপান, কানাডা, কুয়েত, অস্ট্রলিয়া, স্পেন, সুইজারল্যান্ড, সৌদি আরব, ইতালি, ভ্যাটিক্যান, ডেনমার্ক, থাইল্যান্ড, নেপাল, মরক্কো, লেদারল্যান্ডসসহ বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরা উপস্থিত ছিলেন বলে বিএনপি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে। বৈঠকে বিএনপি নেতাদের মধ্যে ছিলেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা সাবিহ উদ্দিন আহমেদ, দলের বিশেষ সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপনসহ আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা প্রমুখ। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বিদেশী কূটনীতিকদের সঙ্গে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। খালেদা জিয়ার মামলা সম্পর্কে কোন আলোচনা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে সাংবাদিকদের প্রশ্ন এড়িয়ে যান বিএনপি মহাসচিব। এসময় তিনি বলেন, দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়েই তাদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। বিদেশী কূটনীতিকদের সঙ্গে নিয়মিত কর্মসূচীর অংশ হিসেবে আমাদের বৈঠক হয়েছে। বৈঠক শেষে বিএনপি চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয় ত্যাগ করার সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিলেট থেকে নির্বাচনী প্রচার শুরু নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। নির্বাচন কমিশনকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, সরকারী খরচে প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী প্রচারাভিযান বন্ধ করতে হবে। না হলে বিএনপিকে জনসভা করার সুযোগ দিতে হবে। মওদুদ বলেন, মঙ্গলবার থেকে প্রধানমন্ত্রী আনুষ্ঠানিকভাবে প্রচারাভিযানে নেমে গেছেন। স্পষ্টভাবে নৌকায় ভোট চেয়েছেন। তিনি বলেছেন, ডিসেম্বরে ভোট হবে। তার এই অবস্থানে প্রশ্ন জাগে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা আসলে কি। সাধারণত তফসিল ঘোষণার পর নির্বাচনী প্রচার শুরু হয়। কিন্তু প্রায় একবছর আগেই সরকারী দল রাষ্ট্রীয় খরচে নির্বাচনী প্রচারাভিযান শুরু করেছে। তাহলে নির্বাচন কমিশন কতটুকু শক্ত? নির্বাচন কমিশনকে উদ্দেশ্য করে মওদুদ আহমদ বলেন, তাদের এ ধরনের সরকারী খরচে প্রচারাভিযান বন্ধ করতে হবে। না হলে আমাদেরও জনসভা করার সুযোগ দিতে হবে। আমরা আগেই বলেছি, লেবেল প্লেয়িং ফিল্ড থাকতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর প্রচারাভিযান লেবেল প্লেয়িং ফিল্ডের নমুনা নয়। এখন দেখা যাচ্ছে প্রধানমন্ত্রী আনুষ্ঠানিকভাবে সিলেটে ভোট চাইছেন, আর আমরা আদালতের বারান্দায়।
×