ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

চোখ থাকতেও তারা অন্ধ, কান থাকতেও বধির। তাই এত উন্নয়ন ও অগ্রগতি চোখে পড়ে না;###;জনগণের কাছে যায় না, কারণ ভোটের রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না;###;অসাংবিধানিক পন্থায় ক্ষমতায় যাওয়ার আশায় থাকে

ওরা বাঁকা পথ খোঁজে ॥ সুশীল সমাজের কঠোর সমালোচনায় প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৫:৪৬, ২৫ জানুয়ারি ২০১৮

ওরা বাঁকা পথ খোঁজে ॥ সুশীল সমাজের কঠোর সমালোচনায় প্রধানমন্ত্রী

সংসদ রিপোর্টার ॥ সুশীলসমাজের কঠোর সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশে কিছু মানুষ আছে, যারা চোখ থাকতেও অন্ধ, কান থাকতেও বধির। তাই দেশের এত উন্নয়ন ও অগ্রগতি তাদের চোখে পড়ে না। তারা জনগণের কাছে যায় না, কারণ তারা ভোটের রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না। তারা ক্ষমতায় যেতে বাঁকা পথ খোঁজে। তারা সব সময় অসাংবিধানিক পথে ক্ষমতায় যাওয়ার আশায় থাকে। তাদের লক্ষ্যই হচ্ছে অবৈধ ক্ষমতা দখলের দিকে। বুধবার জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে মহিলা আসন-৩০ এর সাংসদ ফজিলাতুন নেসা বাপ্পির এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠকে এদিন প্রধানমন্ত্রী সরকারী ও বিরোধীদলের একাধিক সংসদ সদস্যের লিখিত ও সম্পূরক প্রশ্নের জবাব দেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের বর্তমান উন্নয়ন ও অগ্রগতির ধারা এগিয়ে নিতে সবাইকে নিয়ে চলার আকাক্সক্ষা ব্যক্ত করে বলেছেন, একা নয়, সবাইকে নিয়েই চলতে চান তিনি। সবাইকে নিয়েই চলছেন। কারণ এদেশটা সবার। আজ যে উন্নয়ন ও অগ্রগতি- সেটাকে তৃণমূল পর্যায় সুষমভাবে ছড়িয়ে দেয়ার মাধ্যমে এর সুফল সবার কাছে পৌঁছে দিতে চান তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সুশীলের ব্যাখ্যা কী? এর অর্থটা কী? কোন তত্ত্বে তারা সুশীল, সেটাই প্রশ্ন- যখন তারা চোখ থাকতেও দেখেন না, কান থাকতেও শোনেন না। এদের আসলে বলার কিছু নেই, বোঝাবারও কিছু নেই। আমার কেবল একটাই চিন্তা, দেশের মানুষ ভাল আছে কী-না, শান্তিতে আছে কী-না? মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণের মাধ্যমে তাদের জীবনকে উন্নত হিসেবে গড়ে তোলাই লক্ষ্য। সেই লক্ষ্য নিয়েই এগিয়ে চলেছেন তারা। জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ফখরুল ইমামের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সবাইকে নিয়েই চলতে চান তিনি। তবে হ্যাঁ, একজনকে কিন্তু হাল ধরতে হয়। দায়িত্ব নিয়ে সঠিকভাবে চালাতে হয়। যেমন গাড়িতে চালকের আসনে একজনই বসেন। যিনি সঠিকভাবে গাড়ি চালিয়ে সঠিক গন্তব্যে নিয়ে যান। তিনি সঠিকভাবে না চালালে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। আর কেউ এককভাবে চলতেও পারে না। যদিও কবি বলেছেন ‘যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে, তবে একলা চলোরে’, কিন্তু তিনি একলা চলতে চান না। এ প্রসঙ্গে সংসদে প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির এমপিদের গঠনমূলক ভূমিকার প্রশংসা করে সংসদ নেতা বলেন, আজ যে উন্নয়ন, বিশ্বে দেশ সম্মানের আসনে অধিষ্ঠিত- তা সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায়ই হয়েছে। বিরোধী দলকে ধন্যবাদ জানাই, তারা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় গঠনমূলক আলোচনা-সমালোচনার মাধ্যমে এই উন্নয়ন ও অগ্রগতিকে এগিয়ে নিতে সহযোগিতা করছে। অন্তত বিএনপি থাকতে সংসদে যে খিস্তিখেউর হতো, অশ্লীল গালিগালাজ হতো- সেগুলো এখন আর নেই। দেশবাসীকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, দেশবাসী সবার সম্মিলিত সহযোগিতায় এই উন্নয়নের সুফল সবার কাছে পৌঁছে দেয়া সম্ভব হচ্ছে। শেখ হাসিনা বলেন, তাদের একটাই লক্ষ্য, বাংলাদেশকে তারা উন্নত ও সমৃদ্ধ হিসেবে গড়ে তুলতে চান। ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চান। জাতির পিতা যে সংবিধান দিয়ে গেছেন, সেখানে মানুষের সব মৌলিক অধিকার পূরণের কথা বলা হয়েছে। সেই লক্ষ্য নিয়েই তার সরকার এগিয়ে চলেছে। সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য ফজিলাতুন নেসা বাপ্পির সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের গতিধারায় দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। সারাবিশ্ব এর স্বীকৃতি দিচ্ছে। বিশ্বে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের রোলমডেল। কিন্তু এটাই বাংলাদেশের মানুষের দুর্ভাগ্য যে, এদেশের কিছু মানুষ এই উন্নয়ন চোখে দেখে না। একটা কথায় আছে, ‘হায় রে কপাল মন্দ, চোখ থাকিতে অন্ধ।’ যারা চোখ থাকতে অন্ধ, কান থাকতে বধির- তারা হাজার উন্নয়ন করলেও, হাজার বার বললেও দেখবে না, শুনবে না। এই না দেখাটাও তাদের অসুস্থতা। তাই তাদের বিষয়ে কোন কথা বলেও লাভ নেই। সুশীলসমাজ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, একটা শ্রেণী আছে, যাদের ক্ষমতায় যাওয়ার ও একটি পতাকা পাওয়ার আকাক্সক্ষা আছে। কিন্তু তারা জনগণের কাছে যেতে পারেন না। ভোটের রাজনীতিতে তারা অচল। ভোটের রাজনীতিতে দাঁড়াতে হলে জনগণের কাছে যেতে হয়, জনগণের কাছে ভোট চাইতে হয়। যদি গণতান্ত্রিক ধারা অনুসরণ করতে চাই। কিন্তু তারা জনগণের কাছে না গিয়ে, ক্ষমতায় যাওয়ার একটা বাঁকা পথ খোঁজেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, পঁচাত্তরের পর এদেশে হত্যা-ক্যু ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতি শুরু হয়। সেই ষড়যন্ত্রের পথ ধরে অনেকেই অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে। অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারীরা নিজেদের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে কিছু লোক খুঁজে নেয়। এই লোকগুলো অবৈধভাবে ক্ষমতায় যাওয়ার পথে ব্যবহৃত হয়। যেমন রাস্তার পাশে ডাস্টবিন থাকে- যেখানে লেখা থাকে ‘ইউজ মি’। তারাও কিন্তু বসে থাকে ‘আমাকে ব্যবহার করুন’- এমন মনোভাব নিয়ে। তারা বসে থাকেন, অবৈধভাবে ও অসাংবিধানিকভাবে কেউ যদি ক্ষমতায় যেতে পারেন- তাহলে তারাও একটি পতাকা পাবেন। ক্ষমতা পাবেন। তারা অশুভ শক্তির কাছে বিক্রি হতে সব সময় প্রস্তুত থাকে। এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী ‘সার্কাসের গাধার গল্প’ তুলে ধরে আরও বলেন, ওই গাধাটি অপেক্ষায় বসে ছিল কখন সার্কাসের মেয়েটি দড়ি ছিঁড়ে পড়ে যাবে, আর তার (গাধা) সঙ্গে মেয়েটির বিয়ে হবে। এভাবে বসে থাকতে থাকতে অথর্ব হয়ে পড়লেও গাধাটি কিন্তু সুন্দরী মেয়েটির সঙ্গে বিয়ের আশা ছাড়েনি। তিনি (প্রধানমন্ত্রী) কাউকে গাধা বলছেন না। তারা (সুশীলসমাজ) দেশের জ্ঞানী-গুণী, উচ্চশিক্ষিত মানুষ। অনেক খ্যাতিমান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লেখাপড়া করে এসেছেন। অনেকে বড় বড় গবেষণার কাজও করেন। তবে যখন তাদের এমন আচরণ দেখা যায়, আর তারা যখন ওই রকম আশা নিয়ে বসে থাকেন- তখন কিন্তু গাধার কথাটাই মনে পড়ে যায়। আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী দেশের বিশাল জনগোষ্ঠীকে জনশক্তিতে রূপান্তরিত করতে কারিগরি শিক্ষা ও কম্পিউটার শিক্ষার বিস্তার, শিল্পায়ন ও জনশক্তি রফতানি এবং ন্যাশনাল সার্ভিসের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টিসহ তার সরকার গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, দেশে বিশাল জনসংখ্যা থাকার বিষয়টি অস্বীকার করা যায় না। তবে এই জনসংখ্যাকে জনশক্তিতে রূপান্তরিত করতে চান তারা। এই জনশক্তিকে কাজে লাগিয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই তাদের লক্ষ্য। সেভাবেই সবাই এর সুফল পাচ্ছে। ময়মনসিংহ-৮ আসনের সাংসদ ফখরুল ইমামের এক তারকা চিহ্নিত প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদকে জানান, বর্তমানে দেশে মাথাপিছু