ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

আধুনিক ক্লিন সিটি গড়তে ডিজিটাল বিজ্ঞাপন ফলক স্থাপন করা হচ্ছে

প্রকাশিত: ০৫:৪৭, ২৪ জানুয়ারি ২০১৮

আধুনিক ক্লিন সিটি গড়তে ডিজিটাল বিজ্ঞাপন ফলক স্থাপন করা হচ্ছে

মশিউর রহমান খান ॥ রাজধানীর সৌন্দর্য বর্ধন ও আধুনিক ক্লিন সিটি গড়তে যত্রতত্র নানা ধরনের চটকদার বিজ্ঞাপন প্রচার চিরতরে বন্ধ করে দিচ্ছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি)। দেয়ালে অঙ্কন, রাস্তা, স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল কিংবা বাড়ির ছাদে ব্যানার, ফেস্টুন, পোস্টার সাটানো বা বিলবোর্ডের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন কোম্পানির ব্যবসায়িক ভিত্তিতে নানা পণ্যের প্রচারের জন্য পুরনো পদ্ধতি আর ধরে রাখতে চাইছে না সংস্থাটি। এ লক্ষ্য বাস্তবায়নে উন্নত বিশ্বের ন্যায় আধুনিক পদ্ধতির কয়েক হাজার ‘ডিজিটাল বিজ্ঞাপনফলক’ স্থাপন করছে ডিএসসিসি। এর মাধ্যমে যত্রতত্র ব্যানার ফেস্টুন ও সাটানো পোস্টারমুক্ত হয়ে নতুন করে সাজবে ঢাকা। ডিজিটাল কার্টেইন, স্ক্রিন প্রজেকশন, এলইডি ডিসপ্লে বোর্ড, ডিজিটাল স্ক্রিনের মাধ্যমে ডিজিটাল পদ্ধতিতে পুলিশ বক্স, পদচারী সেতু, বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার মোড়, রাস্তার ডিভাইডারের মাঝসহ বিভিন্ন সড়কের ফুটপাথে ও দৃষ্টিনন্দন স্থানে বিজ্ঞাপন প্রচার করা হবে। প্রাথমিকভাবে ১ হাজার ৮৩ স্থানে এসব ডিজিটাল বিজ্ঞাপনফলক বসানো হবে। এর অর্ধেকের বেশিরভাগ কাজই বর্তমানে শেষ পর্যায়ে রয়েছে। ব্যক্তিমালিকানাধীন নির্দিষ্ট কিছু স্থান ছাড়া প্রায় সকল ফলকই সরকারী জমিতেই স্থাপন করা হবে। তবে বেসরকারী স্থানের জন্য মালিককে কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে নির্ধারিত ফি প্রদান করা হবে। এসব বিজ্ঞাপনফলক ক্ষুদ্র ও বৃহত আকারে স্থায়ীভাবে স্থাপনা তৈরি করে দিনরাত ডিজিটাল বিজ্ঞাপন প্রচারের ব্যবস্থা করা হবে। এসব ফলকে নির্দিষ্ট ফি প্রদানের বিনিময়ে যে কোন ব্যক্তির প্রচার বা প্রতিষ্ঠান তাদের পণ্যের বিজ্ঞাপন প্রচার করতে পারবেন। সকাল ৯টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত এসব ডিজিটাল ফলকে বিজ্ঞাপন প্রচার করা হবে। এসব বিজ্ঞাপন ফলকে প্রতিদিনের প্রচারের মোট সময়ের ২৫ ভাগ সময় সরকারের নানা উন্নয়ন কর্মকা- প্রচার করা হবে। একই সঙ্গে সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম ও সরকারের নানা নির্দেশনা ও বাস্তবায়নের পদ্ধতি নিয়মিত তুলে ধরা হবে। বহুমুখী পণ্যের প্রসারে বিজ্ঞাপন অতি প্রয়োজন বিষয়টি। মাথায় রেখে এবং ডিজিটাল রাজধানী গড়ার প্রত্যয় নিয়েই ডিজিটাল বিজ্ঞাপন ফলক প্রকল্পটি হাতে নেয়া হয়েছে। প্রকল্প সূত্র জানায়, রাজধানীর দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন অন্তর্ভুক্ত এলাকাগুলোর মধ্যে প্রাথমিকভাবে জনসমাগম বেশি ও নাগরিকগণ যেসব স্থান দিয়ে বেশি চলাচল করে সেসব স্থান বিজ্ঞাপনফলক স্থাপনের জন্য বেছে নেয়া হবে। গোটা ডিএসসিসি এলাকায় কয়েক হাজার ডিজিটাল বিজ্ঞাপনফলক স্থাপন করা হবে। এই বিজ্ঞাপনফলক দিয়ে প্রতি বছর ৩ কোটি টাকা আয় করার পরিকল্পনা করছে ডিএসসিসি। সূত্র আরও জানায়, প্রাথমিকভাবে এক হাজার ৮৩টি ডিজিটাল বিজ্ঞাপনফলক স্থাপন করা হবে যার জন্য বেশকিছু স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রকল্পের কাজ দ্রুততার সঙ্গে এগিয়ে চলছে। জানা গেছে, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর চলাচল যাতে ঝুঁকিমুক্ত থাকে ও রাস্তায় চলাচলের সময় এসব বিজ্ঞাপন ফলকের আলো যেন চলাচলকারী বা কোন গাড়ি চালকের চোখের সমস্যার সৃষ্টি না করে তা ঠিক করতে চক্ষু বিশেষজ্ঞ বা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের এই কমিটিতে সদস্য হিসেবে যুক্ত করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এসব বিষয় বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নিয়ে বিজ্ঞাপনফলক স্থাপনের জায়গা নির্ধারণের জন্য কমিটিকে চিঠি প্রদান করেছে ডিএসসিসি কর্তৃপক্ষ। ডিএসসিসি সূত্রে জানা গেছে, রাজধানীর সৌন্দর্য বর্ধনের লক্ষ্যে ২০১৭ সালে চীনা থেকে ৫টি ডিজিটাল কার্টেইন আমদানি করা হয়। এসব কার্টেইন কাওরানবাজারের পান্থকুঞ্জ, গাউছিয়া, তাঁতিবাজার এবং রাসেল স্কয়ারসহ বিভিন্ন স্থানে স্থাপন করা হয়। সাইন্সল্যাব, কাঁটাবন, নূর হোসেন চত্বর, ফকিরাপুলে পর্যায়ক্রমে এই ডিজিটাল কার্টেইন স্থাপন করা হবে। প্রতিটি ডিজিটাল কার্টেইন স্থাপনে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৪০ লাখ টাকা। পাশাপাশি রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে ২০টি ডিজিটাল স্ক্রিন প্রজেকশন স্থাপন করা হবে। এর প্রতিটির জন্য ৪০ লাখ টাকা ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক বিভাজন ও ফুটপাথে ৯শ’ ৫০টি এলইডি ডিসপ্লে বোর্ডস্থাপন করা হবে। প্রত্যেকটি স্থাপনে ব্যয় ধরা হয়েছে ১২ লাখ টাকা। এছাড়া গুরুত্বপূর্ণ সড়কের মোড়গুলোতে। একই ব্যয়ে ৮৪টি এলইডি স্ক্রিন স্থাপন করা হবে। এছাড়া রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় ৯টি এলইডি বিশাল বিলবোর্ড স্থাপন করা হবে। আর প্রতিটি ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে ১১টি পদচারী সেতুতে (ওভারব্রিজ) ডিজিটাল স্ক্রিন স্থাপন করা হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে এসব ডিজিটাল বিজ্ঞাপনফলক স্থাপনের কাজ পেয়েছে ১১টি ঠিকাধারী প্রতিষ্ঠান। এগুলো হচ্ছে ডিজিটাল টেক, নূর ট্রেডার্স, টপটেন মার্ট