ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সিরিজ নিশ্চিত করল ইংল্যান্ড

প্রকাশিত: ০৭:০৩, ২২ জানুয়ারি ২০১৮

সিরিজ নিশ্চিত করল ইংল্যান্ড

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ টানা তিন জয়ে দুই ম্যাচ হাতে রেখেই ওয়ানডে সিরিজ নিশ্চিত করল ইয়ন মরগানের নেতৃত্বাধীন ইংল্যান্ড। সিডনিতে স্টিভেন স্মিথের দলকে ১৬ রানে হারিয়েছে রঙিন পোশাকে দুর্দান্ত খেলা সফরকারীরা। জস বাটলারের ঝড়ো সেঞ্চুরির ওপর ভর করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৬ উইকেটে ৩০২ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর গড়ে ইংল্যান্ড। জবাবে ৬ উইকেটে ২৮৬ রানে থামে অসিদের সংগ্রহ। ছয় নম্বরে নেমে ৮৩ বলে অপরাজিত ১০০ রানের ইনিংসটির জন্য ম্যাচসেরা হয়েছেন উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান বাটলার। দারুণ এ জয়ে এ্যাশেজ ট্রফি খোয়ানোর ক্ষতে কিছুটা হলেও প্রলেপ দিতে পারল ইংল্যান্ড। যদিও ঐহিহ্যের ওই টেস্ট দ্বৈরথের সঙ্গে ওয়ানডের তুলনা চলে না। শুক্রবার এ্যাডিলেডে অনুষ্ঠিত হবে চতুর্থ ওয়ানডে। টস জিতে ফিল্ডিং নেয়া অস্ট্রেলিয়ার বোলিংয়ের শুরুটা কিন্তু মন্দ ছিল না। প্রতিপক্ষের দুই বিপজ্জনক ব্যাটসম্যান জেসস রয় ও এ্যালেক্স হেলস ফিরে যান ১০ ওভারের মধ্যেই। জনি বেয়ারস্টো ও জো রুট চেষ্টা করছিলেন ঘুরে দাঁড়ানোর। কিন্তু দুজনই আউট হন থিতু হয়ে। এরপর পঞ্চম উইকেটে মরগান ও বাটলার গড়েন ৬৫ রানের জুটি। বিপজ্জনক হয়ে উঠতে থাকা এই জুটিও ভাঙ্গেন হ্যাজলউড। ৪১ রান করে মরগান ফেরার খানিক পর ফেরেন মঈন আলীও। ইংল্যান্ডের রান তখন ৬ উইকেটে ১৮৯। এরপরই আসে ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দেয়া জুটি। বাটলার শুরুতে ছিলেন সাবধানী। বল প্রতি রান করেছেন এরপরও। অর্ধশতক করেন ৫২ বলে। শেষদিকে তার ব্যাট হয়ে ওঠে উত্তাল। আরেক পাশে ঝড় তোলেন সঙ্গী ক্রিস ওকসও। ইনিংসের শেষ বলে দুই রান নিয়ে বাটলার স্পর্শ করেন সেঞ্চুরি। ৩১ বলে পরের পঞ্চাশ করে বাটলারের সেঞ্চুরি ৮৩ বলে। ক্যারিয়ারে এটি তার পঞ্চম সেঞ্চুরি। অন্যদিকে ৫ চার ও ২ ছক্কায় ৩৬ বলে অপরাজিত ৫৩ ওকস। দুজনের ঝড়ে শেষ ১০ ওভারে ইংল্যান্ড তোলে ১০২ রান। প্রথম ৭ ওভারে মাত্র ২৩ রান দেয়া প্যাট কামিন্সের শেষ ৩ ওভার থেকে আসে ৪৪ রান। রান তাড়ায় অস্ট্রেলিয়া আবার শুরুতে হারায় ডেভিড ওয়ার্নারকে। তিনে ব্যাট করার সুযোগ পেয়ে কাজে লাগাতে পারেননি ক্যামেরন হোয়াইটও। তবে আবারও দারুণ খেলছিলেন এ্যারন ফিঞ্চ। আগের দুই ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান এদিনও পেরিয়ে যান পঞ্চাশ। স্টিভেন স্মিথের সঙ্গে তার জুটি জমে যায়। হ্যামস্ট্রিংয়ের চোটে মাত্র ৮ বল করেই লিয়াম প্লাঙ্কেট মাঠ ছাড়ায় আরও বিপাকে পড়ে যায় ইংল্যান্ড। তবে এদিন আর তিন অঙ্ক পর্যন্ত যেতে পারেননি ফিঞ্চ। ফেরেন ৫৩ বলে ৬২ রান করে। ভাঙ্গে ৬৯ রানের জুটি। চতুর্থ উইকেটে আরও একটি জুটি গড়ে ওঠে। এবার স্মিথের সঙ্গী মিচেল মার্শ। দুজনে গড়েন ৬৮ রানের জুটি। স্মিথ ছিলেন ভীষণ সাবধানী। প্রথম বাউন্ডারি মারেন ৬৩ বল খেলে। তবে তার বিদায় দিয়েই অস্ট্রেলিয়ার পিছিয়ে পড়া শুরু। কট বিহাইন্ডের সিদ্ধান্তটি নিয়ে ছড়ায় উত্তেজনা। বাটলালের গ্লাভসে জমার আগে বল মাটি ছুঁয়েছে কিনা জাগে এই প্রশ্ন। কিন্তু মাঠের আম্পায়ারের সফট সিগন্যাল ছিল আউট, যেটি বদলানোর যথেষ্ট প্রমাণ পান তৃতীয় আম্পায়ার। ৬৬ বলে ৪৫ করে ফেরেন স্মিথ। খানিক পর ৫৫ রানে ফিরে যান মার্শও। অস্ট্রেলিয়ার আশা তবু ছিল বেঁচে। শেষদিকে চেষ্টা করেছেন মার্কাস স্টয়নিস। কিন্তু আরেকপাশে ধুঁকেছেন টিম পেইন। সেটিই জয় থেকে দূরে ঠেলেছে অস্ট্রেলিয়াকে। ৪৩ বলে ৫৬ রান করে শেষ ওভারে আউট হন স্টয়নিস। আর ৩৫ বল খেলেও পেইন অপরাজিত থাকেন মাত্র ৩১ রানে। সেটির খেসারত দিতে হয় দলকে। স্কোর ॥ ইংল্যান্ড ॥ ৩০২/৬ (৫০ ওভার; রয় ১৯, বেয়ারস্টো ৩৯, রুট ২৭, মরগান ৪১, বাটলার ১০০*, ওকস ৫৩*; হ্যাজলউড ২/৫৮, কামিন্স ১/৬৭, স্টয়নিস ১/৪৩, জ্যাম্পা ১/৫৫, মার্শ ১/১৪)। অস্ট্রেলিয়া ॥ ২৮৬/৬ (৫০ ওভার; ফিঞ্চ ৬২, হোয়াইট ১৭, স্মিথ ৪৫, মার্শ ৫৫, স্টয়নিস ৫৬, পেইন ৩১*; উড ২/৪৬, ওকস ২/৫৭, রশিদ ২/৫১)। ফল ॥ ইংল্যান্ড ১৬ রানে জয়ী। ম্যান অব দ্য ম্যাচ ॥ বাটলার (ইংল্যান্ড)। সিরিজ ॥ পাঁচ ওয়ানডেতে ইংল্যান্ড ৩-০তে এগিয়ে।
×