ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

রিফাত কান্তি সেন

ঘুরে আসুন দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত

প্রকাশিত: ০৭:০৩, ২৬ জানুয়ারি ২০১৮

ঘুরে আসুন দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত

যদি সাগর দেখতে চাও কক্সবাজার চলে যাও। বলতে গেলে পুরো বিশ্ব এক নামইে চেনে যে জেলাটির নাম তা হলো, ‘কক্সবাজার’। কক্সবাজার বাংলাদেশের ৬৪টি জেলার মধ্যে অন্যতম পর্যটনকেন্দ্রিক জেলা। সুন্দরের অভয়ারণ্য! পৃথিবীর সবচেয়ে বৃহৎ সমুদ্র সৈকত রয়েছে এই জেলার বুকজুরে। এই সৈকতের বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো পুরো তটটি বালুকাময়, যেখানে কোন কাদার অস্তিত্ব নেই বললেই চলে। জেলার নামকরণে রয়েছে নানা মতভেদ। জানা যায়, কক্সবাজারের প্রাচীন নাম ছিল ‘পালংকী’। এক সময় নাকি এটি প্যানোয়া নামেও পরিচিত ছিল। প্যানোয়া শব্দটির অর্থ দাঁড়ায় ‘হলুদ ফুল’। ইতিহাস বলে ১৭৯৯ সালে আরাকান উদ্বাস্তুদের পুনর্বাসনের জন্য ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি কর্তৃক ক্যাপ্টেন হিরাম কক্সকে দায়িত্ব প্রদান করা হয়। কক্স সাহেব এখানে একটি বাজার স্থাপন করেন। অনেকেই ধারণা করেন কক্স সাহেবের নামানুসারেই স্থানটির নামকরণ করা হয় কক্সবাজার। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যম-িত এ জেলার অর্ধেক জুড়ে রয়েছে পাহাড়-পর্বত এবং অর্ধেকটাতে সমুদ্র উপকূলীয় দ্বীপাঞ্চল। জেলার প্রধান দ্বীপগুলো হলো, মহেশখালী, কুতুবদিয়া, শাহপরীর দ্বীপ, মাতারবাড়ি, সোনাদিয়া এবং সেন্টমার্টিন দ্বীপ। পর্যটনের এক অপার সম্ভাবনাময় জেলা কক্সবাজার। প্রিয় পাঠক আজ আমরা কক্সবাজার জেলার পর্যটন কেন্দ্রগুলোর সঙ্গে আপনাদের পরিচয় করিয়ে দেব। কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত : কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতটি পৃথিবীর সবচেয়ে দীর্ঘ একটি সমুদ্র সৈকত। যার দৈর্ঘ্য প্রায় ১২০ কিমি। কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতটি একটি মায়াবি ও রূপময়ী সমুদ্র সৈকত। দর্শনার্থীদের কাছে প্রিয় পছন্দের জায়গাটি কক্সবাজার। প্রতিদিন অসংখ্য দর্শনার্থীর মিলনমেলা বসে এই দীর্ঘ সমুদ্র সৈকতের বুকে। ব্যতিক্রম এক সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার। গ্রীষ্ম, বর্ষা, শরত, হেমন্ত, শীত ও বসন্ত সব ঋতুতেই ভিন্ন ভিন্ন রূপ দেখা যায় দৃষ্টিনন্দন এ সমুদ্র সৈকতটির। গোধূলিবেলা সৈকতের আবহাওয়ার অবস্থা আর রাতের আবহাওয়ার মধ্যে বিস্তর ফারাক রয়েছে। আর এ জন্যই দেশী-বিদেশী পর্যটকদের কাছে স্থানটি এত আকর্ষণীয়। ইনানী সি বিচ : পর্যটন সেক্টর হিসেবে কক্সবাজারের গুরুত্ব অপরিসীম। ১২০ কিমি সমুদ্র সৈকতের মধ্যে সবচেয়ে সুন্দর, আকর্ষণীয় ও নয়নাভিরাম হচ্ছে ইনানী বিচ। প্রিয় পাঠক আপনি ইনানীকে এক কথায় বলতে পারেন প্রকৃতির স্বর্গরাজ্য। ইনানী সৈকত থেকে শুরু করে টেকনাফ পর্যন্ত রয়েছে প্রাকৃতিক প্রবাল এবং পাথর সমুদ্রের ভাঙ্গন থেকে সৈকতকে রক্ষা করেছে। আবার এসব পাথর ইনানী সৈকতকে দিয়েছে বাড়তি সৌন্দর্য। কক্সবাজার শহর থেকে ইনানী সি বিচের দূরত্ব প্রায় ৩৩ কিমি। ইনানী সমুদ্র সৈকতে যাওয়ার সময় উপভোগ করতে পারেন বনবনানি ঘেরা পাখির কলকাকলী ও সাগর বেষ্টিত সমুদ্রের গর্জন নিজ কানে শুনতে পারেন। এখানেই এখন ছবির শূটিং স্পট হিসেবে খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। তাই দেরি না করে আজই ঘুরে আসুন সেখান থেকে। হিমছড়ি : কক্সবাজারের ১৮ কিমি দক্ষিণে হিমছড়ি অবস্থিত। এখানকার প্রধান আকর্ষণ হলো ডঙ্গুর পাহাড় আর ঝর্ণা। কক্সবাজার থেকে হিমছড়ি যাওয়ার পথে সবুজঘেরা পাহাড় আর সমুদ্রের নীল জলরাশি মতো, মনোমুগ্ধকর দৃশ্য দেখে যে কারও চোখ জুড়িয়ে যাওয়ার কথা। পাঠক অবশ্যই যদি বর্ষার সময় সেখানে ঘুরতে যান তবে এক বিস্ময়কর ঝর্ণা দেখার অভিজ্ঞতা অর্জন করবেন। ঝর্ণা দেখে মনে হবে যেন একদম জীবন্ত, প্রাণবন্ত। হিমছড়ির পাহাড়ের চূড়ায় একটি রিসোর্ট রয়েছে যেখান থেকে সাগরের জলরাশি দেখে যে কারও হৃদয়ে স্পন্দন যোগায়। লাবনী পয়েন্ট : কক্সবাজার শহর থেকে নিকটে হওয়ায় লাবনী পয়েন্ট কক্সবাজারের প্রধান সমুদ্র সৈকত বলে অনেকেই বিবেচনা করে থাকে। প্রতিদিন দেশ-বিদেশের হাজারও পর্যটকের মিলনমেলা ঘটে স্থানটিতে। তাই সময় হলেই ঘুরে আসতে পারেন সেখান থেকে।
×