লিমিটেড, মেসার্স জনতা এন্টারপ্রাইজ, এড ওয়ার্ল্ড, ভিশন ওয়ার্ল্ড, মিডিয়া ভিশন, টিসিএল অপটোইলেকট্রনিক্স লিমিটেড, বৈশাখী ট্রেডাস, বেস্টন এবং জি-টেক। এর মধ্যে ডিজিটাল টেক নামের একটি প্রতিষ্ঠান ডিএসসিসির জায়গায় ৩টি এবং ব্যক্তি মালিকানাধীন জায়গায় একটি ডিজিটাল কার্টেইন স্থাপন করবে। পাশাপাশি ওই প্রতিষ্ঠানটি ব্যক্তিমালিকানাধীন জায়গায় একটি ডিজিটাল স্ক্রিন প্রজেকশনও স্থাপন করবে। নূর ট্রেডার্স নামের আরেকটি প্রতিষ্ঠান ডিএসসিসির জায়গায় একটি ডিজিটাল কার্টেইন স্থাপন করবে। এছাড়া টপটেন মার্ট লিমিটেড ব্যক্তিমালিকানাধীন জায়গায় একটি ডিজিটাল স্ক্রিন প্রজেকশন স্থাপন করবে। মেসার্স জনতা এন্টারপ্রাইজ জিএসসিসির জায়গায় ৮টি ডিজিটাল স্ক্রিন প্রজেকশন এবং ডিএসসিসির ১১টি পদচারী সেতুতে ডিজিটাল স্ক্রিন স্থাপন করবে। টিসিএল অপটোইলেক্ট্রনিক্স লিমিটেড নামের আরেকটি প্রতিষ্ঠান ডিএসসিসির জায়গায় ৯টি এলইডি বিলবোর্ড, ৪শ’ ৫০টি এলইডি ডিসপ্লে বোর্ড এবং ১০টি এলইডি স্ক্রিন স্থাপন করবে। ডিএসসিসির জায়গায় বৈশাখী ট্রেডাস ৫শ’ এলইডি ডিসপ্লে বোর্ড স্থাপন করবে। বিসটন ডিএসসিসির জায়গায় একটি এলইডি স্ক্রিন স্থাপন করবে। আর জি-টেক ডিএসসিসির জায়গায় পুলিশ বক্সে ৭১টি এলইডি স্ক্রিন স্থাপন করবে। জানা গেছে, ডিএসসিসির আওতাধীন এলাকায় বিজ্ঞাপনফলক স্থাপনের অনুমোদন প্রদান ও নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে একটি নীতিমালা প্রণয়নের জন্য ৯ সদস্য বিশিষ্ট পৃথক ৫টি কমিটি করা হয়েছে। ডিএসসিসির অঞ্চলগুলোর প্রধান প্রকৌশলীকে আহ্বায়ক করে গঠন করা কমিটিতে প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা, আইন কর্মকর্তা, আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা, প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ, রাজউক প্রতিনিধি, নির্বাহী প্রকৌশলী (পিএন্ডডি), সিস্টেম এনালিস্টকে সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে। এছাড়া সদস্য সচিব হিসেবে একজন উ-প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তাকেও (বাজার সার্কেল) এই কমিটিতে রাখা হয়েছে। কমিটি এলইডি, ডিজিটাল স্ক্রিন প্রজেকশন, ডিজিটাল এলইডি বিলবোর্ড, ডিজিটাল এলইডি ডিসপ্লে, ডিজিটাল এলইডি স্ক্রিন, ডিজিটাল মাল্টিভিশন, ফুটওভার ব্রিজে ডিজিটাল স্ক্রিন স্থাপন ইত্যাদি ধরনের বিজ্ঞাপনফলকগুলো সমন্বিত করে সুনির্দিষ্টভাবে সংজ্ঞায়িত করে এগুলো স্থান নির্ধারণ ও বার্ষিক ফি নির্ধারণ করতে বলা হয়। কমিটির মতামতের ভিত্তিতে ডিজিটাল বিজ্ঞাপনফলক বাবদ বার্ষিক ফি নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ডিজিটাল স্ক্রিন প্রজেকশনের ক্ষেত্রে ডিএসসিসি এবং সরকারী, আধাসরকারী বা স্বায়ত্তশাসিত সংস্থার