ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ঢাকার দিনরাত

প্রকাশিত: ০৩:৫০, ৩০ জানুয়ারি ২০১৮

ঢাকার দিনরাত

মাঘের অর্ধেকটা চলে গেলে, শীতও বিদায় নিতে চলেছে। দিনের বেলায় রীতিমতো হাঁসফাঁস গরম। রোদের এমন তেজ ঢাকাবাসী সাধারণত চৈত্র মাসে দেখে থাকে। সে যাক, বাণিজ্যমেলায় যাদের কেনাকাটা শেষ হয়নি, তাদের জন্য সুসংবাদ। নির্ধারিত সময় শেষ হতে চললেও সামনের শুক্র-শনি ছুটির দিন দুটি বিবেচনায় রেখে মেলার সময়সীমা চার দিন বাড়ানো হয়েছে। ছিনতাই প্রতিরোধের উপায় ছিনতাই প্রতিরোধের উপায় কী হতে পারে- সেটাই ভাবছি আজ বেশি করে। রাজধানীতে ছিনতাইকারীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে সকাল ও সন্ধ্যায় ছিনতাইয়ের ঘটনা বেড়ে গেছে। প্রাইভেটকার নিয়ে ছিনতাই করা হচ্ছে। জীবন যাচ্ছে নিরীহ মানুষের। শুক্রবার ভোরে ধানমণ্ডির মিরপুর রোডে এমন টানা পার্টির শিকার হন হেলেনা বেগম। বাস থেকে নেমে স্বামীর সঙ্গে রাস্তা পার হচ্ছিলেন তিনি। হঠাৎ চলে আসা একটি প্রাইভেটকারের চালক হেলেনার ব্যাগ ধরে হ্যাঁচকা টান দেয়। তাঁর হাত আটকে যায় গাড়ির জানালায়। ঝুলতে থাকেন হেলেনা। প্রায় ২০ গজ গিয়ে ছিটকে পড়েন তিনি। এরপর সেই গাড়ির চাকায় থেঁতলে যায় তাঁর মুখ। মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন হেলেনা। প্রায় একই সময়ে রাজধানীর স্বামীবাগ এলাকায় দুর্বৃত্তদের হামলার শিকার হন খুলনার ব্যবসায়ী মোহাম্মদ ইব্রাহিম। দৌড়ে আত্মরক্ষার চেষ্টা করছিলেন। হাসপাতাল পর্যন্ত গিয়েছিলেন। কিন্তু নিজেকে বাঁচাতে পারেননি তিনি। একই দিন সন্ধ্যায় হাজারীবাগে ছুরিকাহত হয়েছেন জাকির হোসেন নামের এক তরুণ। তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এক দিনের এই তিনটি ঘটনাই তো একমাত্র ঘটনা নয়। রাজধানীতে প্রতিদিনই ঘটছে টানা পার্টির ব্যাগ কেড়ে নেয়া বা ছিনতাইয়ের ঘটনা। গত মাসে শরীয়তপুরের আকলিমার কোলের সন্তান আরাফাতের মৃত্যু হলো সদরঘাটে ছিনতাইয়ের ঘটনায়। একই মাসে ছিনতাইয়ের জের হিসেবে মোহাম্মদপুরে মারা যান জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক ফরহাদ আলম। রিক্সায় যাওয়ার সময় দিনে দুপুরে ছিনতাইকারী তার ব্যাগ ধরে টান দিলে তিনি রিক্সা থেকে পড়ে মাথায় গুরুতর আঘাত পান। কয়েকদিন পর তিনি মারা যান। আকলিমার ব্যাগ ধরে টান দেয়ায় তার কোলে থাকা ছয় মাসের শিশু রাস্তায় পড়ে মারা যায়। এ ধরনের মর্মান্তিক মৃত্যু মানুষের মনে ক্ষোভ তৈরি করে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার প্রতি ভীতশ্রদ্ধ হয়ে পড়ে মানুষ। মানুষ শ্রম