ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

কলাপাড়া হাসপাতালে চিকিৎসক সঙ্কট ॥ সেবা ব্যাহত

প্রকাশিত: ০৬:২৭, ২৫ জানুয়ারি ২০১৮

কলাপাড়া হাসপাতালে চিকিৎসক সঙ্কট ॥ সেবা ব্যাহত

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া, ২৪ জানুয়ারি ॥ কুয়াকাটা হাসপাতালের চিকিৎসক আফরোজা আকবর ২০১১ সালের ৩ জানুয়ারি থেকে নিরুদ্দেশ। কোন খেঁজা মেলাতে পারেনি স্বাস্থ্য বিভাগের প্রশাসন। এখন তাই হিসাবের খাতায় তাকে দেখাতে চায় না কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। কুয়াকাটা হাসপাতলে কর্মরত ছিলেন এই চিকিৎসক। মেডিক্যাল অফিসার ডাঃ শংকর কুমার পাল ঢাকায় টিবি হাসপাতালে সংযুক্তিতে রয়েছেন বহু আগে থেকে। একইভাবে নীলগঞ্জ ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের চিকিৎসক ঢাকায় প্রেষণে রয়েছেন সহকারী সার্জন ডাঃ এইচ এম মাহবুব আলম। চাকামইয়া ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের সহকারী সার্জন ডাঃ মোঃ কামরুজ্জামান রয়েছেন পটুয়াখালীতে প্রেষণে। এছাড়া প্রশিক্ষণে রয়েছে আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডাঃ জুনাইদ হোসেন লেনিন, ইনডোর মেডিক্যাল অফিসার ডাঃ মোঃ রেফায়েত হোসাইন, সহকারী ডেন্টাল সার্জন ডাঃ মোঃ আরিফুল হক। একইভাবে মৃজাগঞ্জে প্রেষণে রয়েছেন কম্পাউন্ডার মরিয়ম বেগম, বরগুণায় রয়েছেন মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট (ডেন্টাল) সুকুমার মালো, মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট ( রেডিও) শফিকুল ইসলাম চার বছর মেয়াদী প্রশিক্ষণে রয়েছে। এছাড়া জুনিয়র কনসালটেন্ট (সার্জারি), জুনিয়র কনসালটেন্ট (মেডিসিন), জুনিয়র কনসালটেন্ট ( গাইনি এন্ড অবস), জুনিয়র কনসালটেন্ট (চক্ষু), জুনিয়ার কনসালটেন্ট (নাক, কান, গলা), জুনিয়র কনসালটেন্ট (কার্ডিওলজি), জুনিয়র কনসালটেন্ট (অর্থোঃ), জুনিয়র কনসালটেন্ট (শিশু), জুনিয়র কনসালটেন্ট (এ্যানেস), জুনিয়র কনসালটেন্ট (চর্মযৌন), মেডিক্যাল অফিসার (ইএমও)সহ কলপাড়া-কুয়াকাটার চিকিৎসকদের ৩৬টি পদের ২৩টি পদ খালি রয়েছে। যারা রয়েছেন তার মধ্যে প্রেষণে ও প্রশিক্ষণে রয়েছেন ছয় জন। মাত্র সাত চিকিৎসক দিয়ে চলছে কলাপাড়া উপজেলা সদরের ৫১ শয্যার হাসপাতাল, কুয়াকাটার ২০ শয্যার হাসপাতাল ও মহিপুর উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র। চিকিৎসক ছাড়াও দ্বিতীয় শ্রেণির ১০টি এবং তৃতীয় শ্রেণির ৩৪টি পদ শূন্য রয়েছে। শুন্য রয়েছে চতুর্থ শ্রেণীর ১৩ টি পদ। মোট ৮০টি পদ শূন্য থাকায় এখন কলাপাড়ার চিকিৎসা সেবা চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। গড়ে প্রতিদিন কলাপাড়ায় ইনডোরে ৫০-৮০ রোগী এবং আউটডোরে দুই শ-আড়াইশ’ জন রোগী চিকিৎসা সেবার জন্য আসেন। কুয়াকাটায় ইনডোরে রোগীর চাপ নেই। তবে আউটডোরে দৈনিক ৪০-৫০ রোগী সেবা নিতে আসেন। চিকিৎসক সঙ্কটে এখন সাগরপাড়ের মানুষ চরম দুরবস্থায় পড়েছেন। বিশেষ করে ২০১২ সাল থেকে এখানে প্রসূতি মায়েদের চিকিৎসা সেবা বন্ধ রয়েছে। গাইনী এবং এনেসথিয়া বিভাগের চিকিসকের সঙ্কটে বেহালদশা প্রসূতিদের। মাতৃস্বাস্থ্য সেবার কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে দীর্ঘদিন। সিজারিয়ান অপারেশন বন্ধ রয়েছে। এমনকি স্বাভাবিক ডেলিভারিও চরম ঝুঁকিতে রয়েছে। এত সব সঙ্কটের মধ্যেও যে কয়জন চিকিৎসক রয়েছেন তাদের মধ্যে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ চিন্ময় হাওলাদার অধিকাংশ সময় প্রশাসনিক কাজে ব্যস্ত থাকেন। এরপরও চিকিৎসা সেবা চলছে যেন জোড়াতালি দিয়ে। রোগীরা জানান, চিকিৎসক পদায়ন জরুরী। এছাড়া যাদের প্রেষণে রাখা হয়েছে তাদেরও কলাপাড়ায় পদায়ন করা হোক। বর্তমানে চিকিৎসা সেবার মান নিশ্চিত করতে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ করেছেন এলাকাবাসী।
×