জায়গায় বার্ষিক প্রতি বর্গফুটের ফি ১১শ’ টাকা এবং ব্যক্তিমালিকানাধীন জায়গায় বার্ষিক প্রতি বর্গফুটের ফি সাড়ে ৫শ’ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে ডিজিটাল স্ক্রিন প্রজেকশন ছাড়া অন্যান্য বিজ্ঞাপনফলকের ক্ষেত্রে ডিএসসিসি এবং সরকারী, আধাসরকারী বা স্বায়ত্তশাসিত সংস্থার জায়গায় বার্ষিক প্রতি বর্গফুটের ফি ৮শ’ টাকা টাকা এবং ব্যক্তিমালিকানাধীন জায়গায় বার্ষিক প্রতি বর্গফুটের ফি ৪শ’ টাকা হারে নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, ডিজিটাল বিজ্ঞাপন ফলকে ২৪ ঘণ্টায় বিভিন্ন ধরনের বিজ্ঞাপন প্রদর্শিত হবে। তবে এর মধ্যে প্রতিদিন মোট সময়ের ২৫ ভাগ সময় ডিএসসিসির নিজস্ব প্রচার এবং সরকারের উন্নয়নকাজের প্রচারের জন্য নির্ধারিত থাকবে। তবে প্রতিদিন ২৫ ভাগ সময় ব্যবহার করার প্রয়োজন না হলে পরবর্তীতে এককালীনভাবে এই সময় ব্যবহার করতে পারবে ডিএসসিসি কর্তৃপক্ষ। এছাড়া ডিএসসিসি এলাকার রাস্তায় রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর চলাচল যাতে ঝুঁকিমুক্ত থাকে এবং সংশ্লিষ্ট এলাকার সৌন্দর্য যাতে নষ্ট না হয়, সে বিষয়টি বিশেষভাবে বিবেচনায় রেখে প্রতিটি অঞ্চলের কোন কোন স্পটে কতটি বিজ্ঞাপনফলক স্থাপনের অনুমোদন দেয়া যেতে পারে, সে বিষয়ে পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় করে মতামতসহ প্রতিবেদন দাখিলের জন্য পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট আরেকটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তাকে (সংশ্লিষ্ট অঞ্চল) আহ্বায়ক করে গঠিত কমিটিতে একজন করে নির্বাহী প্রকৌশলী (পুর), সহকারী প্রকৌশলী (বিদ্যুত) এবং ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগের একজন সহকারী কমিশনারকে (সংশ্লিষ্ট এলাকা) সদস্য করা হয়েছে। এছাড়া কর কর্মকর্তাকে (সংশ্লিষ্ট অঞ্চল) কমিটির সদস্য সচিব করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই রূপসী বাংলা সংলগ্ন সড়কটিতে পরীক্ষামূলকভাবে ডিজিটাল বিজ্ঞাপনফলক স্থাপন করা হয়েছে। মূলত রাস্তার ল্যাম্প পোস্টের পিলারের সঙ্গে এলইডি ডিসপ্লে বোর্ড স্থাপন করা হয়েছে। এতে সরকারের উন্নয়ন কর্মকা-ের পাশাপাশি বিভিন্ন বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করা হচ্ছে। এছাড়া বাংলামোটর থেকে পান্থকুঞ্জ পর্যন্ত স্থাপন করা হয়েছে এলইডি ডিসপ্লে বোর্ড। সেখানেও একই ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। এছাড়া প্রায় আড়াই কোটি টাকা ব্যয়ে রাজধানীর শাহবাগ চত্বরে একটি ডিজিটাল স্ক্রিন প্রজেকশন স্থাপন করা হয়েছে। ওই প্রজেকশনে অধিকাংশ সময় সরকারের নানা উন্নয়ন কর্মকা- প্রদর্শন করা হয়। ফাঁকে ফাঁকে বেসরকারী বিজ্ঞাপন দেখানো হয়। কোন কোন