ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

এ রকম টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হওয়াটা যে কোন টিমের জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ একটা ব্যাপার ;###;মাশরাফি বিন মর্তুজা

‘শিরোপা জিততে উদগ্রীব হয়ে আছি’

প্রকাশিত: ০৬:০২, ২৭ জানুয়ারি ২০১৮

‘শিরোপা জিততে উদগ্রীব হয়ে আছি’

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আজ ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে লড়াই করবে বাংলাদেশ। ম্যাচটিতে জিতলেই ইতিহাস গড়বে বাংলাদেশ। প্রথমবারের মতো টেস্ট খেলুড়ে দলগুলোর বিপক্ষে ত্রিদেশীয় সিরিজে খেলে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করবে। এমন ম্যাচে যে করেই হোক জিততে চান বাংলাদেশ ক্রিকেটাররা। বাংলাদেশ ওয়ানডে দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা তো বলেই দিয়েছেন, ‘শিরোপা জিততে উদগ্রীব হয়ে আছি।’ শুক্রবার ফাইনালপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে মাশরাফি আরও অনেক বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন। তার সারসংক্ষেপ এখানে তুলে ধরা হলো। * টিম টক মাশরাফি বিন মর্তুজা ॥ খুব স্বাভাবিক, ২৪ ঘণ্টাও হয়নি। আবার এসেছি প্রেস কনফারেন্সে। নতুন কিছু বা খুব বেশি কিছু বলার নেই। অবশ্য কথা তো হয়েছেই। কালকেও (বৃহস্পতিবার) বলেছি। এভাবে হার (শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে) আমরা চাইনি। ওই ব্যাপারটা মনে করে মাঠে নামা কঠিন। সবার কাছে বার্তা ছিল পজিটিভ থাকতে। প্রথম ম্যাচে যে মাইন্ডসেট ছিল কালও (আজ) সেটা নিয়ে মাঠে নামতে। এমন না যে একটা খারাপ গেছে বলে নেগেটিভ চিন্তা করব। বা যে গেমপ্ল্যান ছিল সেখান থেকে বেরিয়ে আসব। প্রথম ম্যাচে যে মাইন্ডসেট ছিল ওটা নিয়েই খেলার চেষ্টা করব। * তামিম/সাকিব না পারলে ভাল স্কোর কতটা কঠিন হয়ে যায় মাশরাফি ॥ এটা সত্যি কথা সাকিব আর তামিম, তামিম শুরুতে আউট হয়ে গেলে একটা চাপ হয়ে যায়। তামিমকেও দেয়া হয়েছে, সে যেন টোটাল খেলা কন্ট্রোল করে। সাকিবও অবশ্যই আমাদের বেস্ট পারফর্মার। এতোদিন সে পাঁচে খেলেছে, এখন তিনেও বেশ ভাল ব্যাট করছে। এখন আপনি মুশফিকের দিকে তাকান, সেও খারাপ অবস্থায় আছে তা না। কালও (বৃহস্পতিবার) অনেকক্ষণ সে ব্যাট করেছে। পাশে একজনকে পেলে ওর জন্য হয়তো সুবিধা হতো। মিডলঅর্ডার কোলাপ্স করেছে দুইদিন। কালকে (আজ) এতকম হলে বা এরচেয়ে বাজে পরিস্থিতি আসলে তারা সেটা নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না, এই চিন্তা অন্তত আমার মধ্যে নেই। * দ্বিপাক্ষিক সিরিজের ডিসাইডার ম্যাচ জিতেছেন আগে, এটা ফাইনাল মাশরাফি ॥ ফাইনাল ম্যাচে জেতার জন্য আমরা উদগ্রীব হয়ে আছি। এটা সত্যি কথা। প্রথমবারের মতো হবে যদি হতে পারি। তবে এটা হওয়ার আগ পর্যন্ত বেশি চিন্তা করলে চাপ এসে দাঁড়ায়। ফাইনাল ম্যাচে চাপ থাকেই। কাল (বৃহস্পতিবার) জিতলেও থাকত। আমার কাছে মনে হয় কালকে (বৃহস্পতিবার) হারাতে আরও চাপটা কমে যাওয়ার কথা। কাজেই একটা চাপ থাকে, ওটা থাকবেই। সবকিছু নির্ভর করছে কেমন শুরু করব ওটার ওপর। কালকে (বৃহস্পতিবার) প্রথম ১০ ওভারেই কিন্তু খেলা ওদের দিকে চলে গিয়েছিল, যেখান থেকে আমরা ফিরে আসতে পারিনি। এমন পরিস্থিতি যেন তৈরি না হয়, বুদ্ধি করে যেন খেলতে পারি। এই পরিস্থিতিগুলো হেন্ডেল করাটাই কঠিন হবে। যারা নার্ভ হেন্ডেল করবে তারাই এগিয়ে থাকবে। * এমন হারের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই ফাইনাল মাশরাফি ॥ যেভাবে আমরা হেরেছি ওটা অবশ্যই আমদের জন্য খুব স্বস্তির বিষয় ছিল না । যে পরিস্থিতি ছিল দু শ’ করলে অন্যরকম হতো। আর হ্যাঁ ফাইনালের আগে এমনিতেই চাপ থাকবে। ফাইনালের আগে হারায় ওইদিক থেকে সমতায় এসেছে। সবাই মাঠে আরেকটু চিন্তায় থাকতে পারে মাঠে। এটাকে আমি ভালভাবে দেখি। কারণ এতে সবাই আরও সতর্ক থাকবে। মানুষ সবসময় চায় না যে রিলাক্স থাকতে। রিলাক্স কিন্তু অনেক সময় পারফর্ম করতে অসুবিধাও করে। টেনসড থাকা অনেক সময় কাজে দেয়। এইদিক থেকে কালকের (বৃহস্পতিবার) হারটা আমাদের কাছে ইতিবাচক হিসেবে এসেছে। একই সঙ্গে জিম্বাবুইয়ে-শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সবাই প্রত্যাশা করছিল যে আমরা সব ম্যাচই জিতব। আমি বলে আসছিলাম ধারাবাহিকভাবে চার-পাঁচটা ম্যাচ ধরে রাখা আসলে এরকম টুর্নামেন্টে যে কোন দলেরই আপস-ডাউন থাকতে পারে। কালকে (বৃহস্পতিবার) একটা বাজে দিন গিয়েছি। আমি চাই না যে এটা নিয়ে আমার টিমে খুব বেশি আলোচনা হোক। * লঙ্কার সঙ্গে চ্যালেঞ্জ মাশরাফি ॥ ওয়ানডে ম্যাচে যেটা হয় আপনাকে কম্ফোর্টেবল জোনে রান নিয়ে যেতে হয়। বোলিং করলে সেটাও কম্ফোর্টেবল জোনে রাখতে হয়। কালকে (বৃহস্পতিবার) যেটা হয়েছে সেটা তো অপ্রত্যাশিত। ৮০ রান আপনি প্রত্যাশাই করতে পারেন না। আমরা চাই একটি স্বস্তির জায়গায় থাকতে। অন্তত যে ফাইট করা যায়। সেই জায়গায় থাকলে আমরা ভাল খেলতে পারব। সব নির্ভর করছে আমরা শুরুটা কেমন করি। যেহেতু ওরা কাল (বৃহস্পতিবার) শুরুতে আর্লি উইকেট পেয়েছে, রানআউট হয়েছে। রানআউট অনেক বড় ফ্যাক্টর ছিল। আমরা চাই না যে কাল (আজ) এই জিনিসগুলা হোক। * লঙ্কার ফিরে আসা নিয়ে মাশরাফি ॥ শ্রীলঙ্কা দল অবশ্যই জিম্বাবুইয়ে থেকে আরও বেশি পেশাদার এবং তাদের ইতিহাস আরও ঋদ্ধ। আমি মনে করি শ্রীলঙ্কা যেটা করেছে তাদের দিক থেকে, আমাদের দিক একসেপ্টেবল ছিল। আমাদের হারের ধরন নিয়ে বলছি না। কিন্তু তারা ঘুরে দাঁড়াতে পারে আমরা জানতাম। তাদের কিছু প্লেয়ার আছে যারা বিশ্বকাপ ফাইনালও খেলেছে। তাদের থেকে আপনি এক্সপেক্ট করবেন যে কোন পরিস্থিতিতে তারা ভাল খেলতে পারে। যেটা হয়তো আমাদের দলে অনেকের ১০-১২ বছর খেলার পরও ওই অভিজ্ঞতা নাই। ওদের দলে অবশ্যই ম্যাচ উইনার। শেষ তিন ম্যাচে আমরা হোম এ্যাডভান্টেজ নিয়ে খেলতে পেরেছি। আমি চাইব যে ফাইনালে এই সুবিধাটা আরও মেক্সিমাইজ করতে পারি। * মিরপুরে বাংলাদেশ এর আগে তিনটা ফাইনাল খেলেছে মাশরাফি ॥ এইটা আসলে আমার মাথায় ছিল না। মনে না করালেই পারতেন। এইটা আসলে প্রত্যেকটা মানুষের জন্যই নতুন সুযোগ। আমি হয়তো তিনটা ফাইনালে ছিলাম, মুশফিক ছিল, সাকিব ছিল, তামিমও ছিল হয়তোবা। তো এটা আমাদের জন্য নতুন আরেকটা সুযোগ। কালকে (আজ) সম্পূর্ণ নতুন একটা ম্যাচ। তো আগের ম্যাচগুলো নিয়ে ভাবার দরকার মনে করছি না। তবে হারজিত তো থাকবেই, একদল জিতবে আর একদল হারবে। এটা নিয়ে না ভেবে আমার মনে হয় ইতিবাচক ক্রিকেট খেলা আর প্রথম তিনটা ম্যাচ যেভাবে খেলেছি গতকালকের (বৃহস্পতিবার) ম্যাচেও যে মাইন্ড সেটআপ নিয়ে খেলেছি সেই মাইন্ড সেটআপটুকু থাকুক। হয়তো যেটা প্রত্যাশা ছিল সেটা হয়তো মাঠে ডেলিভার করতে পারিনি। ওইটা আবার না হলেই হয়। আমার কাছে মনে হয় যদি জিততে পারি তবে এটার ইমপ্যাক্ট ভাল হবে। এখন যারা ড্রেসিংরুমে আছে, যারা জুনিয়র প্লেয়ার, তারা হয়তো বা এ রকম একটা জয়ের ফ্লেভার কি, এ রকম ম্যাচ জিতলে কেমন লাগে, এটা বুঝবে। তখন হয়তো বা তাদের মধ্যে ওই চাওয়াটা বা জয়ের ক্ষুধাটা তৈরি হতে পারে। এসব ক্ষেত্রে কখনও কখনও এমন টুর্নামেন্ট জিতলে জুনিয়র প্লেয়াররা অনেক বুস্টআপ হয়। সিনিয়রদের কথা যদি বলি, আমাদের জন্যও এটা একটা গ্রেট অপরচুনিটি। আমার মনে হয় যে এ রকম টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হওয়াটা যে কোন টিমের জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ একটা ব্যাপার।
×