ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

কাবুল ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে জঙ্গী হামলা

প্রকাশিত: ০৪:২৮, ২২ জানুয়ারি ২০১৮

কাবুল ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে জঙ্গী হামলা

আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে ১২ ঘণ্টা অভিযান চালিয়ে একটি হোটেল অস্ত্রধারী মুক্ত করা হয়েছে। এতে দুই বন্দুকধারীসহ ৬ জন নিহত হয়েছে। ভবনটির অংশ বিশেষে আগুন ধরে গেছে। তাৎক্ষণিকভাবে কোন গোষ্ঠী বা সংগঠন এ হামলার দায়িত্ব স্বীকার করেনি। এএফপি। কাবুলের ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে বন্দুকধারীদের হামলায় অন্তত ছয় জন নিহত হয়েছে। তারা ১২ ঘণ্টা হোটেলটি অবরোধ করে রাখে। রবিবার দেশটির কর্মকর্তারা একথা জানিয়েছেন। আফগান গোয়েন্দা সংস্থার একজন কর্মকর্তা জানান, ‘এই ঘটনায় ছয় জন নিহত হয়েছে।’ নিহতদের মধ্যে পাঁচ জনই আফগান এবং একজন বিদেশী নাগরিক। তিনি আরও বলেন, হোটেলে অবস্থানরত দেড় শ’ জনকে নিরাপদ অবস্থায় মুক্ত করা হয়েছে। আফগান নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে দুই হামলাকারী নিহত হয়। হোটেলের সর্বোচ্চ তলা থেকে অগ্নিশিখা ও ঘন কালো ধোঁয়া বের হতে দেখা যায়। ভেতরে থাকা লোকজন বের হয়ে ওপর তলার ব্যালকনিতে গিয়ে জড়ো হয়। তাদের মধ্যে একজন ব্যালকনি দিয়ে বিছানার চাদরকে দড়ির মতো ব্যবহার করে নামতে গিয়ে নিচে পড়ে যেতে দেখা গেছে। শনিবার রাতে চার হামলাকারী হোটেলে হামলা চালায়। এ সময় তারা অতিথি ও স্টাফদের লক্ষ্য করে নির্বিচারে গুলি করে এবং বিদেশীসহ বেশ কয়েকজনকে জিম্মি করে। তারা হালকা অস্ত্রশস্ত্র ও গ্রেনেড নিয়ে ঢুকেছিল। এ ঘটনায় নিহত একমাত্র বিদেশী একজন নারী। ষষ্ঠ তলা থেকে তার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। হামলাকারী দুই বন্দুকধারীর লাশও ওই ফ্লোরে পাওয়া যায়। যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তানে বিদেশীদের অন্যতম আবাসস্থল হোটেল। এসব হোটেলে আক্রমণ হতে পারে এমন সতর্ক বার্তা কিছুদিন ধরেই দেয়া হচ্ছিল। হামলার সময় হোটেলের ভেতর কত লোক ছিল তা নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি। ২০১১ সালে তালেবান ওই হোটেলে একবার হামলা চালিয়েছিল। তবে শনিবারের হামলার জন্য কোন জঙ্গী গ্রুপ এখন পর্যন্ত দায় স্বীকার করেনি। হোটেলটি কাবুলের একটি পরিচিতিমূলক স্থাপনা। শনিবার রাতে হামলার পর আফগান নিরাপত্তা বাহিনীর বিশেষ ইউনিটের সদস্যদের হেলিকপ্টারে করে ভবনের ছাদে নামানো হয় বলে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নাসরাত রাহিমি জানিয়েছেন। আফগান টেলিকমের আঞ্চলিক পরিচালক আজিজ তৈয়ব ওই হোটেলে ছিলেন। তিনি বলেছেন, ‘আমি বেরিয়ে যাওয়ার সময় বন্দুকধারীদের ঢুকতে দেখেছি।’ তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক একটি সম্মেলনে যোগ দিতে তিনি তখন ওই হোটেলে অবস্থান করছিলেন। সম্মেলন, রাজনৈতিক আলোচনা ও বিয়ের অনুষ্ঠানের ভেন্যু হিসেবে হোটেলটির খ্যাতি রয়েছে। পাহাড়ী এলাকায় অবস্থিত ওই হোটেল থেকে শহরের অনেকটা অংশ দেখা যায়। তৈয়ব বলছিলেন,‘মুহূর্তের মধ্যে সব ওলট পালট হয়ে যায়, দুজন লোক বুলেটবিদ্ধ হয়ে মাটিতে পড়ে। সব মিলিয়ে হুলস্থুল কান্ড শুরু হয়।’ আব্দুস সাত্তার নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, তিনি টেলিফোনে জানতে পেরেছেন তার ক’জন হোটেল কর্মী বন্ধু সেখানে আটকা পড়েছেন। নৈশ খাবারের ঠিক আগে বন্দুকধারীরা সেখানে ঢুকে গুলি চালাতে শুরু করে। তারা সেখানে কয়েকজনকে জিম্মি করে। এর আগে ২০১৪ সালের মার্চে কাবুলের অভিজাত হোটেল সেরেনায় কজন কিশোর বন্দুকধারী অনুরূপ হামলা চালিয়েছিল। ওই হামলায় এএফপির সংবাদদাতাসহ নয় জন নিহত হয়েছিলেন। ২০১১ সালের জুনে কাবুলের ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে তালেবান বন্দুকধারীদের হামলায় ১০ জন বেসামরিক লোকসহ মোট ২১ জন নিহত হয়েছিলেন। কাবুলের হোটেলগুলোতে এ ধরনের হামলা হতে পারে বলে কয়েকদিন আগেই স্থানীয় মার্কিন দূতাবাস সতর্ক করেছিল।
×