ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

আমতলীতে প্রবেশ পত্র বিতরনে অর্থ আদায়ের অভিযোগ

প্রকাশিত: ০০:১১, ২৮ জানুয়ারি ২০১৮

আমতলীতে প্রবেশ পত্র বিতরনে অর্থ আদায়ের অভিযোগ

নিজস্ব সংবাদদাতা, আমতলী, বরগুনা ॥ বরগুনার আমতলী উপজেলার এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্রবেশ পত্র বিতরনে অর্থ আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বোর্ডের আদেশ উপেক্ষা করে প্রধান শিক্ষকরা পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৩’শ থেকে ১ হাজার টাকা আদায় করছে বলে অভিযোগ পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের। জানাগেছে, আমতলী ও তালতলী দু’উপজেলায় মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৩ হাজার ৫২ জন। এর মধ্যে আমতলীতে ২৬ টি বিদ্যালয়ে ২ হাজার ও তালতলীতে ১৪ টি বিদ্যালয়ে ১ হাজার ৫২ জন পরীক্ষার্থী রয়েছে। আসন্ন এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষায় প্রবেশ পত্র বিতরনে পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৩’শ থেকে ১ হাজার টাকা আদায়ের অভিযোগ করেছে পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। বোর্ডের নির্ধারিত প্রবেশ পত্র বাবদ কোন ফি নেই কিন্তু শিক্ষকরা এ টাকা আদায় করছে। উপজেলার গাজীপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৫’শ টাকা, ঘটখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৩’শ টাকা, আমতলী এম ইউ বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৪’শ টাকা, চরকগাছিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৮৫০’শ টাকা, আড়পাঙ্গাশিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ১ হাজার টাকা, চিলা হাসেম বিশ্বাস মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৩’শ টাকা, কাউনিয়া ইব্রাহিম একাডেমি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৫’শ টাকা, আঠারোগাছিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৭’শ টাকা, উত্তর তক্তাবুনিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৪’শ টাকা, কুকুয়া আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৩’শ টাকা ও উত্তর সোনাখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৭’শ টাকা আদায় করছে। এছাড়া ২৮ টি মাদ্রাসায় ৭৬৭ জন পরীক্ষার্থী রয়েছে। ওই মাদ্রাসাগুলোর মধ্যে পরীক্ষার্থী প্রতি পূর্ব পাতাকাটা মেহের আলী দাখিল মাদ্রাসায় ৬’শ টাকা, কুতুবপুর সিনিয়র মাদ্রাসায় ৭’শ সহ বিভিন্ন মাদ্রাসায় অতিরিক্ত টাকা আদায় করছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছিুক কয়েকজন পরীক্ষার্থীর অভিভাবক জানান, কেন্দ্র ঠান্ডা ফি’র নামে মাদ্রাসার প্রধানরা টাকা আদায় করছে। চরকগাছিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থী গৌরব চন্দ্র দেউরির বাবা নিখিল চন্দ্র দেউরি জানান, প্রধান শিক্ষক মোঃ হুমায়ূন কবির প্রবেশ পত্র বাবদ ৫৫০ টাকা ও হল খরচ বাবদ ৩০০ টাকা নিয়েছেন। ওই বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থী ফয়সাল ও সুজন জানান, প্রবেশ পত্র ও বিভিন্ন ফি’বাবদ প্রধান শিক্ষক স্যারে ৮৫০ টাকা নিয়েছেন। চরকগাছিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ হুমায়ূন কবির প্রবেশ পত্র বাবদ ৫৫০ টাকা নেয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, পরীক্ষার কেন্দ্রে খরচ আছে, তাই নিয়েছি। গাজীপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থী রাবেয়া, মরিয়ম, ফরিদ ও লিহাব জানান,প্রবেশ পত্র বাবদ স্যারেরা ৫০০ টাকা নিয়েছেন। ঘটখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আবুল কাসেম জানান, প্রবেশ পত্র বাবদ যাদের ব্যবহারিক বিষয় আছে, তাদের কাছ থেকে ৩০০ টাকা এবং যাদের ব্যবহারিক বিষয় নেই তাদের কাছ থেকে ২৫০ টাকা আদায় করা হয়েছে। প্রবেশ পত্রের ফি টাকা পরীক্ষার ফরম পূরনের সময় নিয়েছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি কোন সদুত্তোর দিতে পারেনি। চিলা হাসেম বিশ্বাস মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ মোয়াজ্জেম হোসেন মুঠোফোনে বলেন, প্রবেশ পত্র বাবদ ৩০০ টাকা আদায় করেছি। ঘটখালী আমিন উদ্দিন আলিম মহিলা মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ও মাদ্রাসা কেন্দ্র সচিব মাওলানা মোঃ আবদুস ছালাম বলেন, মাদ্রাসা বোর্ডের নির্বারিত ৩০০ টাকা নিয়েছি কিন্তু কিছু কিছু মাদ্রাসায় বকেয়া পাওনা থাকলে সেই টাকা আদায় করতে পারে। আমতলী মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ আকমল হোসেন খান বলেন, এ বিষয়টি আমার জানা নেই। অভিযোগ পেলে আইন গত ব্যবস্থা নেয়া হবে। আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ সরোয়ার হোসেন বলেন, প্রবেশ পত্রের নামে টাকা নেয়ার কথা নয়, যদি কোন প্রতিষ্ঠান নিয়ে থাকে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
×