ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ফাইনালের রেসে শ্রীলঙ্কা জিম্বাবুইয়ে ৫ উইকেটে পরাজিত

প্রকাশিত: ০৪:৫৪, ২২ জানুয়ারি ২০১৮

ফাইনালের রেসে শ্রীলঙ্কা জিম্বাবুইয়ে ৫ উইকেটে পরাজিত

মিথুন আশরাফ ॥ জিম্বাবুইয়েকে হারিয়ে ত্রিদেশীয় সিরিজে ফাইনাল রেসে টিকে থাকল শ্রীলঙ্কা। জিম্বাবুইয়েকে ৫ উইকেটে হারাল। থিসারা পেরেরার অলরাউন্ড নৈপুণ্যে এই জয় মিলল। হারলেই বিদায় ঘটে যেত শ্রীলঙ্কার। সিরিজের ফাইনালে তখন বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ থাকত জিম্বাবুইয়ে। কিন্তু শ্রীলঙ্কা জিতে তা হতে দিল না। এমন গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে টস জিতে জিম্বাবুইয়ে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজে নিজেদের প্রথম ম্যাচে আগে ব্যাটিং করে জিতেছিল জিম্বাবুইয়ে। এবারও সেই ভাবনা থেকেই আগে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেয় জিম্বাবুইয়ে। কিন্তু এবার আর চিন্তা ও পরিকল্পনগুলো কাজে দেয়নি। পেরেরা ও ৩ উইকেট নেয়া নুয়ান প্রদীপের গতির সামনে টিকে থাকতে পারেননি জিম্বাবুইয়ে ব্যাটসম্যানরা। সঙ্গে স্পিনার সান্দাকানের ঘূর্ণির সামনে কুলিয়ে উঠতে না পেরে ৪৪ ওভারে ১৯৮ রান করতেই গুটিয়ে যায় জিম্বাবুইয়ে। উইকেট আঁকড়ে থেকে ৫৮ রানের ইনিংস খেলতে পারেন অভিজ্ঞ ব্রেন্ডন টেইলর। জিম্বাবুইয়ে ইনিংসের একমাত্র হাফসেঞ্চুরিয়ানও টেইলরই। অন্যরা এদিন ব্যর্থ হওয়াতেই জিম্বাবুইয়ের ধস নামে। জিম্বাবুইয়ের ইনিংস শেষ হতেই ধরে নেয়া হয় শ্রীলঙ্কা জিততে চলেছে। শেষ পর্যন্ত তাই হয়। ব্যাট হাতে কুশল পেরেরার ৪৯, কুশল মেন্ডিসের ৩৬, অধিনায়ক দিনেশ চান্দিমালের অপরাজিত ৩৮ ও পেরেরার অপরাজিত ৩৯ রানে জয় তুলে নেয় শ্রীলঙ্কা। ৪৪.৫ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ২০২ রান করে জিতে শ্রীলঙ্কা। জয়টি শ্রীলঙ্কার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ ছিল। না জিতলে ব্যর্থতার যে ধারা তা বজায়ই থাকত। বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজের শেষ ম্যাচটি তখন শ্রীলঙ্কার জন্য আনুষ্ঠানিক ম্যাচে পরিণত হতো। লঙ্কানদের কাছে সান্ত¡নার জয় পাওয়ার ম্যাচ হয়ে উঠতো। এখন শ্রীলঙ্কার সামনে ফাইনালে ওঠার সুযোগও রয়েছে। সিরিজে দুই ম্যাচ হাতে রেখেই ফাইনালে উঠে গেছে বাংলাদেশ। ২৭ জানুয়ারি বাংলাদেশের বিপক্ষে হয় শ্রীলঙ্কা, নয়তো জিম্বাবুইয়ে প্রতিপক্ষ থাকবে। কোন দল ফাইনালে উঠবে? এই প্রশ্নের উত্তর পেতে এখন ২৫ জানুয়ারি বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কার