ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

বিচিত্র তথ্য ॥ নিজে নিজেই মেরামত হবে রাস্তা!

প্রকাশিত: ০৭:০৫, ১৯ জানুয়ারি ২০১৮

বিচিত্র তথ্য ॥ নিজে নিজেই মেরামত হবে রাস্তা!

এই সেদিনই ঠিক করল! এখন এ অবস্থা!’ রাস্তায় বেরুলে এমনটা অনেকই বলেন। কত টাকা-পয়সা খরচ করে, দিনের পরদিন সাধারণ মানুষ শত ভোগান্তি সহ্য করে চায় ভাল একটা রাস্তা তবুও হোক। কিন্তু কিছুদিন না যেতে রাস্তার হাল সবাইকে বেহাল করে দেয়। প্রায় প্রতিটা দেশের বার্ষিক বাজেটের বিরাট এক অংশজুড়ে থাকে তাই রাস্তা-ঘাট মেরামত করার সম্ভাব্য খরচ। আমাদের দেশেও এর বিকল্প হয় না কখনও। তবে অদূর ভবিষ্যতে হয়ত এমনটার আর দরকার পড়বে না। প্রযুক্তির উৎকর্ষের যুগে রাস্তা তৈরি হবে এমন সব উপাদান দিয়ে যেগুলোর জন্য মেরামতের খরচ বরাদ্দের দরকারই পড়বে না। এমন সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে ইতোমধ্যেই। আর যিনি এমন সম্ভাবনার সৃষ্টি করেছেন তিনি একজন ভারতীয় প্রকৌশলী এবং অধ্যাপক। তিনি এমন এক প্রযুক্তিরই উদ্ভাবন করেছেন যা দিয়ে রাস্তা বানালে বছর পেরুলেও বেহাল হবে না রাস্তা। রাস্তার যেখানে যখন খানাখন্দ দেখা দেবে, রাস্তা নিজে নিজেই সেখানে মেরামত করে নেবে। নাগপুরের নেমকুমার বান্টিয়া নামের এই ভারতীয় ২০০৬ সাল থেকে কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক। দীর্ঘ ৩৪ বছর ধরে কানাডায় বসবাস করছেন। সেখানেই এই বিষয় নিয়ে তিনি গবেষণা শুরু করেন, তাতে সাফল্যও এসেছে বলে দাবি এই অধ্যাপকের। সম্প্রতি ব্যাঙ্গালুরুর একটি গ্রামে এই রাস্তা তৈরির কাজও শুরু হয়েছে। নেমকুমার জানিয়েছেন, পরিবেশবান্ধব এই পদ্ধতি রাস্তা নির্মাণের সময় যেমন পরিবেশ দূষণ আটকাবে তেমনই এই অভিনব পদ্ধতির জন্য বহু অর্থ ব্যয়ের প্রয়োজন হবে না। রাস্তাটি তৈরি হচ্ছে হাইড্রোফিলিক ফাইবার ন্যানো কোটিং দিয়ে। যার ফলে ভাঙা বা ফাটল নিজে নিজেই মেরামত হবে। এ ধরনের রাস্তায় নির্মাণসামগ্রীর সঙ্গে এক ধরনের কৃত্রিম তন্তু মিশিয়ে দেয়া হবে। এই কৃত্রিম তন্তুর বৈশিষ্ট্য হলো পানি পেলে এটি নিজে নিজেই বংশবৃদ্ধি করে। হাইড্রোফিলিয়া ন্যানো কোটিং দেয়া তন্তু পানিকে আকৃষ্ট করে এবং এই পানির সংস্পর্শেই অতিরিক্ত সিলিকেট তৈরি হয়। যে কারণে রাস্তায় কোন ফাটল হলেই সেখানে পানি জমবে। আর পানি জমলেই সেখানে জন্মাতে থাকবে সিলিকেট। তাতেই সময়মতো মেরামত হয়ে যাবে রাস্তা। নেমকুমারের অভিমত, ১৫ বছরেরও বেশি স্থায়ী হবে এই রাস্তা। পরীক্ষামূলকভাবে করা রাস্তায় এর মধ্যেই তিনি সাফল্য পেয়েছেন বলে জানিয়েছে। শীঘ্রই তিনি ভারতসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশেও তার এই আবিষ্কার নিয়ে হাজির হবেন। তখন আর সরকারকে কাড়ি কাড়ি টাকা বাজেটে বরাদ্দ রাখতে হবে না। সময় শ্রম দিতে হবে না। মানুষেরও ভোগান্তি কমে যাবে ভাল রাস্তা পেয়ে। নেমকুমার আশাবাদী তার এই আবিষ্কারের ফলে পৃথিবী থেকে পরিবেশ দূষণ আর সম্পদের অপচয় কমে যাবে বহুগুণ। সাত-সতেরো প্রতিবেদক
×