ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

মনসুর আলীর জন্মবার্ষিকীর আলোচনায় আমু

শেখ হাসিনার সরকার না থাকলে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড হবে না

প্রকাশিত: ০৫:৫৭, ২৪ জানুয়ারি ২০১৮

শেখ হাসিনার সরকার না থাকলে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড হবে না

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সহায়ক সরকার কি মামা বাড়ির আবদার? প্রশ্ন রেখে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টাম-লীর সদস্য ও শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু বলেছেন, পৃথিবীর সব দেশ যেভাবে পরিচালিত হয়, যেভাবে নির্বাচন হয়, বাংলাদেশও সেইভাবে পরিচালিত হয়। দেশ যদি সংবিধান অনুযায়ী চলে, নির্বাচন হবে সেই সংবিধান অনুযায়ী। অন্য কোনভাবে কাউকে ক্ষমতায় বসিয়ে দেয়ার সুযোগ নেই বলে তিনি উল্লেখ করেন। মঙ্গলবার জাতীয় নেতা শহীদ এম মনসুর আলীর ১০১তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। রাজধানীর ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিয়ার্সের মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি মিলনায়তনে শহীদ এম মনসুর আলী স্মৃতি পরিষদ এই আলোচনা সভার আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে বক্তৃতায় আমির হোসেন আমু বিএনপিকে উদ্দেশে করে বলেন, আমরা চাই সুষ্ঠু নির্বাচনে আপনারা অংশ নিয়ে প্রমাণ করুন নির্বাচন সুষ্ঠু হয় কিনা। সংবিধান অনুযায়ী আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু হবে। তিনি বলেন, নির্বাচন নিয়ে আজ দেশে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। অপশক্তি তৎপর রয়েছে। তাদের মোকাবেলায় তৈরি থাকতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ যে পর্যায়ে উন্নীত হয়েছে বিশ্বের দরবার থেকেই তা উচ্চারিত হচ্ছে। বিশ্বের অন্যতম রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে অভিহিত হচ্ছে শেখ হাসিনা। কিন্তু শত্রুরা এই অর্জনকে ভালভাবে নিচ্ছে না। তাদের প্রেম পাকিস্তানের সঙ্গে। তাই তারা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। মুক্তিযুদ্ধে বিপক্ষ শক্তি প্রতিবিপ্লবের মাধ্যমে দেশকে পাকিস্তান বানানোর জন্য বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছিল। তারা ব্যর্থ হয়েছে। এখনও তারা শেখ হাসিনাকে প্রাণনাশ করার চেষ্টায় লিপ্ত। শেখ হাসিনার সরকার না থাকলে দেশের উন্নয়ন কর্মকা- বাস্তবায়িত হবে না। দেশ আবার পিছিয়ে যাবে। পদ্মা সেতুও হবে না। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে দেশকে ৪০ বছর পিছিয়ে দেয়া হয়েছে। তাই জাতির স্বার্থে শেখ হাসিনাকে আবারও নির্বাচিত করতে হবে। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে শহীদ এম মনসুর আলীর সম্পর্কের কথা বলতে গিয়ে তিনি উল্লেখ করেন বঙ্গবন্ধু এম মনসুর আলীকে সবচেয়ে বেশি পছন্দ করতেন। তাই এক সঙ্গে অনেকগুলো মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব তাকে দিয়েছিলেন। সব রাষ্ট্রীয় কাজে তাঁকে অগ্রাধিকার দিতেন। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে তার সম্পর্ক ছিল অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। মনসুর আলীও নেতা প্রতি আন্তরিকতা দেখিয়েছেন। তিনি বঙ্গবন্ধুর কোন কাজকে কখনও সমালোচনা না করে বরং সব কাজে সমর্থন যোগাতেন। এ কারণে মোস্তাকের কাছ থেকে মন্ত্রী হওয়ার আহ্বান ফিরিয়ে দিয়েছেন। নিজের জীবনকে বিসর্জন দেয়া শ্রেয় মনে করেছেন। তবুও মোস্তাকের কাছে মাথাও নিচু করেননি। অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টাম-লীর সদস্য এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, দেশে নির্বাচন নিয়ে নতুন করে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। সামনের ৯ মাস কোন নেতাকর্মীদের দ্বিধাদ্বন্দ্বে থাকা যাবে না। যারা দ্বিধাদ্বন্দ্বের মধ্যে থাকবে তারা আওয়ামী লীগে থাকবে না। শত্রু আমাদের চিহ্নিত। প্রশ্ন রেখে বলেন, নির্বাচন নিয়ে সংলাপ বিশ্বের কোথায় হয়? নির্বাচন হবে সংবিধান অনুযায়ী। সংলাপ শুরু কথা কেন বলা হচ্ছে? দেশে কোন সংলাপ সফল হয়েছে? অতীতে কোন সংলাপ সফল হয় নাই। এত কেন সংলাপের কথা বলা হচ্ছে? এর মধ্যে ষড়যন্ত্র রয়েছে। খুনীদের সঙ্গে কোন সংলাপ হবে না। সংলাপের নামে দেশে কোন নাটকও হবে না। নির্বাচন হবে শেখ হাসিনার অধীনে। তাই সংলাপ করেও কোন লাভ হবে না উল্লেখ করেন। বলেন, আজকে আবার অগ্নিপরীক্ষা সামনে এসে গেছে। শেখ হাসিনা মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। ২১ বছর দেশে খুনীদের কোন বিচার হয়নি। এমনকি অতীতের সরকার খুনীদের আশ্রয় প্রশ্রয় দিয়েছে। আইনের শাসন তখন কোথায় ছিল। আজ আবার আইনের শাসনের কথা বলা হচ্ছে। শেখ হাসিনাই আইনের শাসনের মাধ্যমে খুনীদের বিচার করেছেন। কোন প্রতিহিংসার আশ্রয় নেন নাই। ঘাতকের দল যেন আর ক্ষমতায় আসতে না পারে। ঘাতকদের চেহারা দেখা যায় খালেদা জিয়ার মধ্যে উল্লেখ করেন। নিজের পিতা শহীদ এম মনসুর আলীর প্রসঙ্গ উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এমন পিতার সন্তান হতে পেরে গর্বিত। বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে জীবন দিয়ে গেছেন। কিন্তু বেইমানি করেন নাই। বেইমান খন্দকার মোস্তাকের কাছেও মাথানত করেন নাই। ’৭১ এ নেতৃত্ব দিয়ে দেশকে স্বাধীন করেছেন। এত কম সময়ে বিশ্বের কোথাও স্বাধীনতা অর্জন হয়নি। জাতীয় চার নেতার সাহস ছিল মৃত্যুঞ্জয়ী। এক কাপড়ে দেশ স্বাধীন করেছেন। এক কাপড়েই দেশকে গড়েছেন। ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস। বঙ্গবন্ধু চলে গেছে। তার তিন মাস পরে তারাও চলে গেলেন। জাতীয় পার্টি জেপির চেয়ারম্যান ও পানিসম্পদমন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু বলেন, বঙ্গবন্ধু মতো তার কন্যাও দেশের অগ্রগতিতে ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন। ১৫ বছর ক্ষমতায় থাকাকালে দেশকে যে পর্যায়ে নিয়ে গেছেন এখন বিদেশীরাও তা স্বীকার করতে বাধ্য হচ্ছে। দেশ আজ কেউ পেছনে ঠেলে দিতে পারবে না। নতুন প্রজন্ম আগের চেয়ে অনেক শক্তিশালী এবং মেধাবী। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর মতো মানুষও দেশে আর আসবে না। মনসুর আলীর মতো নেতা প্রতি বিশ্বস্ত এমন নেতাও আর পাওয়া যাবে না উল্লেখ করেন। বলেন মনসুর আলী পারিবারিকভাবে আমাদের ঘনিষ্ঠ ছিলেন। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে আরও বক্তৃতা করেন, গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, মুজিবনগর সরকারের গার্ড অব অনার প্রদানকারী মাহবুব উদ্দিন আহমেদ বীরবিক্রম, সাবেক এমপি স্বাস্থ্যমন্ত্রী ছেলে তানভীর শাকিল জয়, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি শফিকুর রহমান, এ্যাডভোকেট মুহাম্মাদ নরুল ইসলাম ঠান্ডু। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন শহীদ এম মনসুর আলী স্মৃতি সংসদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মির্জা সাখাওয়াত হোসেন।
×