ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

সংসদে আলোচনা

খালেদা জিয়ার রাজনীতি করার অধিকার নেই

প্রকাশিত: ০৭:৪৬, ২৫ জানুয়ারি ২০১৮

খালেদা জিয়ার রাজনীতি করার অধিকার নেই

সংসদ রিপোর্টার ॥ বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার দেশে রাজনীতি করার কোন অধিকার নেই বলে মন্তব্য করেছেন ওয়ার্কার্স পার্টি থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া সংবিধান বিশ্বাস করেন না। তিনি সংবিধানকে ডাস্টবিনে ফেলে দেবেন বলেছেন। এ কথা বলে তিনি তার রাজনীতি তলানিতে নিয়ে ঠেকিয়েছেন। বুধবার জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণ সম্পর্কে আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন। খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের দুর্নীতির মামলাগুলো অধিকতর তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে আরও মামলা করার দাবি জানান তিনি। ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, আমেরিকা এখন বর্ণবাদী দেশ। জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী করা আমেরিকার বর্ণবাদী সিদ্ধান্ত। আমরা জেরুজালেমকে ফিলিস্তিনের রাজধানী দেখতে চাই। জাতীয় সংসদে এমন একটি প্রস্তাব পাস করার দাবি জানাচ্ছি। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ বাস্তবায়ন করতে হলে জামায়াত-বিএনপিকে প্রতিরোধ করতে হবে। আর স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি কখনও দেশের বিরোধী দল হতে পারে না। পিরোজপুর থেকে নির্বাচিত আওয়ামী লীগ দলীয় এমপি একেএমএ আউয়াল বলেন, জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে ক্ষমতায় এসে বঙ্গবন্ধু হত্যার আসামিদের চাকরি দিয়েছেন। তাদের লালন-পালন করেছেন। আওয়ামী লীগ ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন স্থগিতের ব্যবস্থা করেছে বলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যে অভিযোগ করেছেন তার বিরোধিতা করে তিনি বলেন, ফখরুল উল্টা বলেছেন। কারণ, মামলা করেছে বিএনপির লোক। ফখরুল কিভাবে বললেন, আওয়ামী লীগ শতকরা ৮ ভাগের বেশি ভোট পাবে না। তিনি কি বিএনপি মহাসচিবের পরিবর্তে এখন গণকদের মহাসচিব হয়েছেন যে, আগাম বলে দিচ্ছেন আওয়ামী লীগ ৮ ভাগের বেশি ভোট পাবে না। তিনি আরও বলেন, বিএনপি ষড়যন্ত্রকারী ও বিদেশে সম্পদ লুণ্ঠনকারী দল। তারেককে তারা নেতা মানে। কিন্তু তারেক সন্ত্রাসী ও নারী ধর্ষণকারী। সে কিভাবে একটি দলের নেতা হয়। মেজর জেনারেল (অব) রফিকুল ইসলাম বলেন, মহান লক্ষ্য সামনে রেখে আমরা দেশ স্বাধীন করেছিলাম। আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি। দেশ এখন উন্নয়নের মহাসড়কে। দেশের উন্নয়নকে আরও এগিয়ে নিতে হলে সকল দলের ঐক্যের কোন বিকল্প নেই। নওগাঁ-১ আসন থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য সাধন মজুমদার বলেন, খালেদা জিয়া দেশের নেত্রী নন, তিনি পাকিস্তানের নেত্রী। তিনি অতীতেও পাকিস্তানের পক্ষে ছিলেন এখনও আছেন। তিনি সব সময়ই পাকিস্তানের পক্ষের। তিনি আমাদের জাতীয় পতাকা রাজাকারদের হাতে তুলে দিয়েছিলেন। তিনি বিদেশে টাকা পাচার করেন। তার সঙ্গে আমাদের কোন সংলাপ হবে না। নির্বাচন হবে সংবিধান অনুসারেই। খালেদা জিয়া নির্বাচনে না এলে তার দল মুসলিম লীগে পরিণত হবে। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দুর্নীতিবাজ হিসেবে পরিচিত। আর শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সৎ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পরিচিত। তাই আগামী নির্বাচনে দেশের মানুষ আবার শেখ হাসিনাকেই ভোট দেবে। পাবনা থেকে নির্বাচিত আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য আজিজুল হক আরজু বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার পর আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন্য করার চেষ্টা করা হয়েছিল। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা করে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাকেও হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল। জামালপুর-২ আসন থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য ফরিদুল হক খান বলেন, জঙ্গীবাদ ও আগুনসন্ত্রাসে জড়িত বিএনপি একটি জনবিচ্ছিন্ন দল। তাই বিএনপিকে আর ভোট দেবে না দেশের মানুষ। জনগণ আবার আওয়ামী লীগকেই ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবে। হবিগঞ্জ-৪ আসন থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য মাহবুব আলী বলেন, খালেদা জিয়া ও তার ছেলে তারেক রহমান বিদেশে সম্পদ পাচার করে দেশকে তলাবিহীন ঝুড়িতে পরিণত করেছিলেন। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে দেশের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করেছেন। অনুমতি ছাড়া জাহাজ ভাঙ্গলে ২ বছর জেল ॥ সরকারের অনুমতি না নিয়ে জাহাজ ভাঙ্গা ইয়ার্ড স্থাপন করলে দুই বছর জেল ও সর্বোচ্চ ৩০ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রেখে আইন করার জন্য একটি বিল জাতীয় সংসদে পাস হয়েছে। বুধবার ‘বাংলাদেশ জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ বিল-২০১৮’ সংসদে পাসের জন্য উত্থাপন করেন শিল্পমন্ত্রী আমির হেসেন আমু। পরে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়। এর আগে বিলের ওপর দেয়া জনমত যাচাই, বাছাই কমিটিতে পাঠানো এবং সংশোধনী প্রস্তাবগুলো নিষ্পত্তি করা হয়। বিলে জাহাজ ভাঙ্গার জন্য আলাদা ‘জোন’ ঘোষণা করার বিধান রাখা হয়েছে। বিলে অনাপত্তি সনদ ছাড়া পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণের জন্য জাহাজ আমদানি বা স্থানীয়ভাবে সংগ্রহ করলে সর্বোচ্চ দুই বছরের জেল ও সর্বনিম্ন ১০ লাখ থেকে সর্বোচ্চ ৩০ লাখ টাকা অর্থদ-ের বিধান রাখা হয়েছে। ছাড়পত্র ছাড়া জাহাজ সৈকতে আনলে বা পুনঃপ্রক্রিয়াজাত করলেও একই বিধান রাখা হয়েছে। বিলে বলা হয়েছে, সরকারের অনুমতি নিয়ে নির্দিষ্ট জোনে শিপইয়ার্ড স্থাপন করতে হবে। এই ইয়ার্ডের মধ্যেই জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াজাত করতে হবে। বিলে জাল সনদ দিয়ে কোন সুবিধা নিলে কমপক্ষে ৫ লাখ ও সর্বোচ্চ ২০ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। বর্তমানে চট্টগ্রামের সীতাকু-ে জাহাজ ভাঙ্গার কারখানাগুলো রয়েছে। সেখানে অনিরাপদ পরিবেশে জাহাজ ভাঙ্গার পাশাপাশি অনিরাপদ জাহাজ এনে ভাঙ্গার অভিযোগও রয়েছে, যা নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে আন্তর্জাতিক নানা সংগঠনের। ১০ জুলাই বিলটি সংসদে তোলার পর পরীক্ষা নিরীক্ষা করে সংসদে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য শিল্প মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়।
×