ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

পার্বতীপুরে প্রাচীন বৌদ্ধবিহারের ধ্বংসাবশেষ শনাক্ত

প্রকাশিত: ০৪:২১, ৩০ জানুয়ারি ২০১৮

পার্বতীপুরে প্রাচীন বৌদ্ধবিহারের ধ্বংসাবশেষ শনাক্ত

নিজস্ব সংবাদদাতা, পার্বতীপুর, ২৯ জানুয়ারি ॥ জাহাঙ্গীরনগর বিশ^বিদ্যালয়ের প্রতœতাত্ত্বিক জরিপ টিম দিনাজপুরের পার্বতীপুরে প্রাচীন বৌদ্ধবিহারের ধ্বংসাবশেষ শনাক্ত করেছে। এই বিশ^বিদ্যালয়ের প্রতœতত্ত্ব বিভাগের গবেষণা পরিচালক অধ্যাপক ড. স্বাধীন সেনের নেতৃত্বে ৩ শিক্ষার্থী কাব্য কৃত্তিকা, হুমায়ন আহমেদ ও দিদার হোসন গত দুই সপ্তাহ ধরে এখানে প্রতœতাত্ত্বিক অনুসন্ধান চালান। পার্বতীপুর শহর থেকে ১০ কি.মি দক্ষিণে ফুলবাড়ীগামী রাস্তায় ধাপের বাজার। তার সঙ্গেই পশ্চিম পাশের্^ উঁচু ঢিবিটি মথুরা পীরের ঢিবি নামে পরিচিত । দক্ষিণ পাশের্^ লাগোয়া বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুত প্রকল্প । অধুনা এখানে একটি মসজিদ গড়ে উঠেছে। স্থানটি হামিদপুর ইউনিয়নের ইসবপুর মৌজার মধ্যে পড়েছে প্রত্ন সাইটটি । খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এই জায়গাটি খাস খতিয়ানভুক্ত হলেও এক শ্রেণীর লোক জাল দলিল করে সরকারী সম্পত্তি আত্মসাতের পাঁয়তারায় লিপ্ত রয়েছে। স্থানীয়রা জানায় শুরু থেকেই এটি সরকারী পরিত্যক্ত সম্পত্তি । ব্যক্তি মালিকানা হওয়ার সুযোগ নেই ।স্বাধীন সেনের মতে এটি ১২০০-১৪০০ বছর আগের বৌদ্ধবিহার বা হিন্দু ধর্মীয় মন্দির হতে পারে । পার্বতীপুরসহ দিনাজপুরের সমৃদ্ধ ঐতিহ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষ্য এই ঢিবিটি। ঢিবিটি এখনও প্রায় ৬০ী৮০ মিটার মাপের। চারপাশের সমতল ভূমি থেকে প্রায় ৫ মিটার । বিভিন্ন স্থানে গর্ত করার কারণে একটি স্থাপনার দেয়াল উন্মোচিত হয়ে রয়েছে । মানুষের অত্যাচার ও এমন ধ্বংসযজ্ঞ চলতে থাকলে অচিরেই প্রতœস্থানটি বিলুপ্ত হবে। ভবিষ্যতে ঢিবিটিতে প্রতœতাত্ত্বিক খনন পরিচালনা করে এই নিদর্শনগুলোর প্রকৃতি ও বৈশিষ্ট্য বুঝে সংশ্লিষ্ট দফতরে প্রতিবেদন প্রেরণ করা হবে। ঢিবিটি স্থায়ীভাবে সংরক্ষণ করার ক্ষেত্রে তাদের ইচ্ছা রয়েছে বলে জানান। শুধু এই ঢিবিটিই নয় দিনাজপুরের দক্ষিণাঞ্চলের উপজেলা বিরামপুর, নবাবগঞ্জ, হাকিমপুর ও ঘোড়াঘাটে এক সময় কয়েক হাজার ঢিবি, মঠ ও প্রাচীন স্থাপনার ধ্বংসাবশেষ দৃশ্যমান ছিল । প্রতœতত্ত্ববিদ আ কা মো যাকারিয়ার বাঙলাদেশের প্রতœসম্পদ পুস্তকে এসবের বিশদ বর্ণনা রয়েছে। তবে এক শ্রেণীর ভূমি দস্যুদের কবলে পড়ে ইতিহাসের নীরব সাক্ষী এসব প্রতœস্থানগুলো নিশ্চিহ্ন হয়েছে। এখনও যা অবশিষ্ট রয়েছে তাও সংরক্ষণের উদ্যাগ নেই সংশ্লিষ্ট বিভাগের । এতে দেশের ইতিহাস , ঐতিহ্যের যে ক্ষতি হচ্ছে তা অপূরণীয় । জাহাঙ্গীরনগর বিশ^বিদ্যালয়ের প্রতœতত্ত্ব বিভাগের পক্ষ থেকে গবেষণা পরিচালক পার্বতীপুরের ইউএনওকে চিঠি দিয়ে এই প্রতœ¯ূÍপটির ক্ষতিগ্রস্তের চিত্র তুলে ধরে বলেছেন, আগে যা ক্ষতি হবার হয়েছে , এখন আপাতত স্থানীয় জনসাধারণ যাতে ইট কেটে না নিয়ে যায় সে সতর্ক করা এবং গর্তের কারণে উন্মোচিত দেওয়ালগুলো মাটি দিয়ে ঢেকে দেয়া অতীব প্রয়োজন। ঢিবিটি সংরক্ষণ করে এটিকে বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে তাকে ( ইউএনও) অনুরোধ জানিয়েছেন ।
×