ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সমানাধিকার নিশ্চিতের তাগিদ

প্রকাশিত: ০৬:২৯, ২০ জানুয়ারি ২০১৮

জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সমানাধিকার নিশ্চিতের তাগিদ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সংবিধান অনুযায়ী জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলের সমান অধিকার নিশ্চিতের তাগিদ দিয়েছেন মানবাধিকার কর্মী সুলতানা কামাল। শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত বাংলাদেশ মহিলা ঐক্য পরিষদের দ্বিতীয় ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ তাগিদ দেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ক্রমেই যেন সঙ্কুচিত হয়ে আসছে। বিভিন্ন ধর্মের বিভিন্ন বিশ্বাসের মানুষ মনে করছেন, বাংলাদেশ তাদের সমান অধিকার দিচ্ছে না তাদের মর্যাদার হানি হচ্ছে। কিন্তু সংবিধান অনুসারে প্রতিটি নাগরিক সমান অধিকারের অংশীদার। এ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল বলেন, ‘দেশে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে প্রতিটি নাগরিকের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। প্রতিটি নাগরিক সমান অধিকারের ভাগীদার। এটা সংবিধানে বলা আছে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, একটি বিশেষ গোষ্ঠীর দুর্বৃত্তায়নের ফলে কখনও কখনও রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায়, কিংবা আজকে রাজনীতির যে বিশেষ চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য দেখা যাচ্ছে, সেটার কারণে বাংলাদেশ যেন ক্রমেই সঙ্কুচিত হয়ে আসছে।’ মহিলা ঐক্য পরিষদের সম্মেলনে বাংলাদেশ মহিলা ঐক্য পরিষদের দ্বিতীয় ত্রি-বার্ষিক প্রতিবেদন পাঠ করা হয়। প্রতিবেদনে গত তিন বছরে সংখ্যালঘু (ধর্মীয় ও জাতিগত) জনগোষ্ঠীর ওপর সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের চিত্র তুলে ধরা হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৭ সালে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ৮২ জন খুন হয়েছে। প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা ২২৮টি, শ্মশান ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের সম্পত্তি দখলের ঘটনা ২৭টি, গণধর্ষণ ১৫টি ও ২১ জন নিখোঁজ হয়েছেন। তিনি বলেন, ‘গত তিন বছরে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রীস্টান সংখ্যালঘুদের ওপর নানা ধরনের অত্যাচার করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ড থেকে শুরু করে ধর্ষণ, বাড়িঘরে হামলা, অগ্নিসংযোগ, মন্দির-গির্জা-উপাসনালয় ঘিরে ফেলা, হুমকি দেয়া, দেশ ছাড়তে বাধ্য করা, ধর্মান্তরিত করা, হয়রানিমূলক আচরণ করাসহ গরুর মাংস খাওয়ানোর মতো হীন আচরণ পর্যন্ত তাদের সঙ্গে করা হয়েছে।’ এমন ঘটনা প্রতিদিন গড়ে তিন থেকে পাঁচটি ঘটেছে। সব মিলিয়ে গত বছর এক হাজার চারটি ঘটনা ঘটে। ঘটনাগুলোর নৃশংসতা অত্যন্ত বর্বরোচিত বলেও তিনি মন্তব্য করেন। সুলতানা কামাল বলেন, ‘দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়, ঘটনাগুলোর কোন রকমের কার্যকর বিচার এখনও হয়নি। যদি বিচার হতো, কোনও দীর্ঘসূত্রতা না থাকত, যদি সত্যিকার অর্থে অপরাধীদের চিহ্নিত করে যথাসময়ে শাস্তির আওতায় আনা হতো, তাহলে এই ঘটনাগুলো এত ব্যাপকহারে ছড়িয়ে যেতে পারত না। রাষ্ট্রের যে ভূমিকা ছিল সেভাবে তা পালন করেনি।’ নারীরা সচেতন হলে সেই সংগ্রাম আন্দোলন অনেক বেশি বেগবান হয় বলেও মন্তব্য করেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের এই সাবেক উপদেষ্টা।
×