ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বেসরকারী শিক্ষকদের অনশন ভঙ্গ

প্রকাশিত: ০৬:০৬, ৩০ জানুয়ারি ২০১৮

বেসরকারী শিক্ষকদের অনশন ভঙ্গ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ অবশেষে অনশন ছেড়েছেন জাতীয়করণের দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আন্দোলনরত এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা। বেসরকারী শিক্ষা জাতীয়করণ লিয়াজোঁ ফোরামের ডাকে টানা ২০ দিন ধরে অবস্থান ও অনশন শেষে সোমবার বিকেলে শিক্ষকরা কর্মসূচী তুলে নিয়েছেন। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মোঃ আলমগীর এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোঃ মহিউদ্দিন খান জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এসে তাদের জুস পান করিয়ে অনশন ভাঙ্গান। আন্দোলনকারী শিক্ষক নেতা নজরুল ইসলাম রনি বলেছেন, আগামী বাজেটে ৫ শতাংশ বৈশাখী ভাতা ও ইনক্রিমেন্টের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে-এমন আশ্বাসে আমরা অনশন স্থগিত করে ক্লাসে ফিরে যাচ্ছি। পাঁচ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ও বৈশাখী ভাতা প্রদানের আশ্বাস দেয়ায় বেসরকারী শিক্ষকদের পক্ষ থেকে নজরুল ইসলাম রনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানান। জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে প্রথমে গত ১০ থেকে ১৪ জানুয়ারি পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচীর পর ১৫ জানুয়ারি থেকে অনশন শুরু করেন শিক্ষকরা। এরই মধ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ধর্মঘটও পালন করেন তারা। মান বিবেচনা ও নীতিমালার ভিত্তিতে জাতীয়করণ হবে-জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া ১৭ জানুয়ারির বক্তৃতার আলোকে অনশন ভঙ্গ করে ক্লাসে ফিরে যাচ্ছেন বলে বলছেন আন্দোলনরত শিক্ষকরা। জানা গেছে, আগামী বৃহস্পতিবার ১ ফেব্রুয়ারি থেকে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। পরীক্ষা নিয়ে কেউ যেন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে সেজন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে তার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে শিক্ষক নেতৃবৃন্দের সঙ্গেও আলোচনা করা হয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে। শিক্ষক নেতৃবৃন্দ বিভিন্ন সময় ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, অন্তত মন্ত্রণালয়ের কেউ যেন অনশন ভাঙ্গান এবং ক্লাসে ফিরে যেতে অনুরোধ করেন। সে অনুসারে সোমবার মাদ্রাসা ও কারিগরি বিভাগের সচিব ও অতিরিক্ত সচিব মোঃ আলমগীর ও মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোঃ মহিউদ্দীন অনশন ভাঙ্গাতে সোয়া পাঁচটার দিকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আসেন। এর আগে সাড়ে চারটার দিকে কয়েকজন শিক্ষক নেতা শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী কাজী কেরামত আলীর দফতরে সাক্ষাত করতে যান। সেখানেই অনশন ভাঙ্গার সিদ্ধান্ত হয়। বেসরকারী শিক্ষা জাতীয়করণ লিয়াজোঁ ফোরামের উপদেষ্টা আবুল বাশার হাওলাদার জানিয়েছেন, দাবি আদায়ে ১০ জানুয়ারি থেকে অবস্থান এবং ১৫ জানুয়ারি থেকে আমরণ অনশন করছেন শিক্ষক-কর্মচারীরা। অনশনের কারণে এই কয় দিনে অসুস্থ হওয়া শিক্ষকের সংখ্যা দেড় শতাধিক। এ দিকে এই পক্ষ কর্মসূচী প্রত্যাহার করলেও জাতীয়করণসহ ১১ দফা দাবিতে কর্মবিরতির পরও সরকারের পক্ষ থেকে কোন উদ্যোগ না নেয়ায় ১৪ মার্চ ঢাকায় শিক্ষক মহাসমাবেশের কর্মসূচী ঘোষণা করেছে শিক্ষক-কর্মচারী সংগ্রাম কমিটি। কমিটির সমন্বয়কারী অধ্যক্ষ আসাদুল হক বলেছেন, ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ৮ মার্চ পর্যন্ত উপজেলা, জেলা ও কেন্দ্রীয় শিক্ষক-কর্মচারী সংগ্রাম কিমটির নেতৃবৃন্দ মহাসমাবেশকে সফল করতে সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করবেন। ১৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় জেলা প্রতিনিধিদের সঙ্গে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ মতবিনিয়ময় করবেন। ১১ মার্চ সারাদেশে বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অবিরাম ধর্মঘট এবং সব উপজেলায় শিক্ষক কর্মচারী সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল হবে। ১২ মার্চ সব জেলায় শিক্ষক কর্মচারী সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল হবে। এর আগে শিক্ষক-কর্মচারী সংগ্রাম কমিটির ব্যানারে জাতীয়করণসহ ১১ দফা দাবিতে গত মঙ্গলবার সকাল থেকে টানা তিন দিনের ক্লাস বর্জন কর্মসূচীর পাশাপাশি শিক্ষক নেতারা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। অধ্যক্ষ আসাদুল হক বলেন, ১ ফেব্রুয়ারি থেকে আমাদের সন্তানতুল্য শিক্ষার্থীদের এসএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। সেজন্য পরীক্ষা চলাকালীন কোন কর্মসূচী না রেখে পরীক্ষার দায়িত্ব পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এ বিষয় শিক্ষকদের নিরাপত্তা দেয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
×