ও মেধা দিয়ে তার প্রাপ্য অর্জন করবে, আর রাস্তায় ওঁৎ পেতে থাকা লোকেরা সেসব ছিনিয়ে নেবে! এই ব্যাপার চলে আসছে যুগের পর যুগ ধরে, প্রতিটি দিন এই রাজধানীর বহু রাস্তায়। পরিস্থিতির উন্নতি হবে কী! বরং অবনতিই ঘটে চলেছে। আপনি থানায় যান ছিনতাইয়ের অভিযোগ নিয়ে, হাতেনাতে প্রমাণ পেয়ে যাবেন। পুলিশ মামলা নেবে না। ছিনতাইয়ের মামলা তারা নিতে চায় না, চুরিটুরির অভিযোগ নথিবদ্ধ করে বটে। কিন্তু ছিনতাইয়ের মামলা নেয়ার ব্যাপারে তাদের ভীষণ অনীহা। পথচারীরাও আজকাল ছিনতাইকারীর পেছনে দৌড়ায় না। লাভ নেই কোন। ছুরিকাঘাতে কিংবা ককটেল বিস্ফোরণে আহত কিংবা নিহত হওয়ার আশঙ্কা থেকেই যায়। সমকালীন একটি উপন্যাসে পড়েছিলাম, একেবারে ছিঁচকে দুটো ছিনতাইকারী অফিস ফেরত এক ভদ্রলোকের পথ আগলে তার কাছ থেকে বিশেষ কিছু না পেয়ে মজা করেই, বলা যায় খেলাচ্ছলেই পেটের গভীরে ছুরি ঢুকিয়ে দেয়। কত তুচ্ছ কারণে অপমৃত্যু। এতটাই ঝুঁকিপূর্ণ এখন নগরবাসীর জীবন! আপনি বলবেন, এ তো উপন্যাসে হয়। আমি বলব, আসলে এসব বাস্তবেই হচ্ছে। এই রাজধানীতেই। কত রকম উপায়েই না ছিনতাই হচ্ছে। মলম পার্টি, অজ্ঞান পার্টি এমন কত রকম পার্টি অভিধানে জায়গা করে নিচ্ছে। অস্ত্র ঠেকিয়েও চলছে ছিনতাই। আমরা কি শুধু পুলিশের দিকে তাকিয়ে থাকব? আমার মনে হয় সময় এসেছে স্থানীয় পর্যায়ে ছিনতাই প্রতিরোধে স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী গঠন করা। ছিনতাইকারীকে হাতেনাতে পাকড়াও করে পুলিশে সোপর্দের আগে ছবি তুলে রেখে ফেসবুকে আপলোড করা। থানার ডকুমেন্টও পাবলিক করে দেয়া। প্রয়োজনে গণমাধ্যম বরাবরে সেসব পাঠানো। একটা আন্দোলন দরকার। আইন নিজের হাতে তুলে নেয়া নয়, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সহায়ক ভূমিকা পালন করা। গণমাধ্যমে ফলাও করে ছিনতাইকারী ধরপাকড়ের ছবিসহ খবর ঘন ঘন আসতে থাকলে ছিনতাইকারীচক্র বার্তা পেয়ে যাবে। আমাদের মানসিকতার পরিবর্তনও জরুরী। চোখের সামনে ছিনতাইয়ের ঘটনা দেখেও মুখ ফিরিয়ে নিয়ে চলে যাওয়ার সংস্কৃতি বজায় থাকলে কখনই ছিনতাই অপরাধ বন্ধ করা যাবে না। সেইসঙ্গে পুলিশের কর্ণধারদের প্রতি বিশেষ অনুরোধ, আপনারা একটা পথ বের করুন। ছিনতাইয়ের বিরুদ্ধে পুলিশ দৃশ্যমানভাবে দুর্দান্ত এ্যাকশনে গেছেÑ এমনটাই দেখতে চায় ঢাকাবাসী। এসে গেল বইমেলা কাল বাদে পরশু শুরু হচ্ছে একুশের বইমেলা। চূড়ান্ত প্রস্তুতি চলছে লেখক-প্রকাশকদের। পাঠকদেরও কি নয়? ধরা যাক লেখক-প্রকাশক মিলিয়ে সংখ্যাটা যদি হয় এক হাজার, তবে পাঠকের সংখ্যা কত? প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ যান