ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কারের নামে লুট

তিস্তা ব্যারাজের সেচ পাচ্ছে না কৃষকরা

প্রকাশিত: ০৬:৪৮, ২৩ জানুয়ারি ২০১৮

তিস্তা ব্যারাজের সেচ পাচ্ছে না কৃষকরা

স্টাফ রিপোর্টার, নীলফামারী ॥ বোরো আবাদের সেচ মৌসুমে দেশের সর্ববৃহৎ সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের কমান্ড এলাকায় সেচ হতে বঞ্চিত হচ্ছেন কৃষক। অভিযোগ উঠেছে, প্রতিবছরের ন্যায় এবারও গত ডিসেম্বর মাসের মধ্যে সেচ খালগুলো সংস্কার করার কথা ছিল। কিন্তু পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের গাফিলতির কারণে সেচ খালগুলো অদ্যাবধি সংস্কার বা মেরামত করা হয়নি। ফলে তিস্তা ব্যারাজ সেচ প্রকল্পের কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সেচখালে পানি ছাড়তে পারছে না। এতে কমান্ড এলাকার কৃষকরা সেচের জন্য ধর্ণা দিয়েও ব্যর্থ হচ্ছে। জানা গেছে, বিগত সময়ের ন্যায় এবারও তিস্তা নদীতে উজানের পানি প্রবাহ কম থাকায় চলতি বোরো মৌসুমে তিস্তা ব্যারাজ সেচ প্রকল্প হতে আট হাজার হেক্টর জমিতে সেচ প্রদানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে সদরে আটশ হেক্টর, ডিমলা উপজেলায় ৫ হাজার হেক্টর, জলঢাকা উপজেলায় ২ হাজার হেক্টর, কিশোরীগঞ্জ উপজেলায় ২শ’ হেক্টর। সোমবার দেখা যায়, তিস্তা নদীতে বেশ ভালই পানি প্রবাহ থাকলেও সে পানির সুফল পাচ্ছেন না কমান্ড এলাকার কৃষকরা। সূত্রমতে, তিস্তা নদীতে এখন প্রায় তিন হাজার কিউসেকের ওপর প্রবাহ রয়েছে। বোরো মৌসুমে সেচ প্রদানে সেচ খালগুলো সংস্কার বা মেরামতের জন্য প্রায় দুই কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে সৈয়দপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের ডিবিশনে ৮০ লাখ, নীলফামারী ডিভিশনে ৬০ লাখ, ডালিয়া ডিভিশনে ৪০ লাখ, গঙ্গাচড়া ডিভিশনে ৩০ লাখ। অভিযোগ উঠেছে, যেসব সেচ খালে তিস্তা ব্যারাজের সেচের পানি প্রবেশ করবে না সেসব সেচ খাল সংস্কারে বেশি উৎসাহী কর্মকর্তাগণ। যেমন সৈয়দপুর ডিভিশনে এবার সেচ যাবে না। সেখানে ৮০ লাখ টাকা সেচ খাল সংস্কারে ব্যয় দেখানো হচ্ছে আবার নীলফামারী সদরের ক্ষেত্রেও একই পরিস্থিতি। ডালিয়া ডিভিশনে সংস্কারের কাজ চলছে অতি ধীরগতিতে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কমান্ড এলাকার কৃষকরা জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের কিছু অসাধু কর্মকর্তা সিন্ডিকেট তৈরি করে সরকারের দেয়া কোটি কোটি টাকা সংস্কারের নামে লুট করছে। বোরো আবাদের সময় তারা সেচ দিতে পারছে না। কৃষকরা জানান, প্রধান সেচ খালে সামান্য পানি থাকলেও সেকেন্ডারি, টারশিয়ারী খালে কোন পানি নেই আর প্রধান খালের পানি সরাসরি নেয়া যায় না। তাই কমান্ড এলাকার কৃষকরা দ্রুত সেচ প্রদানের দাবি করে অসৎ কর্মকর্তাদের বিচার দাবি করেছেন।
×