আয় বেড়েছে বিএনপি-জামায়াত সরকারের আমলের চেয়ে তিন গুণ। সরকারের দক্ষ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ফলে জনগণের মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় বেড়ে হয়েছে ১ হাজার ৬১০ মার্কিন ডলার। যা গত বছর ছিল ১ হাজার ৪৬৫ ডলার। এক বছরে মাথাপিছু আয় বেড়েছে ১৪৫ ডলার। উল্লেখ্য, ২০০৬ সালে মাথাপিছু আয় ছিল মাত্র ৫৪৩ ডলার। অর্থাৎ এ সময়ে মাথাপিছু আয় বেড়েছে প্রায় তিন গুণ। প্রধানমন্ত্রী জানান, সরকারের দক্ষ অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় ২০০৯-১৬ সময়কালে গড়ে ৬ দশমিক ১৭ শতাংশ হারে জিডিপির প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। বর্তমানে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ৭ দশমিক ২৮ শতাংশ। তিনি জানান, জাতীয় সঞ্চয় বৃদ্ধি পেয়ে ২০১৭ সালে দাঁড়িয়েছে জিডিপির ২৯ দশমিক ৬৪ শতাংশে। মোট বিনিযোগ বৃদ্ধি পেয়ে ২০১৭ সালে দাঁড়িয়েছে জিডিপির ৩০ দশমিক ৫১ শতাংশ, যা ২০০৬ সালে ছিল ২৬ দশমিক ১ শতাংশ। প্রধানমন্ত্রী জানান, ২০১৭ সালে রাজস্ব অর্জিত হয়েছে জিডিপির ১১ দশমিক ১ শতাংশ, যা ২০০৬ সালে ছিল ৯ দশমিক ১ শতাংশ। একই সময়ে কর রাজস্ব জিডিপির ৭ দশমিক ৪ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ৯ দশমিক ৭ শতাংশ। তিনি জানান, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে বাজেটের আকার বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ২৬৬ কোটি টাকায়, যা ২০০৫-০৬ অর্থবছরে ছিল ৬১ হাজার ৫৮ কোটি টাকা। প্রধানমন্ত্রী আরও জানান, ২০১৭ সালে আমদানি ও রফতানি বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়ায় যথাক্রমে ৪৭ দশমিক ১ ও ৩৪ দশমিক ৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। যা ২০০৬ সালে ছিল যথাক্রমে ১৪ দশমিক ৭ ও ১০ দশমিক ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়েছে ৯ দশমিক ৬ গুণের বেশি। ২০১৭ এর শেষে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধি পেয়ে ৩৩ দশমিক ৪১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে, যা ২০০৬ সালে ছিল মাত্র ৩ দশমিক ৪৮ মার্কিন ডলার। সরকারের দক্ষ আর্থিক ব্যবস্থাপনার কারণে ২০১৭ সালে মুদ্রাস্ফীতি নেমে দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ৪৪ শতাংশ। প্রধানমন্ত্রী জানান, ২০১৭ সালের মধ্যে স্থাপিত গ্রিড ভিত্তিক বিদ্যুত উৎপাদনের ক্যাপাসিটি ১৬ হাজার ৪৬ মেগাওয়াটে উন্নীত হয়েছে এবং মাথাপিছু বিদ্যুত উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ২২০ কিলোওয়াট থেকে ৪৩৩ কিলোওয়াটে। বিদ্যুত সুবিধাভোগী জনসংখ্যা ২০১০ সালে ছিল ৪৮ শতাংশ। ২০১৭ সালে তা ৯০ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। তিনি জানান, দেশে কৃষি উৎপাদন উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। স্বাধীনতার পর থেকে এখন পর্যন্ত ধানের উৎপাদন বেড়েছে ৩ গুণ। এ ছাড়া গমের উৎপাদন দ্বিগুণ, সবিজর উৎপাদন ৫ গুণ ও ভুট্টার উৎপাদন বেড়েছে ১০ গুণ। মহিলা আসন-৩০ এর সাংসদ ফজিলাতুন নেছা বাপ্পির এক লিখিত প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী জানান, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ, জাতিসংঘ মহাসচিব এন্তোনিও গুতেরেস এবং বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিমের যৌথ আমন্ত্রণে আমি ২০১৭ সালের ১১ থেকে ১৩ ডিসেম্বর ফ্রান্স সফরকালে প্যারিসে অনুষ্ঠিত ওয়ান প্লানেট সামিট- এ অংশগ্রহণ করি। এ সময় ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকেও মিলিত হই। অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে আমাদের মধ্যে জলবায়ু পরিবর্তন, রোহিঙ্গা সঙ্কট, সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদ দমন এবং দ্বিপক্ষীয় কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্কের ভবিষ্যত