ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

পদ্মা সেতুর দ্বিতীয় স্প্যান উঠছে রবিবার

প্রকাশিত: ০৭:৫৫, ১৯ জানুয়ারি ২০১৮

পদ্মা সেতুর দ্বিতীয় স্প্যান উঠছে রবিবার

স্টাফ রিপোর্টার, মুন্সীগঞ্জ ॥ আজ শুক্রবার পদ্মা সেতুর দ্বিতীয় স্প্যান নিয়ে যাওয়া হচ্ছে জাজিরা প্রান্তে। আগামী ২১ জানুয়ারি এটি খুঁটির উপর বসানোর টার্গেট রয়েছে কর্তৃপক্ষের। এ লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় স্প্যানটি মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ের কুমারভোগ পদ্মা সেতুর ওয়ার্কশপ থেকে ভাসমান ক্রেনে তোলা হয়েছে। আজ এটি রওনা হয়ে দু-একদিনের মধ্যে নির্দিষ্ট খুঁটির কাছে পৌঁছাবে। আগামী ২১ জানুয়ারি স্প্যানটি পিলারের উপর বসানোর পরিকল্পনা নিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। তবে তা ২-১ দিন এদিক সেদিক হতেও পারে। সেতুর পাইল স্থাপন চলছে হরদম। এ পর্যন্ত পদ্মা সেতুর ৮৮টি পাইল বসে গেছে। বটম পাইল হয়েছে আরও ১০টি। দায়িত্বশীল প্রকৌশলীরা জানিয়েছেন, এ পর্যন্ত মূল সেতুর ৫৫ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। তবে ইতোমধ্যে ৭৩ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল। নানা চ্যালেঞ্জ ও প্রকৃতিক দুর্যোগের কারণে পিছিয়ে রয়েছে ১৮ শতাংশ কাজ। তবে তা পুষিয়ে নিতে কাজের গতি বেড়েছে কয়েকগুণ। যোগ হয়েছে আরও একটি হ্যামার। এ নিয়ে মোট ৪টি হ্যামার পদ্মা সেতুর জন্য নিয়ে আসা হলেও কাজ করছে ৩টি হ্যামার। এর আগে মাত্র ১টি হ্যামার দিয়ে কাজ করার কাজের গতি ছিল ধীর। আর এখন পদ্মার এপার ওপার দুপারেরই সেতুর কাজ চলছে সমান তালে। পদ্মা সেতুর প্রকল্প পরিচালক শফিকুল ইসলাম জানান, ১৪টি পিলারের ডিজাইন সংশ্লিষ্টরা কাজ করছে। পদ্মার তলদেশে মাটির বৈচিত্রতার কারণেই এ ডিজাইন চূড়ান্ত করতে সময় লাগছে। সংশ্লিষ্টদের সাথে আলাপ করে জানা যায়, গত ডিসেম্বরে একটি এবং জানুয়ারিতে আরও একটি মোট ২টি স্প্যান দু’মাসে পদ্মা সেতুতে যোগ করার কথা ছিল। এমন টার্গেট থাকলেও নানা কারণেই সম্ভব হয়নি। বিশেষ করে শীতকালে পলি জমে নদীর তলদেশের গভীরতা কমে যাওয়ায় স্প্যানবাহী ভাসমান ক্রেনটি চলাচল করতে নানা সমস্যা হচ্ছিল। তবে তিনটি ড্রেজার দিয়ে কৃত্রিমভাবে দিনরাত কাজ করে চলেছে নদীর গভীরতা বাড়াতে। পদ্মা এখন শান্ত। বর্ষায় প্রমত্তা নদীতে তীব্র স্রোতের কারণে কাজ করা হয়ে পড়ে দুরূহ। তাই সেতুর কাজে গতি আনতে শুকনো মৌসুমকেই মোক্ষম সময় ধরে নেয়া হয়। তবে ঘটছে ঠিক উল্টোটা। এখন তেমন স্রোত না থাকায় নদীর তলদেশে জমছে পলি। সাধারণত নদীতে ভারি যানবাহন চলাচলের জন্য ৫ মিটার গভীরতা প্রয়োজন হলেও সেটা কমে এসেছে প্রায় ৩ মিটারে। ড্রেজিং করে এখন প্রয়োজনীয় গভীরতার সৃষ্টি করা হয়েছে। তাই আজ শুক্রবার মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ের কুমারভোগ কনস্ট্রকশন ইয়ার্ড থেকে স্প্যান নিয়ে ভাসমান ক্রেনটি রওনা হবে জাজিরা প্রান্তের ৩৮নং পিরারের উদ্দেশে। এছাড়া পিলারের সঙ্গে স্প্যান জোড়া দেয়ার জন্য সিমেন্টের মিশ্রণে তৈরি গ্রাউটিংয়ে সমস্যা দেখা দেয়ায় সমাধানে পেরে উঠছিলেন না ভারতের প্রকৌশলীরা। চীনের প্রকৌশলীরা এখন চেষ্টা করে এই সমস্যাও সমাধানের দিকে নিয়ে এসেছে। গ্রাউটিং এখন আর ফাটছে না। পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের দায়িত্বশীল একজন প্রকৌশলী জানান, স্প্যান বসানোর জন্য সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে। স্প্যান বহনকারী ভাসমান ক্রেনটি চলাচল ও নদীপথটি নাব্য রাখার জন্য তিনটা ড্রেজার কাজ করছে। এ পর্যন্ত মূল সেতুর কাজ ৫৫ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। ছোট কিছু কাজের জন্য ৩৯-৪০ নম্বর স্প্যানগুলো বসাতে দেরি হচ্ছে বলে তিনি নিশ্চিত করেন।
×