বইমেলায়, একুশে ফেব্রুয়ারিতে লাখো মানুষ। শুক্রবারেও লাখ ছাড়িয়ে যাওয়ার মতো অবস্থা হয়। এদের সবাই অবশ্য বই কেনেন না। পড়েন কি? বইয়ের ক্রেতা ও পাঠক লক্ষ্যযোগ্যভাবে বাড়ছে না। অথচ প্রতি বছরই নতুন প্রকাশক আসছেন, নতুন লেখকেরও জন্ম হচ্ছে। বই নিয়ে দেশের সবচেয়ে বড় মেলা একুশের বইমেলায় বইয়ের বিক্রয়লব্ধ অর্থ আগের বছরের হিসাবকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে। ফলে নানা সীমাবদ্ধতা, আক্ষেপ ও অভিযোগ সত্ত্বেও বইমেলা বাণিজ্য-বিচারে তার সাফল্য বজায় রেখেছে। আগে বাংলা একাডেমির মাঠে মেলাটি হতো। প্রকাশনা সংস্থার সংখ্যা বাড়তে বাড়তে এমন পর্যায়ে গেল যে গাদাগাদি- ঠাসাঠাসি একটা পরিবেশ সৃষ্টি হলো। পরবর্তীকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরামর্শে বইমেলাটি চলে এলো সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। তবে লেখক-পাঠক-প্রকাশকদের দীর্ঘদিনের চাওয়া ছিল বইমেলাটি বড় কোন জায়গায় অনুষ্ঠিত হোক। অবশ্য এখনও বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ বইমেলার অংশ বটে। সেখানে ছোটকাগজগুলোর স্টল থাকে। শিশু-কিশোরদের বইয়ের স্টল থাকে এবং মহান একুশে স্মরণে বক্তৃতামালা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। একাডেমি প্রাঙ্গণ ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানÑ এ দুটি ভেন্যুর মাঝখানে কিছুটা হাঁটাপথ, এবং দু’দিকে চলা একটি প্রশস্ত সড়ক। উদ্যানে মেলা আয়োজনের পর দেখতে দেখতে কয়েক বছর চলেও গেল। তাই বলা যায় বইমেলা মোটামুটি একটা গ্রহণযোগ্য অবয়ব পেয়েছে। পাঠকরা জানেন মাসব্যাপী বইমেলার যাবতীয় সংবাদ প্রকাশের জন্য সব সংবাদপত্র বিশেষভাবে স্থান বরাদ্দ দিয়ে থাকে। টিভি চ্যানেলগুলোও প্রতিদিন প্রতিবেদন প্রচার করে। ছাড়কৃত মূল্যে বিজ্ঞাপন প্রচারের ব্যবস্থা নেয়া হয় মিডিয়ায়। সব কিছুর উদ্দেশ্যই হচ্ছেÑ পাঠকের কাছে নতুন বইয়ের তথ্য তুলে ধরে তাকে বই পড়ায় উদ্বুদ্ধ করা। একুশের বইমেলা নিয়ে শিক্ষিত-শিক্ষাবঞ্চিত সবার ভেতরেই বিশেষ আবেগ কাজ করে। ভাললাগা কাজ করে। বই হলো জ্ঞান ও আনন্দের ভাণ্ডার, তাই বইমেলার আয়োজন সর্বাঙ্গীণ সুন্দর হোক, তার প্রচেষ্টা থাকে সব পক্ষেরই। এ কথা আমাদের বার বার বলতে হবে যে, বই হলো অনন্য পণ্য, যা নিবেদিত হয় মহাকালের উদ্দেশে। তাই কালের মহার্ঘ্য হতে হলে তাকে হতে হয় যোগ্য, সম্পূর্ণ বা পূর্ণাঙ্গ এবং সূচাররূপে প্রকাশিত। সে কারণেই পাণ্ডুলিপি উত্তমরূপে সম্পাদনা ও গ্রন্থ মুদ্রণপ্রমাদমুক্ত হওয়া বাঞ্ছনীয়। কিন্তু কয়জন গ্রন্থ উৎপাদক বা প্রকাশক