ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

খামখেয়ালী সভার চতুর্থ বর্ষপূর্তিতে রবীন্দ্রগুণী সম্মাননা

প্রকাশিত: ০৫:৫০, ২৮ জানুয়ারি ২০১৮

খামখেয়ালী সভার চতুর্থ বর্ষপূর্তিতে রবীন্দ্রগুণী সম্মাননা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ভীষণ আড্ডাপ্রিয় মানুষ ছিলেন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। নির্মল আড্ডার মাঝে খুঁজে নিতেন আনন্দের খোরাক। সেই তাড়নায় সাহিত্য-সংস্কৃতি জগতের প্রথিতযশাদের নিয়ে ১৮৯৭ সালে কবিগুরু ‘খামখেয়ালী সভা’ নামের একটি আড্ডা চালু করেছিলেন। দীর্ঘ ১১৭ বছর পর ২০১৪ সালে শহর ঢাকায় খামখেয়ালী সভা শীর্ষক সেই আড্ডাটির আবার পুনর্জাগরণ হয়। আর এ বছর পুনর্জাগরিত সেই আড্ডাটি পদার্পণ করলো চতুর্থ বছরে। সেই সুবাদে হয়ে গেল খামখেয়ালী সভার চতুর্থ বর্ষপূর্তি। এ উপলক্ষে শুক্রবার থেকে দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। শনিবার ছিল সে আয়োজনের শেষ দিন। এদিন সন্ধ্যায় সমাপনী অনুষ্ঠানে শিল্পকলা একাডেমির চিত্রশালা মিলনায়তনে প্রদান করা হয় ‘রবীন্দ্রগুণী সম্মাননা’। তিন রবীন্দ্রসাধক পেয়েছেন এ সম্মাননা। তাঁরা হলেন রবীন্দ্র গবেষক ও সঙ্গীতজ্ঞ অধ্যাপক ড. করুণাময় গোস্বামী (মরণোত্তর), রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী মিতা হক ও কলকাতার টেগোর রিসার্চ ইনস্টিটিউটের পরিচালক মঞ্জুলা বসুকে। এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন রবীন্দ্রগুণী ও ভাষাসংগ্রামী আহমদ রফিক। সভাপতিত্ব করেন খামখেয়ালী সভার সভাপতি মাহমুদ হাশিম। করুণাময় গোস্বামীর পক্ষে সম্মাননা গ্রহণ করেন তার সর্বশেষ কর্মস্থল ক্যামব্রিয়ান এডুকেশন গ্রুপের কর্ণধার এম কে বাশার। অনুভূতি ব্যক্ত করে মিতা হক বলেন, রবীন্দ্রগুণী সম্মাননা প্রাপ্তি মনের মাঝে ভিন্নরকম এক আনন্দ বিরাজ করছে। তাছাড়া আমি খামখেয়ালী সভার প্রতি রয়েছে আমার বিশেষ অনুরাগ। কারণ রবীন্দ্রনাথের সাহিত্য ও দর্শনের আলোয় প্রভাবিত এ সভা। করুণাময় গোস্বামীর প্রতি ভালোবাসা জানিয়ে এই শিল্পী বলেন, রবীন্দ্রসঙ্গীতের ভুবনে তিনি ছিলেন আমাদের অভিভাবক। গানের মর্মবাণী বুঝতে শেখা, সেটার প্রকাশসহ কেমন করে গাইতে হবেÑএসব বিষয়ে তাঁর নির্দেশনা ছিল আমাদের পাথেয়। এমনকি তিনি সঙ্গীতচর্চার ক্ষেত্রে নিরীক্ষাও চালাতেন। অধ্যাপক মঞ্জুলা বসু বলেন, ভারতবর্ষের বাইরে মিতা হকের মতো শিল্পীর সঙ্গে এ পুরস্কার পাওয়া অনেক আনন্দের। হয়তো আমার চেয়ে যোগ্যতর লোককেও পুরস্কারটি দিতে পারতেনÑতবে খামখেয়ালী সভা বলে হয়তো এটাও একটা খামখেয়ালী। আমি ৫৩ বছর ধরে টেগোর রিসার্চ ইনস্টিটিউটের সঙ্গে যুক্ত আছি। এটা ওই প্রতিষ্ঠানেরও সম্মান। আহমদ রফিক বলেন, রবীন্দ্রগুণীরা নিজ গুণেই এ সম্মাননা পেয়েছেন। তারা রবীন্দ্র সাহিত্য, সঙ্গীতসহ রবীন্দ্র জীবনের বিভিন্ন বিষয়ে কাজ করছেন। সম্মাননা প্রদান ও আলোচনা শেষে ছিল নৃত্য-গীত ও কবিতায় সজ্জিত সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। দোলায়িত ছন্দের শিল্পিত উচ্চারণে কবিতাপাঠ করেন আবৃত্তিশিল্পী তামান্না তিথি। হাশেম খানের শিল্পকর্ম প্রদর্শনী সমাপ্তি ॥ বর্ণবহুল রঙে চিত্রিত হাশেম খানের ক্যানভাস শিল্পানুরাগীদের কাছে চিরচেনা। প্রখ্যাত এই শিল্পী এবার নিজেকে উপস্থাপন করলেন সেই চিত্রপটের বাইরে। কাগজের পরিবর্তে কাঠের বুকে সাজিয়েছেন চিত্রপট। কাঠখোদাই করে অবয়বের মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলেছেন আপন শিল্প-ভাবনাকে। মেলে ধরেছেন বাঙালীর মুক্তির সনদ ছয় দফা থেকে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধের সেøাগান জয় বাংলা। প্রস্ফুটিত হয়েছে জ্যামিতিক নকশায় গড়া বিচিত্র ভাবনা। কাঠের পাটাতনের ওপর রং-তুলির আঁচড়ে উদ্ভাসিত হয়েছে বহুবিধ বিষয়। গড়েছেন কাঠচিত্র, কাঠ ভাস্কর্য ও জোড়াতালির চিত্রকর্ম। নিজেকে নতুন করে চেনানো জোড়াতালির চালচিত্র শীর্ষক শিল্পকর্ম প্রদর্শনীটির সূচনা হয় ৫ জানুয়ারি। জাতীয় জাদুঘরের নলিনীকান্ত ভট্টশালী প্রদর্শনালয়ে ২৭ দিনব্যাপী চলমান সেই প্রদর্শনীর সমাপ্তি হলো শনিবার। শনিবার বিকেলে জাদুঘরের নলিনীকান্ত ভট্টশালী প্রদর্শনালয় কক্ষে এ প্রদর্শনীর সমাপনী অনুষ্ঠান হয়।
×