স্থানে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের গুরুত্বপূর্ণ খেলা এবং বিভিন্ন ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান প্রচার করা হয়। এ সময় দিনমজুর ও ফুটপাথে চলাচলকারী নগরবাসীকে ওই প্রজেকশনের সামনে বসে চিত্ত বিনোদনে অংশ নিতে দেখা যাচ্ছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা ইউসুফ আলী সরদার জনকণ্ঠকে বলেন, রাজধানীর সৌন্দর্য বর্ধন ও আধুনিক ক্লিন সিটি গড়তে যত্রতত্র নানা ধরনের চটকদার বিজ্ঞাপন প্রচার চিরতরে বন্ধ করতে আমরা এই উদ্যোগ হাতে নিয়েছি। এ লক্ষ্য বাস্তবায়নে উন্নত বিশ্বের ন্যয় ডিএসসিসি এলাকায় আধুনিক পদ্ধতির কয়েক হাজার ‘ডিজিটাল বিজ্ঞাপনফলক’ স্থাপন করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এর মাধ্যমে যত্রতত্র ব্যানার ফেস্টুন ও সাটানো পোস্টারমুক্ত হয়ে নতুন করে সাজবে ঢাকা। ডিজিটাল কার্টেইন, স্ক্রিন প্রজেকশন, এলইডি ডিসপ্লে বোর্ড, ডিজিটাল স্ক্রিনের মাধ্যমে ডিজিটাল পদ্ধতিতে পুলিশ বক্স, পদচারী সেতু, বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার মোড়, রাস্তার ডিভাইডারের মাঝেসহ বিভিন্ন সড়কের ফুটপাথে ও দৃষ্টিনন্দন স্থানে বিজ্ঞাপন প্রচার করা হবে। প্রাথমিকভাবে ১ হাজার ৮৩টি স্থানে এসব ডিজিটাল বিজ্ঞাপনফলক বসানো হবে। এর অর্ধেকের বেশিরভাগ কাজই বর্তমানে শেষ পর্যায়ে রয়েছে। ইউসুফ আলী বলেন, কর্পোরেশনের নিজস্ব আয় বৃদ্ধির পাশাপাশি সরকারের নানা উন্নয়ন কর্মকা- প্রদর্শন করতে মোট সময়ের ২৫ ভাগ সময় বরাদ্দ রেখেছি। এই সময়ে কর্পোরেশনের বিভিন্ন রকমের জনসচেতনতামূলক কার্যক্রমও প্রচার করা হবে। কিজ্ঞাপনের মাধ্যমে আদায়কৃত অর্থ কর্পোরেশনের নানা উন্নয়ন কর্মকা-ে ব্যবহার করা হবে। নাগরিকদের যে কোন প্রকার দুর্ভোগ এড়াতে কোন কোন স্থানে এসব ডিজিটাল ফলক বসানো উচিত ও গুরুত্বপূর্ণ এমন স্থান নির্ধারণে আমরা প্রতিটি আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তাদের (আনিক) প্রধান করে প্রতিটি অঞ্চলে ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করে দিয়েছি। এই মোট ২৫ সদস্যের মতামতের ভিত্তিতে আমরা পরবর্তী স্থান নির্বাচন করে পুরোদমে প্রকল্পের কাজ শুরু করা হবে। বর্তমানে এই প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। তিনি বলেন, নগরীর সৌন্দর্য বর্ধনের উদ্দেশ্যে নেয়া এই প্রকল্প থেকে প্রতি বছরে ৩ কোটি টাকা ফি আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তাছাড়া অবহেলায় ডিজিটাল বিজ্ঞাপনফলকগুলোর ক্ষতিসাধনের সম্ভাবনা কমাতে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে বাৎসরিক ভিত্তিতে চুক্তি নবায়ন করতে হবে। এর মাধ্যমেই ঢাকাকে ক্লিন সিটি হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব হবে।
×