এই শর্তগুলো পূরণ করেন? সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সফল বইমেলা করতে হলে মুক্ত মত গ্রহণের বিকল্প নেই। একাডেমির বাইরের সড়কটিকে অবশ্যই বইমেলার মূল আয়োজনের বাইরে কেবল নিষ্প্রাণ সড়ক হিসেবে গণ্য করলে আর চলছে না। মেলা শুরুর আধঘণ্টা আগে যান চলাচল বন্ধ করে মেলা শেষে পুনরায় এই সড়ক যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া যেতে পারে বটে, কিন্তু মেলার বাকি সময়টকু এই সড়কটিকে মেলার অংশ করে তুলতেই হবে। পানি-বিদ্যুত, হাঁটাপথ, পর্যাপ্ত টয়লেট ব্যবস্থা, প্যাভিলিয়ন, খাবারদাবার, আড্ডাস্থলÑ সব কিছুর সুব্যবস্থা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। সবচেয়ে বড় বিড়ম্বনা ধুলা থেকে বাঁচার সুবন্দোবস্ত থাকা চাই। বইমেলার স্বাভাবিক চিত্র হলো প্রতিদিনই ভ্যানগাড়িতে করে নতুন নতুন বইয়ের আগমন। মেলায় রেকর্ড সংখ্যক কিংবা রেকর্ড ছাড়িয়ে যাওয়ার মতো সংখ্যায় বই আসে নিত্য ছাপাখানার টাটকা গন্ধ নিয়ে। একুশের বইমেলার জন্য আমরা অনেকখানি ত্যাগ স্বীকারেও যেন রাজি থাকি। মিডিয়া শতভাগ সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত থাকে। এতে ব্যবসায়িক বুদ্ধি ছাপিয়ে প্রাণের টানটাই বড় হয়ে ওঠে। আমরা বরং আত্মশ্লাঘা নিয়ে বলতেই পারি ‘বইপ্রিয় বাঙালীর অনন্য এক মেলা’ আমাদের একুশের চেতনাকে প্রতিবছর সমুন্নত করছে। এটা সত্যি যে নানা দিক দিয়ে একুশের বইমেলাটি অনন্যই বটে। ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা, বাংলা ভাষার প্রতি ভালবাসা এ সবই কোন না কোনভাবে প্রকাশিত হয়ে চলে পুরোটা মাস। লেখক-পাঠক-প্রকাশকদের মিলন মেলাই বটে এই বইমেলা। ভুলে গেলে চলবে না শুধু একুশের বইমেলাকে উপলক্ষ করেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বসবাসকারী বাংলাদেশের লেখক-পাঠকরা মাতৃভূমিতে ফেরেন। বিশ্বের আর কোন দেশে এতগুলো দিন, মানে মাসজুড়ে বইমেলা হয় না। কোন মেলায় হুড়মুড় করে হাজারও দর্শক এবং পাঠক-ক্রেতা মেলায় প্রবেশের জন্য অস্থির হয়ে ওঠে না। বলতে পারি ভাষার মাসে একটা হুজুগ চলতেই থাকে। তবে বইয়ের জন্য বইমেলা আর বইমেলার জন্যই এত আয়োজন- সে কথা আমরা ভাল করে কি খেয়াল করি? খেয়াল করলে মেলাকে সর্বাঙ্গীণ সুন্দর করার লক্ষ্যে আমরা সোচ্চার হতাম এবং বইমেলার বাইরেও যে বইয়ের জন্য, জ্ঞানভিত্তিক সমাজ গড়ে তোলার জন্য আমাদের প্রত্যেকেরই করণীয় রয়েছেÑ সে সব দিকে দৃষ্টি দিতাম। মহান একুশের বইমেলায় গিয়ে সবাই বই কিনবেন এমনটাও আশা করি না। অন্তত এটুকু প্রত্যাশা করতেই পারি, বই নিয়ে যে- মেলা তাতে দর্শনার্থীরা