মধ্যকার সিরিজের শেষ ম্যাচ পর্যন্ত অপেক্ষা থাকছে। শ্রীলঙ্কা ও জিম্বাবুইয়ের এখন সমান পয়েন্ট রয়েছে। এক ম্যাচ জিতলে ৪ পয়েন্ট মিলে। সঙ্গে বড় ব্যবধানে জিতলে, ভালভাবে জিতলে ১ পয়েন্ট বোনাস পাওয়ারও সুুযোগ রয়েছে। এ মুহূর্তে শ্রীলঙ্কা ও জিম্বাবুইয়ে ১টি করে ম্যাচ জিতে ৪ পয়েন্ট পেয়েছে। দুই দলেরই একটি করে ম্যাচ বাকি আছে। দুই দলই সিরিজের সেরা দল স্বাগতিক বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলবে। বাংলাদেশ আগেই বোনাস পয়েন্টসহ দুই ম্যাচ জিতে ১০ পয়েন্ট নিয়ে ফাইনালে খেলা নিশ্চিত করে রেখেছে। মঙ্গলবার বাংলাদেশ ও জিম্বাবুইয়ে খেলা হবে। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা খেলা হবে। বাংলাদেশের কাছে দুই দলই যদি হারে কিংবা দুই দলই যদি জিতে তাহলে শ্রীলঙ্কার ফাইনালে খেলার সম্ভাবনা থাকছে। আবার জিম্বাবুইয়েরও সেই আশা থাকছে। তখন রানরেটের ওপরই সব নির্ভর করবে। যদি বাংলাদেশের বিপক্ষে জিম্বাবুইয়ে হারে, শ্রীলঙ্কা জিতে; তাহলে লঙ্কানরাই ফাইনালে খেলবে। সেই সম্ভাবনা টিকে আছে। সেই সম্ভাবনা জিম্বাবুইয়েকে হারিয়ে টিকিয়ে রেখেছে শ্রীলঙ্কা। রবিবার জিম্বাবুইয়ের কাছে হারলেই সিরিজ থেকে বিদায় ঘটত। এমন ম্যাচে এসে জ্বলে উঠেছে শ্রীলঙ্কা। জিতে ফাইনাল রেসে টিকে থাকল তারা। শ্রীলঙ্কার যে বাজে সময় যাচ্ছে তাতে মনে হয়েছে জিম্বাবুইয়ের কাছে হেরেও যেতে পারে। গত বছর ২৮ ম্যাচ খেলে যে দল ৫টিতে মাত্র জিততে পারে, তাদের বেহাল দশা বোঝাই যাচ্ছে। আবার জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে এর আগে টানা তিন ম্যাচেই হারে শ্রীলঙ্কা। ওয়ানডে ক্রিকেটে সর্বনিম্ন ৩৫ রান করা দল জিম্বাবুইয়ে। ২০০৪ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেই এত কম রানে অলআউট হয়েছে। এর আগে ২০০১ সালেও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৩৮ রানে গুটিয়ে গেছে। এমন দলই কিনা শ্রীলঙ্কার জন্য এখন হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। গত বছর এক পর্যায়ে গিয়ে টানা ১২ ওয়ানডে হেরেছে শ্রীলঙ্কা। এরপর ১টি ওয়ানডে জেতার পর এবার ত্রিদেশীয় সিরিজে জেতা পর্যন্ত আবার টানা ৪ ম্যাচে হেরেছে শ্রীলঙ্কা। জিম্বাবুইয়ের কাছে ত্রিদেশীয় সিরিজেও প্রথম ম্যাচে হেরেছে। চন্দিকা হাতুরাসিংহে দলের কোচের দায়িত্ব নেয়ার পরও খারাপ অবস্থা থেকে বের হতে পারছিল না শ্রীলঙ্কা। অবশেষে যেন বের হলো। জিম্বাবুইয়েকে হারিয়েই সেই হারের গোলকধাঁধা থেকে যেন মুক্ত হলো। সিরিজে টিকে থাকার সঙ্গে ফাইনালে ওঠার রেসেও টিকে থাকল শ্রীলঙ্কা।
×