ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

পদাতিক নাট্য সংসদের চার দশকের আনন্দানুষ্ঠান

প্রকাশিত: ০৪:৪২, ২১ জানুয়ারি ২০১৮

পদাতিক নাট্য সংসদের চার দশকের আনন্দানুষ্ঠান

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নাটক মানেই নিছক বিনোদন নয়। হতে পারে সমাজ বদলের হাতিয়ার। সেই অঙ্গীকার থেকেই ১৯৭৮ সালের ২১ জানুয়ারি যাত্রা শুরু করে পদাতিক নাট্য সংসদ। ‘নাটক হোক জীবন যুদ্ধের হাতিয়ার/নাটক হোক জীবনের প্রকাশিত সত্য’ সেøাগানে পথচলা নাট্য দলটি এ বছর পদার্পণ করল প্রতিষ্ঠার চার দশক। ৪০ বছরের নিরবচ্ছিন্ন নাট্যচর্চার সাফল্যময় সেই উদ্যাপন হলো শনিবার। নৃত্য-গীত ও কবিতার শিল্পিত উচ্চারণের সঙ্গে বের হলো বর্ণিল শোভাযাত্রা। পরিবেশিত হলো দলটির মঞ্চস্থ নাটকের কোলাজ। শীতল সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালায় এ আনন্দানুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেই আনন্দ আয়োজনে প্রদান করা হয় দলের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য আবু মোহাম্মদ মুরতাইশ কচির নামাঙ্কিত ‘কচি স্মৃতি সম্মাননা স্মারক’। সংস্কৃতি অঙ্গনে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এ সম্মাননা পেয়েছেন নাট্যজন আলী যাকের ও রবীন্দ্র সঙ্গীতশিল্পী নার্গিস চৌধুরী এবং আইন পেশায় অবদানের জন্য বিচারপতি কাজী এবাদুল হক ও সিরাজুল ইসলাম খান (মরণোত্তর )। জাতীয় নাট্যশালার প্রধান মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। বিশেষ অতিথি ছিলেন আইটিআই বাংলাদেশ কেন্দ্রের সহসভাপতি অধ্যাপক আবদুস সেলিম, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক হাসান আরিফ, গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের সভাপতিম-লীর সদস্য ঝুনা চৌধুরী ও পথনাটক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আহাম্মেদ গিয়াস। সভাপতিত্ব করেন দলপ্রধান সেলিম শামসুল হুদা চৌধুরী। উদ্বোধনী আনুষ্ঠানিকতা শেষে পরিবেশিত হয় পদাতিক মঞ্চায়িত বিভিন্ন নাটকের অংশবিশেষ নিয়ে কোলাজ। নাটকের মধ্যে ছিল ‘জলবালিকা’, ‘পোড়ামাটি’, ‘সে’, ‘সোজন বাঁদিয়ার ঘাট’ ইত্যাদি। এর আগে বিকেলে শিল্পকলা একাডেমি থেকে বের করা হয় আনন্দ শোভাযাত্রা। রঙিন পোশাকের সঙ্গে বাদ্যযন্ত্রসহযোগে নাট্যদলটির সদস্যরা নেচে-গেয়ে প্রাণবন্ত করে তোলে সে শোভাযাত্রা। জাতীয় নাট্যশালার সামনের উন্মুক্ত মঞ্চে ছিল নাচ-গান ও কবিতায় সজ্জিত বৈচিত্র্যময় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এতে দলীয় সঙ্গীত পরিবেশন করে স্বভূমি লেখক-শিল্পী কেন্দ্র, সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠী, ক্রান্তি শিল্পীগোষ্ঠী পদাতিক সঙ্গীত সংসদ। একক কণ্ঠে গান শোনান ফাহিম হোসেন চৌধুরী ও বিমান চন্দ্র রায়। কবিতার শিল্পিত উচ্চারণে একক আবৃত্তি পরিবেশন করেন সেলিম দূরানী বিশ্বাস, আবেদিন হক আদি ও আবদুল কাইয়ূম। দলীয় আবৃত্তি পরিবেশন করে স্বরশ্রুতির বাচিকশিল্পীরা। সম্মেলক নৃত্য পরিবেশন করে নৃত্যনন্দন, স্পন্দন, নৃত্যম ও অঙ্গীকামের শিল্পীরা। এছাড়াও জাতীয় নাট্যশালার লবিতে ছিল পদাতিকের ৪০ বছরের মঞ্চস্থ নাটকের ছবির প্রদর্শনী। ‘আনা ফ্রাঙ্ক : এ হিস্টোরি ফর টুডে’ ॥ দ্বিতীয় বিশ^যুদ্ধের সময়কালীন যে কাহিনীটি সারা বিশ^ মানবতাকে নাড়া দেয় তা হলো আনা ফ্রাঙ্ক। তেরো বছর বয়সী আনা ফ্রাঙ্ক তার ডায়েরিতে সেই সময়ের নানা স্মৃতিকথা ও ভয়াবহতার কথা লিখেছিলেন। গোপন আস্তানায় পালিয়ে থাকার সময় থেকে শুরু করে জার্মানির বারগান বেলসন বন্দী শিবিরে ১৫ বছর বয়সে ১৯৪৫ সালে মারা যাওয়ার আগ পর্যন্ত নানা কথা ডায়েরিতে লেখেন আনা ফ্রাঙ্ক। মৃত্যুপুরী থেকে ফিরতে পেরেছিলেন একমাত্র তার বাবা অটো ফ্রাঙ্ক। তিনিই প্রকাশ করেন ‘আনা ফ্রাঙ্কের ডায়েরি’ নামে আনার স্মৃতিকথা। সেই আনা ফ্রাঙ্ককে নিয়েই আগারগাঁওয়ের মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে শুরু হলো ‘আনা ফ্রাঙ্ক : এ হিস্টোরি ফর টুডে’ শীর্ষক বিশেষ আলোকচিত্র প্রদর্শনী। শনিবার সকালে প্রদর্শনীটি যৌথভাবে উদ্বোধন করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী এবং ঢাকায় নিযুক্ত নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদূত লিওনি কুলেনার। উদ্বোধনী পর্বে বক্তব্য দেন নেদারল্যান্ডসে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ বেলাল, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টিবোর্ডের সদস্য জিয়াউদ্দিন তারিক আলী, সিগাল ফাউন্ডেশনের মিনা মালহোত্রা এবং আনা ফ্রাঙ্ক হাউস প্রতিনিধি প্রিয়া মাচাদো এবং লুস সিংগেলস, প্রদর্শনীর অন্যতম আয়োজক কাউন্টার ফটোর চেয়ারম্যান খন্দকার বজলুল হক, অধ্যক্ষ সাইফুল হক অমি, কাউন্টার ফটোর গ্লোবাল কো-অর্ডিনেটর সোহান রাহাত। আনা ফ্রাঙ্ক হাউস আয়োজিত এ প্রদর্শনী ও কর্মশালার আয়োজনে সার্বিক সহযোগিতা করেছে কাউন্টার ফটো ও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর। পৃথক সংস্কৃতি ক্যাডার গঠনের ঘোষণা সংস্কৃতিমন্ত্রীর ॥ সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর বলেছেন, প্রতœতত্ত্ব অধিদফতর, জাতীয় জাদুঘর, শিল্পকলা একাডেমিসহ সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীন বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান বিশেষায়িত ধরনের। সাধারণ বা প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাগণ এ ধরনের বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠানকে যুগোপযোগী ও দক্ষতার সঙ্গে পরিচালনা করতে সক্ষম নন। শনিবার সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে ন্যাশনাল লাইব্রেরি মিলনায়তনে বঙ্গীয় শিল্পকলা চর্চার আন্তর্জাতিক কেন্দ্র আয়োজিত ২য় গ্রন্থ প্রদান অনুষ্ঠান ও ‘বঙ্গীয় শিল্পকলা চর্চায় গবেষণা গ্রন্থ সঙ্কট’ শীর্ষক আলোচনা সভার প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
×