ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মেলায় কোনো ধরনের ব্যাগ নিয়ে প্রবেশ নিষেধ

প্রকাশিত: ০২:২৯, ৩০ জানুয়ারি ২০১৮

মেলায় কোনো ধরনের ব্যাগ নিয়ে প্রবেশ নিষেধ

অনলাইন রিপোর্টার ॥ বৃহস্পতিবার শুরু হচ্ছে বিশ্বের দীর্ঘ সময় ব্যাপ্ত বইয়ের মেলা, অমর একুশে গ্রন্থমেলা। বৃহস্পতিবার বেলা তিনটায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করবেন মাসব্যাপী এ বইমেলা। ইতিমধ্যেই মেলাকে সামনে রেখে প্রায় সম্পন্ন হয়েছে সব প্রস্তুতি। মেলার ইতিহাসে সবচেয়ে বৃহৎ পরিসরে বসবে এবারের বইমেলা। বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রায় পাঁচ লাখ বর্গফুট জায়গায় হবে মেলার আয়োজন। থাকছে কঠোর নিরাপত্তা। যার কারণে মেলায় কোনো ধরনের ব্যাগ নিয়ে প্রবেশ করতে পারবেন না দর্শনার্থীরা। এ ছাড়া এবার যেকোনো নতুন বই মেলায় এলে বাংলা একাডেমি তা যাচাই-বাছাই করে দেখবে। বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান বলেন, এবার মেলা চলবে রাত নয়টা পর্যন্ত। সেই সঙ্গে মেলার পাশাপাশি ২২ থেকে ২৪ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক সাহিত্য সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। সম্মেলনে স্বাগতিক বাংলাদেশসহ আটটি দেশের ১৫ জন কবি-লেখক-বুদ্ধিজীবী অংশ নেবেন। এবারের মেলার বাংলা একাডেমি চত্বর উৎসর্গ করা হয়েছে সদ্যপ্রয়াত কথাসাহিত্যিক শওকত আলীকে। এ ছাড়া সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের অংশকে ভাগ করা হয়েছে ১১ জন বিশিষ্ট ব্যক্তির নামে। এবারের মেলা বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রায় পাঁচ লাখ বর্গফুট জায়গায় অনুষ্ঠিত হবে। এই পরিসরটা অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় বেশি। একাডেমি প্রাঙ্গণে ৯২টি প্রতিষ্ঠানকে ১৩৬টি এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ৩৬৩টি প্রতিষ্ঠানকে ৫৮৩টি ইউনিট; মোট ৪৫৫টি প্রতিষ্ঠানকে ৭১৯টি ইউনিট এবং বাংলা একাডেমিসহ ২৪টি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানকে মোট ১৫ হাজার ৫৩৬ বর্গফুট আয়তনের ২৫টি প্যাভিলিয়ন বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ১৩৬টি লিটল ম্যাগাজিনকে লিটল ম্যাগাজিন কর্নারে স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। গ্রন্থমেলায় বাংলা একাডেমি এবং মেলায় অংশগ্রহণকারী অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ২৫ শতাংশ কমিশনে বই বিক্রি করবে। মেলার মূল পৃষ্ঠপোষক বিকাশ লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কামাল কাদের জানিয়েছেন, বিকাশের মাধ্যমে বই কিনলে সর্বোচ্চ ৩৫ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় মিলবে। গতবারের মতো এবারও মেলার ইভেন্ট ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রয়েছে নিরাপদ ইভেন্টস। এর চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন জানান, মেলায় আগত মানুষের বসার স্থানসহ নান্দনিক ফুলের বাগানও নির্মাণ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে গতবারের ত্রুটি থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার আরও সুন্দর ও পরিপাটি করে মেলাকে সাজানো হচ্ছে। মেলা পরিচালনা কমিটির সদস্যসচিব ও বাংলা একাডেমির পরিচালক জালাল আহমেদ জানান, গ্রন্থমেলায় টিএসসি, দোয়েল চত্বর দিয়ে দুটি মূল প্রবেশপথ, বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে তিনটি পথ, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রবেশ ও বাইরের ছয়টি পথ থাকবে। মেলার নিরাপত্তা নিয়ে তিনি বলেন, গ্রন্থমেলার প্রবেশ ও বাহিরপথে পর্যাপ্তসংখ্যক আর্চওয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। মেলার সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবেন পুলিশ, র্যাব, আনসার, বিজিবি ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর নিরাপত্তাকর্মীরা। নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার জন্য মেলায় এলাকাজুড়ে ২৫০ ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরার ব্যবস্থা করা হয়েছে। গ্রন্থমেলা সম্পূর্ণ পলিথিন ও ধূমপানমুক্ত থাকবে। আজ দুপুরে মেলা পরিদর্শনে আসেন ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া। পরিদর্শন শেষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্থাপিত অস্থায়ী পুলিশ কন্ট্রোল রুমের সামনে সংবাদ সম্মেলনে নগরবাসীকে অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, মেলায় কোনো প্রকার ব্যাগ, ব্যাগপ্যাক, ভ্যানিটি ব্যাগ, ট্রলি ব্যাগ, দাহ্য পদার্থ, ধারালো অস্ত্র, আগ্নেয়াস্ত্র¿নিয়ে আসা যাবে না। এ বিষয়ে বাংলা একাডেমির কোনো সিদ্ধান্ত নেই বলে জানান জালাল আহমেদ। তিনি বলেন, ‘মেলার নীতিমালায় এমন কোনো কিছু নেই। আমরা নীতিমালা অনুযায়ীই মেলা পরিচালনা করব।’ তিনি বলেন, যদি কোনো লেখক ও প্রকাশকের বিশেষ নিরাপত্তার প্রয়োজন হয়, তাহলে মেলায় স্থাপিত পুলিশ কন্ট্রোল রুমে যোগাযোগ করলে তাঁদের নিরাপত্তা দেওয়া হবে। যেকোনো নতুন বই মেলায় এলে বাংলা একাডেমি তা যাচাই-বাছাই করে দেখবেন। যাতে করে কোনো বই ধর্মীয়, সামাজিক ও জাতীয় মূল্যবোধে আঘাত না করতে পারে। আজ মঙ্গলবার বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে করেছে বাংলা একাডেমি। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন শামসুজ্জামান খান, একাডেমির সচিব মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, জালাল আহমেদ, ইলিয়াস কাঞ্চন, মেলার মূল পৃষ্ঠপোষক বিকাশ লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কামাল কাদের।
×