ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

ড্র করে শেষ আটে চট্ট. আবাহনী আরামবাগ

প্রকাশিত: ০৬:০৪, ২৭ জানুয়ারি ২০১৮

ড্র করে শেষ আটে চট্ট. আবাহনী আরামবাগ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ম্যাচ শুরুর আগে তিন দলই ছিল জটিল সমীকরণের মুখোমুখি। চট্টগ্রাম আবাহনী জিতলে তারা এবং সাইফ স্পোর্টিং ক্লাব কোয়ার্টার ফাইনালে যাবে। আরামবাগ জিতলে তারা এবং সাইফ কোয়ার্টারে যাবে। আর আবাহনী-আরামবাগ যদি ২-২ গোলে ড্র হয় তাহলে তারা উভয় দলই কোয়ার্টারে যাবে। সেক্ষেত্রে গোলগড়ে পিছিয়ে পড়ে স্বাধীনতা কাপ ফুটবলের আসর থেকে বিদায় নেবে সাইফ। কিন্তু এর কোনটাই ঘটেনি। শুক্রবার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ‘ডি’ গ্রুপের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে চট্টগ্রাম আবাহনী লিমিটেড এবং আরামবাগ ক্রীড়া সংঘ ১-১ গোলে ড্র করে। এর ফলে তিন দলেরই ২ খেলায় সমান ২ পয়েন্ট হয়ে যায়। কিন্তু গোল বেশি করায় চট্টগ্রাম আবাহনী (স্বপক্ষ গোল ২, বিপক্ষ গোল ২) গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন এবং আরামবাগ (১/১) গ্রুপ রানার্সআপ হয়ে কাক্সিক্ষত শেষ আটে নাম লেখায়। এতে কপাল পুড়েছে সাইফের। কেননা তাদের পয়েন্ট (২) ও গোল (১/১) আরামবাগের সমান হলেও কোয়ার্টারে যেতে পারেনি। কারণ কার্ডের খেলায় হেরে গেছে তারা। বাইলজ অনুযায়ী গ্রুপে একাধিক দলের পয়েন্ট ও গোল সমান হয়ে গেলে সেক্ষেত্রে দেখা হবে কোন দল লালকার্ড ও হলুদ কার্ড বেশি পেয়েছে। এই তিন দলের কারুরই কোন লালকার্ড নেই। তবে হলুদ কার্ড আছে। চট্টগ্রাম আবাহনী এবং সাইফের ২টি ও আরামবাগের ১টি। যেহেতু চট্টগ্রাম আবাহনী গোলগড়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে কোয়ার্টার নিশ্চিত করে ফেলেছে সেহেতু বেশি হলুদ কার্ড পেলেও সেটা তাদের বেলায় প্রযোজ্য হয়নি। আরামবাগ যেহেতু সাইফের চেয়ে কম হলুদ কার্ড পেয়েছে তাই সৌভাগ্যের ছোঁয়া পেয়ে তারা গ্রুপ রানার্সআপ হয়ে চলে যায় কোয়ার্টারে। ফলে কার্ডের মারপ্যাঁচে পড়ে কপাল পোড়ে সাইফের। এই ম্যাচের মধ্য দিয়েই শেষ হলো এই আসরের গ্রুপপর্বের সবগুলো ম্যাচ। অথচ এএফসি কাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছিল সাইফ। আর চট্টগ্রাম আবাহনীর কৃতিত্ব হলো এএফসি কাপে খেলার জন্য সাইফকে নিজেদের সাত খেলোয়াড় ধার দিয়েছিল তারা। ফলে স্বভাবতই তাদের শক্তি কিছুটা হলেও খর্ব হয়েছিল। কিন্তু এই খর্ব শক্তি নিয়েও তারা স্বাধীনতা কাপে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে ঠিকই শেষ আটে পৌঁছাতে পেরেছে। শুক্রবারের পুরো ম্যাচে কর্নার পায় আরামবাগ ৪টি, আবাহনী ৬টি। আক্রমণ সংখ্যায় সামান্য ব্যবধানে এগিয়ে ছিল আরামবাগই (১৫৩-১৪৯)। তবে বিপজ্জনক আক্রমণে এগিয়ে ছিল আবাহনীই (১৩৮-৯২)। অন টার্গেটে শট নেয়ার বেলাতেও তাই (১৫-৫)। বল নিয়ন্ত্রণেও (৫২%-৪৮%)। শুক্রবারের ম্যাচটি শুরু থেকেই দুই দলের আক্রমণ ও পাল্টা আক্রমণের মধ্য দিয়ে প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে। ১৩ মিনিটে বাঁপ্রান্ত দিয়ে কর্নার থেকে আবাহনীর কৌশিক বড়ুয়ার নেয়া হেড লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ১৬ মিনিটে গোলের সহজ সুযোগ হাতছাড়া হয় আরামবাগের। ডানপ্রান্ত থেকে ডি-বক্সের সামান্য বাইরে থেকে হাবিবুর রহমান সোহেলের নেয়া শট গোলে ঢুকছিল। কিন্তু ওই সময় আরামবাগের জুয়েল হেড করলে বল দ্বিতীয়বার ঘেঁষে বাইরে গেলে নিশ্চিত গোলবঞ্চিত হয় ‘রাইজিং স্ট্রেন্থ’ আরামবাগ। ১৯ মিনিটে পাল্টা আক্রমণ থেকে গোল পেতে পারত ‘বন্দরনগরীর দল’ চট্টগ্রাম আবাহনী। যদি না কৌশিক বড়ুয়ার ক্রসে জাফর ইকবালের নেয়া হেডটি সাইডবারে লেগে ফেরত আসতো। প্রথমার্ধে কোন দলই গোল করতে না পারায় ০-০ গোলে অমীমাংসিত থাকে। ৫১ মিনিটে প্রথম গোল করে এগিয়ে যায় আরামবাগ। ডি-বক্সের বাইরে থেকে থ্রু পাসে বল পেয়ে আরামবাগের স্ট্রাইকার মোঃ জুয়েল চট্টগ্রাম আবাহনীর জালে বল পাঠাতে ভুল করেননি (১-০)। সংযুক্তি সময়ে (৯০+২) মিনিটে বদলি খেলোয়াড় তৌহিদুল আলম সবুজের গোলে নাটকীয়ভাবে সমতায় ফেরে আবাহনী। ডানপ্রান্ত থেকে রক্ষণভাগের খেলোয়াড় সুশান্ত ত্রিপুরার ক্রস থেকে বল পেয়ে ডি-বক্সের ভেতরে থাকা তৌহিদুল আলম সবুজ আলতো শটে আরামবাগের গোলরক্ষক আজম খানকে পরাস্ত করেন (১-১)। শেষ পর্যন্ত ওই স্কোরলাইনেই খেলা শেষ হলে কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত হয় উভয় দলেরই। আগামীকাল একই মাঠে বিকেল চারটায় প্রথম কোয়ার্টার ফাইনালে মুখোমুখি হবে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব ও ব্রাদার্স ইউনিয়ন। এছাড়া রবিবার দ্বিতীয় কোয়ার্টারে ফরাশগঞ্জ-রহমতগঞ্জ, তৃতীয় কোয়ার্টারে ঢাকা আবাহনী-আরামবাগ এবং চতুর্থ কোয়ার্টারে চট্টগ্রাম আবাহনী-শেখ রাসেল মুখোমুখি হবে।
×