ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ওয়াজ মাহফিলের পাশ থেকে তুলে নিয়ে এসএসসি পরীক্ষার্থীকে গণধর্ষণ

প্রকাশিত: ০৫:০৬, ২৯ জানুয়ারি ২০১৮

ওয়াজ মাহফিলের পাশ থেকে তুলে নিয়ে এসএসসি পরীক্ষার্থীকে গণধর্ষণ

নিজস্ব সংবাদদাতা, জামালপুর, ২৮ জানুয়ারি ॥ ইসলামী ওয়াজ মাহফিলে শুনতে আসা এক এসএসসি পরীক্ষার্থীকে অপহরণের পর গণধর্ষণ করেছে যুবলীগ নেতা ও তার সহযোগীরা। এ ঘটনায় রবিবার জামালপুর সদর থানায় একটি মামলা করেছেন ওই ছাত্রীর মা। মামলায় কেন্দুয়া ইউনিয়ন যুবলীগের ৩ নম্বর ওয়ার্ড শাখার সভাপতি ছাব্বির হোসেন আকন্দ সেতুসহ (২৩) আরও চারজন যুবকের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত আরও তিন-চারজনকে আসামি করা হয়েছে। সেতুর বাড়ি কেন্দুয়া ইউনিয়নের গোপালপুর দামেশ^র গ্রামে। তার বাবার নাম আব্দুল মান্নান আকন্দ বেল। মামলার বাকি আসামিরা হলো- ডেফুলিবাড়ি গ্রামের মোঃ রিফাত (২২), দেওয়ানিপাড়া গ্রামের চিকিৎসক গোলাম মোস্তফার ছেলে মোঃ বাবু (২৪), মোঃ আফতাব উদ্দিনের ছেলে মোঃ মিনহাজ (২৩) ও মোঃ সুলতানের ছেলে মোঃ শাকিল (২৩)। নির্যাতিত ছাত্রী জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। হাসপাতালের আবাসিক (আরএমও) চিকিৎসক মোঃ শফিকুজ্জামান বলেছেন, হাসপাতালের প্রসূতি ও স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ফাখরিয়া ইসলামসহ তিন সদস্যের নারী চিকিৎসক দল রবিবার দুপুরে ওই ছাত্রীকে ধর্ষণের আলামত সংগ্রহ এবং আইনসহায়ক যাবতীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছেন। তিনি আরও বলেন, আসন্ন এসএসসি পরীক্ষায় যাতে অংশ নিতে পারে সেইদিক বিবেচনায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে ওই ছাত্রীকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা দেয়া হচ্ছে। ছাত্রীর মায়ের অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, দেওয়ানিপাড়া মদিনাতুল উলুম হাফিজিয়া মাদরাসা প্রাঙ্গণে শুক্রবার রাতে আয়োজিত ইসলামী ওয়াজ মাহফিল শুনতে গিয়ে রাত আনুমানিক ১১টার দিকে ওই ছাত্রী ভাপা পিঠা কিনতে ওয়াজ মাহফিলের বাইরে রাস্তায় যায়। কিন্তু তার ফিরতে দেরি হওয়ায় তার মা অনেক খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে বাড়িতে গিয়ে স্বজনদের জানান। পরে রাত আনুমানিক সাড়ে তিনটার দিকে প্রতিবেশী বাদন নামে এক যুবকের সহযোগিতায় গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় ওই ছাত্রী বাড়িতে ফিরে কান্নাকাটি করে ঘটনা খুলে বলে। ওই ছাত্রী তার স্বজনদের জানায়, ছাব্বির হোসেন আকন্দ সেতুসহ মামলায় উল্লেখিত যুবকেরা ও আরও অজ্ঞাত তিন-চার যুবক তার মুখ চেপে ধরে অপহরণ করে মাদরাসা মাঠ থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে স্থানীয় হবি ডাক্তারের সেচপাম্প ঘরে নিয়ে যায়। অপহরণকারীদের মধ্যে ছাব্বির হোসেন আকন্দ সেতু ও মোঃ রিফাত তাকে জোর করে ধর্ষণ করে। তাদের সহযোগীরা ওই ছাত্রীর গায়ে হাত দেয় এবং মুঠোফোনে ভিডিওচিত্র ধারণ করে রাখে। এতেও তারা ক্ষান্ত হয়নি। তারা ঘটনা প্রকাশ করে দিলে ওই ভিডিওচিত্র ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকিও দেয় ওই ছাত্রীকে। সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ নাছিমুল ইসলাম রবিবার দুপুরে এ প্রতিবেদককে বলেন, কেন্দুয়া ইউনিয়নে শুক্রবার রাতে এসএসসি পরীক্ষার্থী ওই ছাত্রীকে অপহরণ করে ধর্ষণের ঘটনায় পাঁচজনের নামসহ অজ্ঞাত আরও তিন-চারজনকে আসামি করে সদর থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে। ঘটনাটি স্পর্শকাতর বিধায় জামালাপুর জেনারেল হাসপাতালে ধর্ষণের আলামতের বিষয়ে ওই ছাত্রীর আইনসহায়ক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানো হয়েছে এবং আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশের একটি দল কাজ করছে।
×