ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ‘মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিব’

প্রকাশিত: ০৬:৪৮, ২৮ জানুয়ারি ২০১৮

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ‘মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিব’

হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী, মহান মুক্তিযুদ্ধের মহানায়ক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতিকে বুকে ধারণ করতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থাপন করা হয়েছে দেশের অন্যতম ও ক্যাম্পাসভিত্তিক সর্ববৃহৎ ম্যুরাল ‘মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিব’। গত ৭ জানুয়ারি স্মরণকালের ঐতিহাসিক সমাবর্তনে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য ও মহামান্য রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ এ ম্যুরালটির উদ্বোধন করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক পেরিয়েই সুবিস্তৃত ডাইনা চত্বরের সামনে দেখা যাবে ম্যুরালটি। ‘মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিব’ ম্যুরালটির মূল পরিকল্পনাকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন উর রশিদ আসকারী। মূল স্থাপনাটির দৈর্ঘ্য সিঁড়িসহ ৫০ ফুট এবং প্রস্থ ৩৮ ফুট। বেদের উচ্চতা ৫ ফুট। বেদের ওপর নির্মিত বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতির দৈর্ঘ্য ২৬ ফুট এবং প্রস্থ ১৭ ফুট। এটি রড, সিমেন্ট দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। এর তিনটি সিঁড়ি রয়েছে। সম্পূর্ণ সিঁড়িগুলো উন্নতমানের সিরামিক দ্বারা সুসজ্জিত করা হয়েছে। স্থাপনার তিন দিকে দর্শনার্থীদের সুবিধার্থে দুই স্তরের প্রায় ১৫ ফিট চওড়া জায়গা রয়েছে। মূল বেদির ওপর প্রায় আড়াই ফুট উচ্চতা এবং ২০ ফুট চওড়া একটি ওয়াল স্থাপন করা হয়েছে যেটার ওপর দর্শনার্থীরা তাদের শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করতে পারবেন। এছাড়া বেদিসহ অন্যান্য জায়গাগুলো উন্নতমানের টাইলস স্থাপন করা হয়েছে। মূল প্রতিকৃতির ডানপাশে ৪ ফুট চওড়া ও ২০ উচ্চতার একটি ওয়াল স্থাপন করা হয়েছে। যেখানে ‘একজন মানুষ হিসেবে সমগ্র মানবজাতি নিয়েই আমি ভাবি। একজন বাঙালী হিসেবে যা কিছু বাঙালীদের সঙ্গে সম্পর্কিত তাই আমাকে গভীরভাবে ভাবায়। এই নিরন্তর সম্পৃক্তির উৎস ভালবাসা, অক্ষয় ভালবাসা, যে ভালবাসা আমাকে রাজনীতি এবং অস্তিত্বকে অর্থবহ করে তোলে।’ বঙ্গবন্ধুর স্বাক্ষর করা এই অমিয় বাণীটুকু লিপিবদ্ধ আছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী জালাল উদ্দিন তুহিনের যৌথ অর্থায়নে এটি নির্মিত হয়েছে। ম্যুরালটির নকশা করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) মো. আলীমুজ্জামান টুটুল। এটির শিল্পী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের কনক কুমার পাঠক। ম্যুরালটি নির্মাণ খরচ প্রায় ৩৫ লাখ। ক্যাম্পাসে এতো নান্দনিক, বৃহদাকার ম্যুরাল তৈরিতে উচ্ছ্বসিত ইবির শিক্ষার্থীরা। যেমনটা বলছিলেন ইবি প্রেসক্লাবের সভাপতি ও ফলিত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অনুষদের সাবেক সিনিয়র সভাপতি ইকবাল হোসেন রুদ্র, ‘বঙ্গবন্ধুৃর আদর্শকে শিক্ষার্থীদের মাঝে তুলে ধরতে যে ‘মৃত্যুঞ্জয়ী মুুজিব’ স্থাপিত হয়েছে এজন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানায়। সে সঙ্গে শিক্ষার্থীরা যেন বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে বুকে ধারণ করে বাস্তব জীবনে এর সফল প্রয়োগ ঘটাতে পারে এবং বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়তে সদা সচেষ্ট থাকে।’ ভ্রমণপিপাসুরা দূর-দূরন্ত থেকে নান্দনিক ম্যুরালকে একনজর দেখতে ছুটে আসছেন ক্যাম্পাসে। কমলমতি শিশুরাও তাদের বাবা মার হাত ধরে ক্যাম্পাসের আসছে ক্যাম্পাসের অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. হারুন-উর-রশিদ আসকারী বলেন, ‘নতুন প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের মাঝে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও অসাম্প্রদায়িক দর্শন সঞ্চারিত করার জন্য এই দৃষ্টিনন্দন শিল্পকর্মটি প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে। যার নান্দনিক সৌন্দর্য্য অনুপম। এটি অসাম্প্রদায়িক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম ভাস্কর্য।’
×