বরিশালে ব্যবসায়ীকে ডিবি পরিচয়ে অপহরণ

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ ভুয়া ডিবি পুলিশ পরিচয়ে এক ওষুধ ব্যবসায়ীকে মারধর করে অপহরণের পর একটি ঘরে আটক করে মোটা অঙ্কের টাকা মুক্তিপণ আদায় করা হয়। মঙ্গলবার দিনভর বিষয়টি নিয়ে টক অব দ্য টাউনে পরিণত হয়েছে। অপহরণের ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার রাতে জেলার গৌরনদী পৌর সদরের টিএ্যান্ডটি অফিস সংলগ্ন এলাকায়। ওই এলাকার এ্যাডভোকেট আলমগীর হোসেনের বাসার ভাড়াটিয়া ও মদিনা মেডিক্যাল হলের মালিক তুহিন জানান, সোমবার মাগরিবের নামাজের পর উত্তর পালরদী গ্রামের কালাম মিয়ার পুত্র বেল্লাল মিয়া, একই এলাকার সাগর সরদার ও আশোকাঠি এলাকার কালু বেপারীর পুত্র রিপন বেপারী তার ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে এসে প্রথমে নিজেদের ডিবি পরিচয় দিয়ে বলেন, ওষুধ ব্যবসার অন্তরালে এখানে জামায়াত-শিবিরের কার্যক্রম পরিচালিত হয় বলে তাদের কাছে অভিযোগ রয়েছে। এ নিয়ে তার (তুহিন) সঙ্গে ওই তিন যুবকের বাগ্বিতণ্ডা হয়। তুহিন আরও জানান, এ সময় তার প্রতিষ্ঠানে আসা এক ব্যক্তি বেল্লালকে চিনে ফেলায় তাৎক্ষণিক ওই তিন যুবক গৌরনদী পৌর মেয়র তাদের পাঠিয়েছে জানিয়ে তুহিনকে টানা হেঁচড়া শুরু করে। একপর্যায়ে তিনি (তুহিন) পৌর মেয়রের সঙ্গে ফোনে কথা বলার বিষয়টি জানালে ওই তিন যুবক তাকে মারধর করে জোরপূর্বক অপহরণ করে নিয়ে যায়। সূত্রে আরও জানা গেছে, ব্যবসায়ী তুহিনকে আশোকাঠি এলাকার রিপনের শ্বশুর এনায়েত খানের বাড়িতে আটকে রেখে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। এ নিয়ে একটি সাদা স্ট্যাম্পেও তুহিনের স্বাক্ষর নেয়া হয়েছে। পরবর্তীতে বিভিন্ন দেন দরবারের পর এক লাখ ৪০ হাজার টাকা পরিশোধ করার পর তুহিনকে গভীর রাতে ছেড়ে দেয়া হয়। ব্যবসায়ী তুহিন আরও জানান, তার কাছ থেকে নেয়া মুক্তিপণের সমুদয় টাকা স্থানীয় এক পৌর কাউন্সিলর ফেরত দেয়ার আশ্বাস দিয়ে এ বিষয়ে মামলা না করার জন্য বিভিন্ন ধরনের হুমকি অব্যাহত রেখেছে। গৌরনদী মডেল থানার ওসি মোঃ মনিরুল ইসলাম জানান, ব্যবসায়ী তুহিনকে অপহরণের খবর পেয়ে পুলিশ অভিযান চালিয়ে আশোকাঠি এলাকা থেকে তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন। পরবর্তীতে অপহরণ ও মুক্তিপণের বিষয়টি শুনে সংশ্লিষ্ট উর্ধতন কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়েছে। ওসি আরও জানান, ব্যবসায়ী তুহিনকে থানায় লিখিত অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। সান্তাহার নিজস্ব সংবাদদাতা সান্তাহার থেকে জানান,আদমদীঘি উপজেলা সদরের বাজার এবং সান্তাহার রেলগেট চত্বর থেকে আব্দুল মতিন (৫৫) ও আনোয়ার হোসেন (২৮) নামের দুই চাল ব্যবসায়ীকে সোমবার সন্ধ্যা রাতে মাইক্রোবাসে করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। জনসমক্ষে এ দুজনকে তুলে নিয়ে যাওয়া হলেও তাদের কোন পরিচয় পাওয়া যায়নি। এ ঘটনার পর ওই দুই ব্যবসায়ীর পরিবারের পক্ষ থেকে স্থানীয় থানা, র‌্যাব ও ডিবির দফতরে খোঁজ নিয়ে দুজনের কোন সন্ধান পাননি বলে জানিয়েছেন। জানা গেছে, সোমবার সন্ধ্যা রাতে কালো রংয়ের একটি মাইক্রোবাস (ঢাকা মেট্রো-ট-১১-১৯০২) প্রথমে আদমদীঘি বাজার এলাকায় এসে দাঁড়ায়। ওই মাইক্রোবাস থেকে কয়েক ব্যক্তি নেমে উপজেলার কোমারপুর গ্রামের আলতাব হোসেনের ছেলে চাল ব্যবসায়ী আব্দুল মতিনকে ধরে মাইক্রোবাসে তোলে। এর কিছু পর একই মাইক্রোবাস সান্তাহার পৌর শহরের রেলগেট চত্বরে আসে।