রূপরেখা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়। এ সময় বাংলাদেশ ও ফ্রান্সের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির বিষয়ে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করি। এই সফরের ফলে বন্ধুপ্রতিম ফ্রান্সের সঙ্গে আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হয়েছে এবং দুই দেশের সম্পর্কের ভিত্তি অধিকতর মজবুত ও গভীরতর হয়েছে। মৌলভীবাজার-২ আসনের সাংসদ আব্দুল মতিনের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের পশ্চাৎপদ অঞ্চলের শিক্ষা ব্যবস্থার আধুনিকায়নে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করা হচ্ছে। হাওর-বন্যাদুর্গত এলাকাসহ পার্বত্য অঞ্চলের শিক্ষা ব্যবস্থার আধুনিকায়নে আওয়ামী লীগ সরকারের বিগত মেয়াদের ২০০৯ সাল থেকে বর্তমান মেয়াদের এ পর্যন্ত গৃহীত কার্যক্রমসমূহ বাস্তবায়িত করা হচ্ছে। খুলনা-৬ আসনের সাংসদ শেখ মোঃ নুরুল হকের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের অন্যতম অঙ্গীকার এই যে, কেউ গৃহহীন থাকবে না। আর এ লক্ষ্যে আমরা আশ্রায়ণ প্রকল্প, গুচ্ছগ্রাম, আদর্শগ্রাম, খাস জমি বিতরণ, গৃহায়ণ তহবিল ইত্যাদির মাধ্যমে বিভিন্ন কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। ভোলা-২ আসনের সাংসদ আলী আজমের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ নদী মাতৃক দেশ। দেশের নদী ভাঙ্গন অন্যতম সমস্যা। দেশের বড় নদীগুলো ক্রমাগত তার চ্যানেল পরিবর্তন করে। ফলে নদী তীরের অবস্থান পরিবর্তন হয় এবং নদী ভাঙ্গন দেখা দেয়। নদী ভাঙ্গন এলাকায় মানুষের দুর্দশা দূর করার লক্ষ্যে আমরা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। মহিলা আসন-৪২ এর সাংসদ নুরজাহান বেগমের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের যুবসমাজকে কর্মক্ষম করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে বর্তমান সরকার আধুনিক শিক্ষার পাশাপাশি টেকনিকেল শিক্ষা প্রদানে অনেক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। কুমিল্লা-১ আসনের সাংসদ সুবিদ আলী ভূইয়ার এক লিখিত প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানান, দেশের প্রত্যেকটি মানুষের অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসা সেবা প্রদানের লক্ষ্যে সরকার নানাবিধ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। চট্টগ্রাম-৩ আসনের সাংসদ মাহফুজুর রহমানের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার দেশের অসহায় শিশু ও মহিলাদের কল্যাণে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। সিলেট-৫ আসনের সাংসদ সেলিম উদ্দিনের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গ্রামীণ মানুষের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বাংলাদেশ ব্যাংকের তত্ত্বাবধানে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহ বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। বিশেষ করে কৃষি, কুটির শিল্প, এসএমই, ও পরিবেশবান্ধব খাতে অর্থায়ন বাড়িয়েছে। গ্রামীণ অর্থনৈতিক উন্নয়নে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহের উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ রয়েছে। মহিলা আসন-৪৭ এর সাংসদ রওশন আরা মান্নানের এক লিখিত প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম হাইওয়ের যান চলাচল নির্বিঘœ করতে ফেনীতে একটি ৬ লেইন বিশিষ্ট ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হয়েছে। ভবিষ্যতে ৬ লেইন বিশিষ্ট আরও ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হবে। চট্টগ্রাম-১১ আসনের সাংসদ এম আবদুল লতিফের এক লিখিত প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী জানান, বর্তমান সরকার সারাদেশের সামগ্রিক উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। চট্টগ্রাম এর ব্যতিক্রম নয়।
×