ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

মাতারবাড়িতে বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণ কাজ আজ শুরু

প্রকাশিত: ০৫:৪০, ২৮ জানুয়ারি ২০১৮

মাতারবাড়িতে বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণ কাজ আজ শুরু

স্টাফ রিপোর্টার ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ রবিবার কক্সবাজারের মাতারবাড়িতে এক হাজার ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করবেন। জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি জাইকার অর্থায়নে বিদ্যুত কেন্দ্রটি নির্মাণ করছে বাংলাদেশ কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি। এখানে বিদ্যুত কেন্দ্রর জন্য একটি নৌ চ্যানেল এবং কয়লা খালাসের জন্য জেটি নির্মাণ করা হবে। তবে সরকার চাইছে এখানে একটি কয়লাবন্দর নির্মাণ করতে। বন্দরটি প্রতিদিন ১০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুত কেন্দ্রের জন্য কয়লা খালাস করতে পারবে। বন্দরটি নির্মাণ করবে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। বন্দরটি নির্মাণের জন্য সম্ভাব্যতা জরিপ করা হচ্ছে। মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বন্দরটি কয়লা ছাড়াও বহুমুখী ব্যবহার করা যায় কি না সেসব বিষয়ও বিবেচনা করতে হচ্ছে। সরকার চাইছে বন্দরটিকে গভীর সমুদ্র বন্দর হিসেবে ব্যবহার করতে। প্রধানমন্ত্রী আজ দুপুর সাড়ে বারোটায় তাঁর কার্যালয় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারান্সের মাধ্যমে এ কাজের উদ্বোধন করবেন। কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কাশেম শনিবার সন্ধ্যায় জানান, আজ তাদের কেন্দ্রে নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। এজন্য সব প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। মাতারবাড়িতে কয়লা বিদ্যুত কেন্দ্রর সঙ্গে জেটি এবং চ্যানেল নির্মাণ করবে তার কোম্পানি। কক্সবাজারের মাতারবাড়িতে সরকার বিদ্যুতের একটি হাব গড়ে তোলার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে। এর মধ্যে কয়লা থেকে প্রায় ১০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুত উৎপাদন করা হবে। আমদানিকৃত তরলায়িত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) থেকেও সেখানে বিদ্যুত উৎপাদন হবে। এ ছাড়া সেখানে সাগরে ভাসমান জাহাজের মাধ্যমে এলএনজি আমদানি করে তা পাইপ লাইনের মাধ্যমে দেশের অন্যান্য প্রান্তে পৌঁছে দেয়া হবে। ইতোমধ্যে এ জন্য ৯০ কিলোমিটার পাইপ লাইন নির্মাণের কাজ শেষ করেছে গ্যাস সঞ্চালন কর্তৃপক্ষ জিটিসিএল। চলতি বছরের এপ্রিল মাসে প্রথম দফায় প্রতিদিন ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি আমদানি করার ঘোষণা দিয়েছে সরকার। ২০১৫ সালের অগাস্টে মাতারবাড়িতে বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণে ৩৬ হাজার কোটি টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদন করে সরকার। জাপানের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগিতা সংস্থা জাইকা এ প্রকল্পে ২৯ হাজার কোটি টাকা দেবে। বাকি অর্থ সরকারী তহবিল থেকে ব্যয় করা হবে। জানা গেছে, মহেশখালীর মাতারবাড়ি ও ঢালঘাটা ইউনিয়নের এক হাজার ৪১৪ একর জমিতে এ বিদ্যুত প্রকল্পটির নির্মাণ কাজ ইতোমধ্যে ১৭ শতাংশ শেষ হয়েছে। এ প্রকল্পে বর্তমানে ৪০০ শ্রমিক কাজ করছেন। পর্যায়ক্রমে আরও দুই হাজার শ্রমিক এ প্রকল্পে যোগ দিবে বলে প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণে গত বছরের জুলাইয়ে জাপানের তিনটি প্রতিষ্ঠানের একটি কনসোর্টিয়ামের সঙ্গে চুক্তি করে কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি। জাপানি কনসোর্টিয়ামের অন্যতম কোম্পানি তোশিবা করপোরেশন। ২০২৪ সালে এ কেন্দ্র থেকে বিদ্যুত উৎপাদন শুরু হবে। সম্প্রতি মাতারবাড়ি প্রকল্প পরিদর্শন করেন বিদ্যুত, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। সে সময় তিনি সাংবাদিকদের মাতারবাড়িতে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুত কেন্দ্র প্রকল্পের আওতায় নির্মিতব্য বন্দরটিই পরবর্তীতে গভীর সমুদ্র বন্দরে রূপান্তরিত করা হবে বলে জানিয়েছিলেন।
×