ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সুষ্ঠু নির্বাচন করাই নতুন আইজিপির বড় চ্যালেঞ্জ

প্রকাশিত: ০৫:৩৬, ২৭ জানুয়ারি ২০১৮

সুষ্ঠু নির্বাচন করাই নতুন আইজিপির বড় চ্যালেঞ্জ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নতুন আইজিপির সামনে তিনটি বড় চ্যালেঞ্জ। প্রথমত আগামী নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা, দ্বিতীয়ত-গণমুখী পুলিশিং ব্যবস্থার আরও উন্নয়ন ও তা অব্যাহত রাখা, তৃতীয়ত- জঙ্গীবাদ নির্মূল করা। এসব চ্যালেঞ্জের বিষয়ে আইজিপি একেএম শহীদুল হক বলেন, এটা নির্বাচনের বছর। সুষ্ঠু ও সফলভাবে নির্বাচনটা সম্পন্ন করাই নতুন আইজিপির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। এছাড়া আমরা গত কয়েক বছরে যে গণমুখী পুলিশিং ব্যবস্থা চালু করেছি, তিনি সেটা আরও বেগবান করবেন বলে মনে করি। কমিউনিটি পুলিশিং ভবিষ্যতে অব্যাহত রাখাটাও একটা চ্যালেঞ্জ হবে নতুন আইজিপির জন্য। কমিউনিটি পুলিশিংয়ের বিষয়ে আইজিপি বলেন, আমি সবসময় বিশ্বাস করি পুলিশ জনগণের বন্ধু হবে। আমাদের পুলিশ হবে জনবান্ধব পুলিশ। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করার সংস্কৃতি আমরা চালু করেছি। আইজিপি বলেন, ‘আমি সবসময় বিশ্বাস করি পুলিশ জনগণের বন্ধু হবে। আমাদের পুলিশ হবে জনবান্ধব। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করার সংস্কৃতি আমরা চালু করেছি। কমিউনিটি পুলিশিংয়ের মাধ্যমে আমরা পুলিশ ও জনগণের মধ্যে সেতুবন্ধন রচনা করেছি। এটা একটা অব্যাহত প্রক্রিয়া। আমার আশা থাকবে এই প্রক্রিয়া চলমান থাকবে। শুক্রবার রাজধানীর মিরপুরে শহীদ পুলিশ স্মৃতি কলেজে এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন। শহীদুল হক বলেন, নতুন আইজিপির সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ -এটা নির্বাচনের বছর। সুষ্ঠু ও সফলভাবে নির্বাচন সম্পন্ন করাই তার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। নতুন আইজিপি আমার ব্যাচমেট, তিনি ৩২ বছর চাকরি করেছেন, তার অনেক অভিজ্ঞতা আছে। আমি আশা করব, আমরা যে গণমুখী পুলিশিং ব্যবস্থাটা চালু করেছি, তিনি সেটা অব্যাহত রাখবেন। দায়িত্বকালে জঙ্গীবাদের উত্থান ও দমন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, হলি আর্টিজানে জঙ্গী হামলার পরবর্তী সময়ে জঙ্গীবাদের যে উত্থান হয়েছিল তা আমরা কীভাবে দমন করেছি জনগণই সেটা মূল্যায়ন করবে। তবে এটা শতভাগ নির্মূল করতে পারিনি। জঙ্গীবাদ নির্মূল করার চ্যালেঞ্জটা থেকে গেল। পুলিশে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পুলিশের ওপর মাঠপর্যায়ে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের চেষ্টা হয়। যারা রাজনীতি করেন- তারা জনকল্যাণেই কাজ করেন। সুতরাং জনকল্যাণে কোন হস্তক্ষেপ হলে আপত্তি নেই। তবে পুলিশ কারও ব্যক্তিগতভাবে ব্যবহৃত হবে না। কারণ আমরা যাই করি আইন মেনে করি। সারাদেশে হাজারও কাজ করে পুলিশ, কতটা কাজে আর হস্তক্ষেপ আসে? সব রাজনৈতিক দলই পুলিশের ওপর হস্তক্ষেপের চেষ্টা করে। কিন্তু আমাদের কাজ আমরা করে যাই। তিন বছরে নিজের গৃৃহীত পদক্ষেপ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা সবসময় বিশ্বাস করেছি পুলিশ জনগণের বন্ধু, ভুক্তভোগীর শেষ আশ্রয়স্থল। জনগণের সঙ্গে সেতুবন্ধন করে আমরা কাজ করেছি। কমিউনিটি পুলিশিংয়ের মাধ্যমে জনবান্ধব জবাবদিহিতামূলক পুলিশিং ব্যবস্থা চালু করেছি। এ প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে বলে আশা করি। বিদায়লগ্নে আইজিপি বলেন, প্রধানমন্ত্রী আস্থা রেখে আমাকে পুলিশ প্রধান করেছিলেন। আমি প্রধানমন্ত্রীর আস্থার প্রতি পূর্ণ সমর্থন রেখে সব ধরনের চেষ্টা করেছি। পুলিশের সক্ষমতা বৃদ্ধি ও কল্যাণে অনেক কাজ করেছি। ১ টেবিলে ৩ বছরে সব করা সম্ভব নয়। তারপরেও যা করেছি ব্যক্তিগতভাবে আমি সেটিসফাইড। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় যতটুকু করেছি ব্যক্তিগতভাবে মন করি আমি সফল। বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার রায় নিয়ে কোন ধরনের সহিংসতার আশঙ্কা রয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, রায় দেবেন আদালত। আদালত কোন দলের পক্ষে-বিপক্ষে রায় দেন না। এত দিন প্রাপ্ত তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে রায় দেয়া হবে। সুতরাং রায় যেটাই হোক সবাইকে মেনে নেয়া উচিত। রায় না মানলে উচ্চ আদালতে যাবেন, এটার আইনী প্রক্রিয়া আছে। তাছাড়া বিএনপি দায়িত্বশীল একটা দল। আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতির অবনতি হয় এমন কোন কর্মসূচী তারা দেবে না বলে আমার বিশ্বাস। তারপরও পুলিশের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। যদি কেউ সহিংসতা করতে চায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। উল্লেখ্য, বাংলাদেশ পুলিশের নতুন মহাপরিদর্শক (আইজিপি) হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন বিশেষ শাখার (এসবি) অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী। বৃহস্পতিবার এ সংক্রান্ত্র প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। আগামী মঙ্গলবার আইজিপি এ কে এম শহীদুল হকের চাকরির মেয়াদ শেষ হচ্ছে। এর পরদিন থেকেই আইজিপির দায়িত্ব পাচ্ছেন জাভেদ পাটোয়ারী। পুলিশের এই কর্মকর্তা বর্তমান আইজিপি শহীদুল হকের মতোই বিসিএস ৮৪ ব্যাচের। সম্মিলিত মেধা তালিকায় তার অবস্থান চতুর্থ এবং পুলিশের এই ব্যাচে প্রথম। ২০২০ সালের এপ্রিল চাকরির মেয়াদ শেষ হবে জাবেদ পাটয়ারীর।
×