ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সারোয়ার জাহান সাগর

নবীনের পদচারণায় মুখরিত ক্যাম্পাস

প্রকাশিত: ০৬:৪৭, ২৮ জানুয়ারি ২০১৮

নবীনের পদচারণায় মুখরিত ক্যাম্পাস

সবার জীবনে স্বপ্ন থাকে। থাকে স্বপ্ন পূরণের চেষ্টা। বিশ্ববিদ্যালয় স্বপ্ন বাস্তবায়নের প্রধান সিঁড়ি। স্বভাবতই এ সিঁড়িতে পা দিতেই হৃদয়ে আনন্দ উচ্ছ্বাস বয়ে যায়। নতুন করে শুরু হয় পথচলা। আর এ সিঁড়ি গণবিশ্ববিদ্যালয়ে। লাল-সাদা শাপলার জলভরা হরদ, ঢেউ খেলানো রাস্তা, নান্দনিকের ভূবিন্যাস, মেহগনি-রাধাচূড়া-শাল-ঝাউ- সোনালুসহ নাম না জানা শত শত গাছ ও স্বর্পগন্ধা-শতমূলী-উলটচালের মতো অসংখ্য দুর্লভ বনফুলের ইন্দ্রজালে বিদ্যমান এ কাম্পাস। ছত্রিশ একরের এই ক্যাম্পাস সারাবছর নানা ধরনের সাংস্কৃতিক উৎসব আর পাখিদের কলতানের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে নবীন শিক্ষার্থীদের পদচারণা। ২৫ নবেম্বর সকালে সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গে গণবিশ্ববিদ্যালয়ে স্বপ্নচারীদের ভিড় বাড়তে থাকে। কুয়াশার চাদর ভেদ করে সূর্যি মামা হেসেছিল মিষ্টি হাসি। সেই হাসির ছোঁয়া লেগেছিল হাজারো স্বপ্ন বুকে লালন করে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে পদার্পণকারী নবীনদের ঠোঁটে। সবুজ ছায়া ঢাকা এ ক্যাম্পাসের শান্ত স্নিগ্ধ আবহ যেন আরও প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে নবীনদের আগমনে। মুখর হয়ে উঠে বকুলতলা, ফুসকাচত্বর, লাইব্রেরীর পাদদেশ। উচ্চ শিক্ষার লক্ষ্যে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসা এসব নবীন ছাত্রছাত্রীদের চোখে মুখে ফুটে উঠছে নতুন করে জীবন গড়ার স্বপ্ন। নবাগত শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন বিভাগ আলাদা আলাদাভাবে বরণ করে নিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকেই ছোট-বড় নানা সমস্যার সম্মুখীন হলেও এসব নবীন শিক্ষার্থীর স্বপ্ন নিঃসন্দেহে আকাশছোঁয়া। আর তা হলো উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে দেশ ও মানুষের কল্যাণে আত্মনিয়োগ করা। ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থী মামুন জানান, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করা প্রত্যেক শিক্ষার্থীর দীর্ঘলালিত স্বপ্ন। প্রথমবারের মতো ক্লাসে অংশগ্রহণ করার মাধ্যমে সেই স্বপ্ন পূরণ হওয়ায় কি যে ভাল লাগছে, তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারবো না।’ আইন বিভাগের নবীন শিক্ষার্থী সুমাইয়া ইসলাম জানালেন তার স্বপ্নের কথা, ‘আমার জীবনের লক্ষ্য একজন আইনজীবী হওয়া। তাই এখানে আইন বিভাগে ভর্তি হতে পেরে খুব ভাল লাগছে। সত্যিই অসম্ভব ভাল লাগছে এ ক্যাম্পাসে ভর্তি হয়ে। শহরের যানজটে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছি। এবার কোলাহলমুক্ত মনোরম পরিবেশে নিজেকে গড়ে তুলতে চাই। কথা হলো বাদামতলায় আড্ডারত নাহিদের সঙ্গে। দৃঢ় কণ্ঠে সে জানাল, বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করার স্বপ্ন কার না থাকে। আর সে স্বপ্ন হাতের মুঠোয় এসেছে। এখন সময় এসেছে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার। ভাল ফলাফল করে এ ক্যাম্পাসেরই শিক্ষক হতে চাই। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নিজেকে উচ্চ মর্যাদায় আসীন করার জন্য পড়াশোনার বিকল্প নেই। প্রতিযোগিতায় নিজেকে টিকিয়ে রাখার জন্য সবচেয়ে উৎকৃষ্ট উপায় হলো সুনির্দিষ্ট ক্যারিয়ার পরিকল্পনা। আর বর্তমান আইন পেশা অন্যান্য পেশা থেকে অনেক ক্ষেত্রেই এগিয়ে। তাইতো পড়াশোনার জন্য আইন বিভাগ বেছে নিয়েছি। কথাগুলো বলছিলেন আইন স্টাডিজ বিভাগের ছাত্র নাহিদুর রহমান রোজেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে নতুন নতুন স্বপ্ন দেখে চলেছে সবাই। কেউ কেউ বিসিএস ক্যাডার হতে চান। কেউ বা ফার্মাসিস্ট আবার কেউ বিজ্ঞানী। এমন স্বপ্ন সত্যি ওদের চোখেই মানায়। স্বপ্ন পূরণের চিন্তায় সবাই বিভোর। এই সব স্বপ্নিল তরুণ-তরুণীদের স্বপ্নের উড়ালটা পূর্ণতা পাবে বিশ্ববিদ্যালয় জীবন শেষ করার মাধ্যমে। এমনটিই কামনা সবার। তবে নবীন এ শিক্ষার্থীদের মনে রাখতে হবে, মানুষ ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে যে স্বপ্ন দেখে তা বাস্তব স্বপ্ন নয় বরং স্বপ্ন তাই যা মানুষকে ঘুমাতে দেয় না।
×