ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

রায় হওয়ার আগেই বিএনপি রায়ের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিচ্ছে ॥ কাদের

প্রকাশিত: ০৫:৪৭, ২৮ জানুয়ারি ২০১৮

রায় হওয়ার আগেই বিএনপি রায়ের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিচ্ছে ॥ কাদের

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আদালতের রায় হওয়ার আগেই বিএনপি রায়ের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিচ্ছে। বিএনপি আদালতকে হুমকি দিচ্ছে। যারা আদালত, গণতন্ত্র, আইন ও আইনের শাসন মানে না তাদের মুখে বড় বড় কথা মানায় না। শনিবার সন্ধ্যায় ঢাকার শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের এ মন্তব্য করেন। বরেণ্য শিল্পী হাশেম খানের শিল্পকর্ম প্রদর্শনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ওবায়দুল কাদের। ইতিহাসবিদ অধ্যাপক মুনতাসীর মামুনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি লেখক-সাংবাদিক শাহরিয়ার কবির, স্থপতি রবিউল হোসাইন, শিল্পী রোকেয়া সুলতানা প্রমুখ। ‘খালেদা জিয়াকে যেনতেন প্রকারে একটা রায় দেয়ার ব্যবস্থা করা হলে জনগণ তা মেনে নেবে না’- বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের এমন মন্তব্যের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, যেনতেন রায়ের অর্থটা কী? বাংলাদেশের আদালতের রায়কে মির্জা ফখরুল ইসলাম কী এভাবে আন্ডারস্টিমেট (হেয়প্রতিপন্ন) করছেন? আমি মনে করি, তার এই মন্তব্য আদালত অবমাননার শামিল। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পাল্টা প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়ে বলেন, আদালত কী বিএনপিকে বলে দিয়েছে যে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার রায় যেনতেনভাবে হবে? মির্জা ফখরুল ইসলাম কী করে জানলেন আদালতের রায় বিপক্ষে যাবে? তিনি বলেন, এই রায় সরকার দিচ্ছে না, আদালত দিচ্ছে। আদালতের রায় যখন বিএনপির পক্ষে যায়, তখন আদালত স্বাধীন। রায় বিপক্ষে গেলে তখন আদালতের স্বাধীনতা নেই, সরকারের হস্তক্ষেপের অভিযোগ করে বিএনপি। সেতুমন্ত্রী বলেন, বিএনপির মহাসচিব ফখরুল ইসলাম ও তার দলের নেতারা মামলার রায়কে কেন্দ্র করে যে ধরনের বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন, তাতে মনে হয় এই দলের হাতে বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থা নিরাপদ নয়। বিএনপি ক্ষমতায় এলে কোনটিই নিরাপদ নয়। তিনি বলেন, ৮ ফেব্রুয়ারি রায় কী হবে জানি না, কিন্তু রায়ের আগেই বিএনপি রায়ের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিচ্ছে। রায় তাদের পক্ষে না গেলে তারা আদালতকে হুমকি দিচ্ছে। বিএনপির বিরুদ্ধে অভিযোগ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি নির্বাচনে না জিতলে বলে নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ নয়। আদালতের রায় পক্ষে না গেলে বলে আদালত পক্ষপাতিত্ব করছে। আসলে যারা আদালত, গণতন্ত্র, আইন ও আইনের শাসন মানে না তাদের মুখে এ সব কথা মানায় না। সরকার আদালতের ওপর কোন হস্তক্ষেপ করছে না ॥ নিজস্ব সংবাদদাতা সাভার থেকে জানান, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বাংলাদেশের আদালত স্বাধীনভাবে দায়িত্ব পালন করছেন। সরকার কোন হস্তক্ষেপ করছে না। সরকারের মন্ত্রী, এমপি ও ছাত্রলীগ সংগঠনের অনেক নেতা-কর্মীও কারাগারে রয়েছেন। এদের মধ্যে অনেকের সাজাও হয়ে গেছে। সরকার আদালতের ওপর কোন হস্তক্ষেপ করছে না। শনিবার দুপুরে সাভারের হেমায়েতপুরে হেমায়েতপুর-মানিকগঞ্জ সিংগাইর আঞ্চলিক সড়কের উন্নয়ন কাজ উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি একথা বলেন। এ সময় তিনি আরও বলেন, যদি আদালত স্বাধীন না হতো তাহলে খুনের মামলায় আওয়ামী লীগের এমপি কারাগারে থাকত না। আদালতের স্বাধীনতায় সরকারের কোন হস্তক্ষেপ নেই। বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার দুর্নীতির মামলার কি সাজা হবে- এটা আদালতের এখতিয়ার। সাক্ষ্য, প্রমাণ ও তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে আদালত সিদ্ধান্ত নেবে। এখানে সরকারের কোন হাত নেই। আদালত কি রায় দেবে- সেটা তো বিএনপি বলে দিচ্ছে। আদালত বেগম জিয়াকে সাজা দেবে, এটা পূর্ব পরিকল্পিত- তা হলে মির্জা ফখরুল কিভাবে জানলো? তাহলে বিএনপি আদালতকেও হুমকি দিচ্ছে। আদালতের রায়ও বিএনপি মানে না। তারা কার বিরুদ্ধে আন্দোলনের হুমকি দিচ্ছে? আদালতের বিরুদ্ধে যারা হুমকি দিতে পারে- আমরা মনেকরি তাদের হাতে দেশ ও গণতন্ত্র বিচার ব্যবস্থা কোনটাই নিরাপদ নয়। নির্বাচনের আগেই বিএনপি নির্বাচনে জিততে চায়। ২০১৩/১৪ সালের মতো নির্বাচনের নামে বিএনপি যদি জ্বালাও-পোড়াও করতে চায়, তাহলে জনগণেই তাদের প্রতিহত করবে। আওয়ামী লীগে কোন অনুপ্রবেশকারী নেই জানিয়ে তিনি বলেন, আগামী রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে দল ও দেশের কাছে যে ব্যক্তি গ্রহণযোগ্য তাকেই রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে মনোনয়ন দেয়া হবে। সংসদ নির্বাচনে তিন মাস পরপর জরিপ হচ্ছে। যে ব্যক্তি জরিপে এগিয়ে থাকবে, তাকেই মনোনয়ন দেয়া হবে। মন্ত্রীর সঙ্গে এ সময় উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সংসদ সদস্য ডাঃ এনামুর রহমান, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল আলম রাজীব, তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফখরুল আলম সমরসহ সড়ক ও জনপদ বিভাগের উর্ধতন কর্মকর্তাবৃন্দ।
×