অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ নারী উদ্যোক্তাদের সহায়তা দিতে ওয়েন্ড নামে একটি সংগঠনের যাত্রা শুরু হয়েছে। উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে -সরকারী অনুদান নিয়ে চলা এই সংগঠন নারীদের জন্য ট্রেড লাইন্সেস প্রাপ্তি, ই-টিআইএন ও ভ্যাট রেজিস্ট্রেশন করে দেয়া, পণ্য উৎপাদনে নারীদের দক্ষ করে তুলতে বিভিন্ন কর্মসূচী গ্রহণ করেছে। এছাড়া স্থানীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে পণ্য বাজারজাতকরণে সহায়তা, টেকনোলজি বিষয়ে সাপোর্ট দেয়া, নেটওয়ার্কিং গড়ে তোলার কাজটিও করছে। এ সংগঠনের মাধ্যমে বর্তমান সরকারের নারীর ক্ষমতায়ন কার্যক্রমকে বেগবান করতেও কাজ করা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর মতিঝিলের নিজস্ব কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সংগঠনটির আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মপ্রকাশ ঘটে। সংবাদ সম্মেলনে ওয়েন্ডের অনুমোদন, উদ্দেশ্য ও পরিকল্পনা সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন সংগঠনটির প্রেসিডেন্ট ড. নাদিয়া বিনতে আমিন। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন থেকে নারী উদ্যোক্তাদের সহায়তায় কাজ করে এমন বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে তিনি জড়িত। সবাই নারী উদ্যোক্তাদের কল্যাণে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দেয়, চেষ্টাও করে। কিন্তু একটা সময় টিমওয়ার্ক গড়ে ওঠে না। তখন থেকে ভাবতাম নারীদের এসব চ্যালেঞ্জ কীভাবে মোকাবেলা করা যায়। সবাই মিলে নারী উদ্যোক্তাদের এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সরকারী অনুমোদন নিয়ে একটা সংগঠন করি তাহলে কেমন হয়? সেই ভাবনা থেকে গত ৫ বছর চেষ্টা করে ১৭ সেপ্টেম্বর সরকার ওয়েন্ড অনুমোদন দিয়েছে। এই সংগঠনের মূল লক্ষ্য নারী ব্যবসায়ীদের সার্বিক উন্নয়নে কাজ করা।
তিনি বলেন, নারী উদ্যোক্তা ব্যবসায়ীদের কল্যাণে কাজ করা ওয়েব, জয়িতা, তৃণমূল ট্রেড বডি হিসেবে লাইসেন্স পেয়েছে। চতুর্থ ট্রেড বডি হিসেবে ওয়েন্ড লাইসেন্স পেল। অনেক চেম্বার, ফেডারেশন আছে যারা নারীদের নিয়ে কাজ করে। তারা সরাসরি অথবা সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়, মহিলা অধিদফতর, এনজিও ব্যুরো থেকে অনুমোদন নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। সারাদেশে নারী উদ্যোক্তা সৃষ্টি, সুষ্ঠুভাবে তাদের ব্যবসা পরিচালনা, সম্প্রসারণে সার্বিক সহায়তা প্রদান, দেশের অর্থনীতিতে নারীদের অবদান রাখাসহ নারীর ক্ষমতায়নে কাজ করবে ওয়েন্ড। শুধু তাই নয়, ওয়েন্ড ইতোমধ্যে এফবিসিসিআইর সদস্যপদ পেয়েছে। সরকারের সব মহল থেকে এ সংগঠনকে সহায়তার আশ্বাস দেয়া হয়েছে।
ড. নাদিয়া বিনতে বলেন, এ সংগঠনের মাধ্যমে ঢাকার বাইরে অর্থাৎ সারাদেশে নারীদের নিয়ে কাজ করতে চাই। নারী উদ্যোক্তাদের সাপোর্ট ও প্রমোট করার উদ্দেশ্য নিয়ে এ সংগঠন করা। এ সংগঠনের মাধ্যমে নারীদের থিউরিটিক্যাল সাপোর্ট দেয়া হবে। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, নারী উন্নয়নে প্রাথমিকভাবে ৮ বিভাগে কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। ওয়েন্ডের ৮ নারী উদ্যোক্তা ৮টি বিভাগে ৮টি ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারের দায়িত্বে আছেন। তাদের কাছে তাদের আওতাধীন জেলা, উপজেলা, ইউনিয়নের নারী উদ্যোক্তারা তাদের সমস্যা ফোনে, লিখিত বা সরাসরি জানাতে পারবেন। এসব সমস্যা দায়িত্বরত উদ্যোক্তারা ওয়েন্ডের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্যদের জানাবেন। স্থানীয় সমস্যা হলে স্থানীয়ভাবে বা বড় কোন সমস্যা হলে তা কেন্দ্রীয়ভাবে সরকারের সহায়তা নিয়ে সমাধানের চেষ্টা করা হবে। ইতোমধ্যে এ সংগঠনের কেন্দ্রের কাজ শুরু করা হয়েছে। বাণিজ্যমেলায় নারী উদ্যোক্তা ব্যবসায়ীদের পণ্য নিয়ে এসএমই ফাউন্ডেশনের প্যাভিলিয়নে ওয়েন্ডের একটি স্টল দেয়া হয়েছে। সেখানে নারী উদ্যোক্তা ব্যবসায়ীদের পণ্য প্রদর্শন ও বিক্রি করা হচ্ছে। ওয়েন্ড থেকে সম্প্রতি রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন ও তাদের সহায়তা করা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে ওয়েন্ডের সহসভাপতি শামীমা শারমিন লাইজু, সাধারণ সম্পাদক জিসান আক্তার চৌধুরী, কোষাধ্যক্ষ আনোয়ারা সিদ্দিকী, উপ-কোষাধ্যক্ষ জর্জিনা খালেদ, নির্বাহী সদস্য আয়েশা সিদ্দিকা, নাসিমা হক ও মাহবুবা রব মাহবুব উপস্থিত ছিলেন।
