ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

তিস্তায় পাঁচ হাজার কিউসেক প্রবাহ ॥ তবু সেচ পানিশূন্য ক্যানেল

কৃষকের আল্টিমেটাম

প্রকাশিত: ০৪:০৯, ২৯ জানুয়ারি ২০১৮

কৃষকের আল্টিমেটাম

স্টাফ রিপোর্টার, নীলফামারী ॥ চলতি শুষ্ক মৌসুমে উজানের ঢলে তিস্তায় পানিপ্রবাহ ৫ হাজার কিউসেক অতিক্রম করলেও দেশের সর্ববৃহৎ সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের সুফল হতে বঞ্চিত কমান্ড এলাকার কৃষক। কৃষকদের অভিযোগ, পানি সরবরাহের জন্য সেচ ক্যানেলগুলো সংস্কারের জন্য সরকারের পক্ষে দুই কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হলেও সংশ্লিষ্টরা তা সংস্কার না করায় সেচনির্ভর বোরো আবাদে তারা সেচ সুবিধা পাচ্ছে না। ফলে কমান্ড এলাকার কৃষকরা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠছে। তারা নীলফামারী, সৈয়দপুর, ডালিয়া, জলঢাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের অফিসে প্রতিনিয়ত ধর্ণা দিয়ে চলেছে। আগামী দুই তিন-দিনের মধ্যে সেচ সরবরাহ না দিলে কৃষকরা রাস্তায় নেমে আন্দোলন করতে বাধ্য হবে বলে আল্টিমেটাম দিয়েছে। কৃষকরা বলছে, বোরো আবাদে সময় পেরিয়ে যেতে শুরু করেছে। আমরা বোরো আবাদের জন্য জমি প্রস্তুত করেছি। কিন্ত কমান্ড এলাকায় সেচ সরবরাহ নেই। কৃষকদের মতে, বোরো রোপণ থেকে মুখ্য সময় পর্যন্ত বোরো ক্ষেতের জন্য সেচ অত্যন্ত জরুরী। বিশেষ করে তিস্তা ব্যারাজ সেচ প্রকল্পের আওতাভুক্ত এলাকার কৃষকরা তিস্তা সেচকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন।একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র অভিযোগ করে জানায়, দৈনিক জনকণ্ঠ গত ২৩ জানুয়ারি ১৪ পাতায় “তিস্তা ব্যারাজের সেচ পাচ্ছে না কৃষকরা- সংস্কারের নামে লুট” শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ পায়। সংবাদটি প্রকাশের পর ঢাকা হতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বিষয়টি জানতে চাইলে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ভুল ব্যাখ্যা প্রদান করে। সেখানে বলা হয়, নদীতে পানি নেই, তাই সেচ দেয়া যাচ্ছে না। অথচ ওই সংবাদ প্রকাশের সময় নদীতে ৩ হাজার কিউসিক পানি প্রবাহ চলছিল। বর্তমানে সেটি বৃদ্ধি পেয়ে রবিবার ৫ হাজার কিউসেকের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তিস্তা ব্যারাজ সেচ প্রকল্পের ক্যানেলগুলো সংস্কার না করার কারণে তিস্তা ব্যারাজ সেচ প্রকল্পের কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সেচ ক্যানেলে পানি ছাড়তে পারছেন না। রবিবার নীলফামারী জেলা প্রশাসক মোহম্মদ খালেদ রহীম তিস্তা ব্যারাজ সংশ্লিষ্ট পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে কৃষকদের সেচ প্রদানের জন্য তাগাদা প্রদান করেন। অপরদিকে এই দিন দুপুরে জলঢাকা এলাকার কৃষকরা বগুলাগাড়ী নামকস্থানে সেচ সরবরাহের দাবি তুলে বৈঠক করেছে। রবিবার দুপুরে জলঢাকা বগুলাগাড়ীতে কৃষকরা বৈঠক করে। সেখানে দেলোয়ার হোসেন কৃষক জানায় অচিরেই সকল ক্যানেলে সেচ সরবরাহ করা না হলে তারা রাস্তায় নেমে আন্দোলন করতে বাধ্য হবে।জানা যায়, বোরো মৌসুমে সেচ প্রদানে সেচ খালগুলো সংস্কার বা মেরামতের জন্য প্রায় দুই কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে সৈয়দপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের ডিভিশনে ৮০ লাখ, নীলফামারী ডিভিশনে ৬০ লাখ, ডালিয়া ডিভিশনে ৪০ লাখ, গঙ্গাচড়া ডিভিশনে ৩০ লাখ। অভিযোগ তিস্তা নদীর পানি চুক্তি না হওয়াকে পুঁজি করে কিছু অসাধু কর্মকর্তা নদীতে পানি নেই ইস্যু তৈরি করে ক্যানেল সংস্কারে বরাদ্দকৃত টাকা লুটের চেষ্টা করছে। এলাকার কৃষকরা অভিযোগ করে জানায়, সুষ্ঠু তদন্ত হলে অসাধু কর্মকর্তাদের মুখোশ উন্মোচন হবে। তারা বর্তমান সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষূন্ন করার পাঁয়তারা করছে।
×