অন্তত দুই মিনিটের জন্য হলেও একখানা নতুন বই হাতে তুলে নেবেন। না কিনুন, উল্টেপাল্টে দেখবেন। প্রত্যেক মেলায় কয়েক হাজার করে বই প্রকাশিত হচ্ছে, কিন্তু ভাল বই বা গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ নির্বাচন করতে গেলে হতাশা এসে ভর করে। তার পরও মানসম্পন্ন না হলেও লেখকদের, বিশেষ করে নবীন-তরুণ লেখকদের বই প্রকাশ বা লেখালেখির সঙ্গে সংযুক্ত থাকা ইতিবাচক একটি কাজ। সাহিত্য বা সংস্কৃতিচর্চায় যতক্ষণ নিয়োজিত থাকেন তরুণরা ততক্ষণ মাদকের মতো নেশার হাতছানি বা অন্যান্য অপকর্ম থেকে তারা মুক্ত থাকেনÑ এই সামাজিক বাস্তবতাকে আমরা উপেক্ষা করতে পারি না। তাই যার যা খুশি লিখুন, বই বার করুন, বন্ধুদের বই উপহার দিন। এই কর্মকাণ্ড থেকেই আগামীতে বেরিয়ে আসবে নতুন পথরেখা। তাই নিয়ন্ত্রণ নয়। তবে এটা ভুললে চলবে না যে কোন লেখকের পা-ুলিপি অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞ সম্পাদক দ্বারা সম্পাদিত হওয়ার পর প্রকাশ করাই বাঞ্ছনীয়; আন্তর্জাতিক মানদণ্ডও সেটা। শত শত প্রকাশকের মধ্যে ক’জন এটা জানেন? জানলেও মানেন? ভারতীয় সংগঠনের নৃত্য প্রশিক্ষণ, সাধনা এবং অঙ্গীকারবোধ একটি সাংস্কৃতিক সংগঠনকে বহুদূর নিতে পারে- তারই দৃষ্টান্ত দেখলাম ঢাকার শিশু একাডেমির মঞ্চে। ভারতের এই সংগঠনের পরিবেশিত প্রতিটি নৃত্য দর্শকদের বিপুল আনন্দ দিয়েছে। ভারতের ফামোচি সংগঠনের নাম হয়েছে ফাদার-মাদার-চিলড্রেন এর সংক্ষিপ্ত রূপ নিয়ে। এটি একটি সাংস্কৃতিক ও সমাজ কল্যাণ সংস্থা। বঙ্গীয় লেখক শিল্পী সম্মেলনের সমাপনী সন্ধ্যায় পরিবেশন করল দশটি ভিন্ন স্বাদের নৃত্য। শুরুতে ‘আনন্দধারা বহিছে ভুবনে’Ñ ১৩ জন নৃত্যশিল্পীর পরিবেশনা। পরেরটিও রবিঠাকুরের গানের নৃত্য রূপায়ণÑ বিপুল তরঙ্গ রে, এরপর শাস্ত্রীয় সঙ্গীতনির্ভর নৃত্য। ভুপেন হাজারিকার বিখ্যাত গান ‘বিস্তীর্ণ দুপাড়ে অসংখ্য মানুষের হাহাকার শুনেও- এটি সৃজনশীল নৃত্যের উদাহরণ। এছাড়াও তাদের পরিবেশিত ওডিসি ধ্রূপদী নৃত্য, কত্থক ধ্রূপদী নৃত্য, ভরতনাট্টম ও কুচিপুডি ধ্রূপদী নৃত্য এবং কবি কাজী নজরুলের বিদ্রোহী কবিতা অবলম্বনে নৃত্য দর্শকদের সমীহ আদায় করে নেয়। নৃত্যের আগে পিয়ালী ঘোষের সঞ্চালনা ছিল প্রাসঙ্গিক তথ্যনির্ভর। নৃত্যে অংশগ্রহণ করেন : অর্পিতা দাস, শ্বেতা ঘোষ, দেবারতি রায়, দেবলীনা ঘোষ, দেবমিতা রায়, ঈশানী রায়, ঝুম্পা জানা, নেহা সেন ,পল্লবী সানোটিয়া, প্রিয়াঙ্কা বসু, রাধিকা মিরানী ও ঊর্মিলা দাস। নৃত্য পরিচালনায় সঞ্জয় ভট্টাচার্য। সামগ্রিক পরিচালনায় শৈবাল কুমার ঘোষ । ২৮ জানুয়ারি ২০১৮ [email protected]
×