ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

পেপারলেস হচ্ছে বিদ্যুত বিভাগ

প্রকাশিত: ০৬:১৮, ২২ জানুয়ারি ২০১৮

পেপারলেস হচ্ছে বিদ্যুত বিভাগ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ পেপারলেস হচ্ছে বিদ্যুত বিভাগ। সম্পূর্ণ ইলেক্ট্রনিক পদ্ধতিতে নথি নিষ্পত্তির কার্যক্রম (ই-ফাইলিং) শুরু করেছে বিদ্যুত বিভাগের বিভিন্ন দফতর ও কোম্পানি। ই-ফাইলিংয়ের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো, কেউ চাইলেই লাল ফিতায় ফাইল আটকে রাখতে পারেন না। কোন ফাইল, কোন কর্মকর্তার কাছে কত দিন রয়েছে, তা সরাসরি উর্ধতন কর্মকর্তারা মনিটরিং করতে পারবেন। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত বিদ্যুত বিভাগের এক বৈঠকে বলা হয়েছে, শীঘ্রই সব চিঠিপত্র ও ফাইল ই-ফাইলিং করতে হবে। প্রত্যেক মাসে দফতর, সংস্থা ও কোম্পানিকে ই-ফাইলিংয়ে নথি উপস্থাপন, চিঠি পাঠানোর বিবরণ আলাদা করে বিদ্যুত, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ে পাঠানোরও নির্দেশ দেয়া হয়। জানতে চাইলে পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন বলেন, বর্তমানে সরকার বিদ্যুত বিভাগকে আরও বেশি জনবান্ধব ও কার্যকর করতে নানামুখী পদক্ষেপ নিয়েছে। এই বিভাগটিকে আরও বেশি স্বচ্ছতা দিতে গ্রাহক সেবার মান বাড়ানো হয়েছে। এ লক্ষ্যে গ্রাহকদের জন্য মোবাইল ফোন ও অনলাইনে বিদ্যুত বিল পরিশোধ, আবেদনের সুযোগ, নিয়োগ, অভিযোগ নিষ্পত্তি ব্যবস্থাপনা, ই-ফাইলিং ব্যবস্থাপনা, স্টোর ব্যবস্থাপনা, অডিট ব্যবস্থাপনা, প্রকল্প মনিটরিং ব্যবস্থাপনা, অটোমেটেড রিমোট মিটার ও প্রি-পেইড মিটারিং পদ্ধতি প্রচলনসহ নিত্যনতুন পদক্ষেপ নিচ্ছে বিদ্যুত বিভাগ। তিনি বলেন, ই-ফাইলিং একটি আধুনিক পদ্ধতি। এই পদ্ধতি এরই মধ্যে সরকারী কিছু কিছু অফিসে শুরু হয়েছে। এতে দেখা গেছে, কাজের গতি বাড়ছে। কোন কারণে কোন ফাইল নির্দিষ্ট সময়ের পর কারও সংশ্লিষ্ট কারও টেবিলে থাকলে তা সহজেই জানা যায়। সঙ্গত কারণে কেউ ফাইল আটকে রাখতে পারে না। অতীতে সরকারী অফিসে অকারণে ফাইল আটকে রাখা হতো। এক্ষেত্রে দীর্ঘদিনেও কোনও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠা করা যাচ্ছিল না। এর মধ্যে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়, ভূমি জরিপ অধিদফতর ছাড়াও কয়েকটি মন্ত্রণালয়ে ই-ফাইলিং কার্যক্রম শুরু করেছে। বিদ্যুত বিভাগ জানায়, নবেম্বর মাসে নতুন গঠিত উত্তরের বিদ্যুত বিতরণ কোম্পানি নেসকো ছাড়া সব কোম্পানি ই-ফাইলিংয়ে ফাইল ও চিঠি পাঠানোর কাজ শুরু করে। ডিসেম্বর মাসে অন্য সব কোম্পানির মতো নেসকোকেও ই-ফাইলিং করার জন্য সার্ভারে প্রবেশের অনুমতি দিয়েছে বিদ্যুত বিভাগ। এরপর তারাও ই-ফাইলিং শুরু করেছে। ডিসেম্বর মাসে প্রায় ১ হাজার ৮৬৩টি নথি উপস্থাপন করা হয়। এছাড়া চিঠি রয়েছে ৬৮০টি। আর নবেম্বর মাসে নথি উপস্থাপনের পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৯৫৩টি এবং চিঠির সংখ্যা ছিল ৬১৪টি। ডিসেম্বর মাসে নথি উপস্থাপনের ক্ষেত্রে এগিয়ে আছে আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন কোম্পানি লিমিটেড (এপিএসসিএল)। তারা গত মাসে ২৫৫টি নর্থি উপস্থাপন করেছে। তাদের চিঠির সংখ্যা ১২৭টি। অন্যদিকে চিঠির পাঠানোর ক্ষেত্রে এগিয়ে আছে ওয়েস্টজোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ওজোপাডিকো)। তারা গত মাসে ১৪১টি চিঠি ই-ফাইলিংয়ের মাধ্যমে পাঠিয়েছে। তাদের নথির সংখ্যা ১৬২টি। এছাড়া টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ নথি উপস্থাপন করেছে ৯১টি, চিঠির সংখ্যা ১৯টি। বাংলাদেশ বিদ্যুত উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) নথির সংখ্যা ২১৮, চিঠি ৬, বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (বিআরইবি) নথি ৭৮, চিঠি ২১টি। ঢাকা বিদ্যুত বিতরণ কোম্পানির (ডিপিডিসি) নথি ৭৯, চিঠি ১০টি, ঢাকা বিদ্যুত সরবরাহ কোম্পানির (ডেসকো) নথি ১১৩টি, চিঠি ২০টি, নর্দান পাওয়ার সাপ্লাই কোম্পানির (নেসকো) নথি ১১টি, চিঠি ৯টি, পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশের (পিজিসিবি) নথি ১৭১টি, চিঠি ৫১টি, নর্থওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির (নওপাজেকো) নথি ২৩১টি, চিঠি ৮৪টি, রুরাল পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেডের (আরপিসিএল) নথি ২৫৫টি, চিঠি ১২৭টি, কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির নথি ৭৩টি, চিঠি ২৬টি, পাওয়ার সেল ৩৯টি নথি উপস্থাপন করলেও তারা কোন চিঠি ই-ফাইলিং করেনি। এছাড়া বৈদ্যুত্যিক উপদেষ্টার দফতরের নথি উপস্থাপনের পরিমাণ ৭৬ এবং চিঠির পরিমাণ ২২টি।
×