ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ট্রাম্পের অভব্য মন্তব্য ॥ বৈঠকে বসছেন আফ্রিকার রাষ্ট্রদূতরা

প্রকাশিত: ০৬:৩৮, ১৯ জানুয়ারি ২০১৮

ট্রাম্পের অভব্য মন্তব্য ॥ বৈঠকে বসছেন আফ্রিকার রাষ্ট্রদূতরা

যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতরা সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের করা বিতর্কিত মন্তব্যের জবাব দিতে আলোচনার জন্য আগামী সপ্তাহে এক বৈঠকে মিলিত হতে যাচ্ছেন। ট্রাম্প ওভাল অফিসের ওই বৈঠকে হাইতি, মধ্য আমেরিকান ও আফ্রিকান দেশ এবং জাতিসমূহকে ‘নোংরা (শিটহোল)’ বলে আখ্যায়িত করেন। বেশ কয়েকজন আফ্রিকান কূটনীতিক একথা জানিয়েছেন। ফরেন পলিসি। ট্রাম্প আইনপ্রণেতাদের সঙ্গে ওভাল অফিসের ওই বৈঠকে মধ্য আমেরিকা ও আফ্রিকা থেকে আসা অভিবাসীদের বিদ্রুপ করে বারবার বলেন, আমরা কেন ওইসব ‘নোংরা দেশ’ থেকে লোকজনকে এখানে আসতে দিচ্ছি? এক সাক্ষাতকারে যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত আফ্রিকান ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত আরিকানা চিহোমবরি- কোয়া বলেন, আমি ট্রাম্পের ওই মন্তব্যকে অপমানজনক, দায়িত্বজ্ঞানহীন ও ভীষণ হতাশাজনক হিসেবে দেখছি। চিহোমবিয়া ও নাম প্রকাশ না করার শর্তে অন্য কয়েকজন আফ্রিকান কূটনীতিক বলেন, তারা আগামী সপ্তাহে ট্রাম্পের করা মন্তব্যের জবাব দিতে আলোচনার জন্য ওয়াশিংটনে আফ্রিকান কূটনীতিকদের এক বৈঠকে মিলিত হতে যাচ্ছেন। কূটনৈতিক উপায়ে কিভাবে জবাব দেয়া যায় তা নির্ধারণ করতে গত শুক্রবার বিকেলে নিউইয়র্কে আফ্রিকান রাষ্ট্রদূতরা নিজেদের এক জরুরী অধিবেশনে মিলিত হন। আফ্রিকান কূটনীতিক ও বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেন, ট্রাম্পের ওই মন্তব্য আফ্রিকায় যুক্তরাষ্ট্রের কূটনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে যখন তা ট্রাম্প প্রশাসনের অধীনে একটা আকৃতি পেতে শুরু করেছে এবং চীন মহাদেশটিতে তাদের বিনিয়োগ ও প্রভাব বাড়িয়ে চলেছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন আগামী মাসে যত দ্রুত সম্ভব তার প্রথম আফ্রিকা সফরের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন। স্টেট ডিপার্টমেন্টের এক কর্মকর্তার মতে, টিলারসন তার প্রথম আফ্রিকা সফরে এ্যাঙ্গোলা ও কেনিয়া সফরের পরিকল্পনা করছেন। যদিও তার এ সফরের বিষয়টি এখনও নিশ্চিত করা হয়নি। তবুও আফ্রিকান কূটনীতিকরা ইতোমধ্যে বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাদের হতাশা প্রকাশ করেছেন যেখানে আকস্মিকভাবে আফ্রিকা বড় গল্প হয়েছে। ট্রাম্পের ওই মন্তব্যের কারণে মহাদেশটি যেসব গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুর সন্মুখীন তা আড়ালে চলে গেছে এবং য্ক্তুরাষ্ট্র প্রায়ই এগুলো অবজ্ঞা করে থাকে বলে কেউ কেউ বলেছেন। দক্ষিণ সুদান, নাইজেরিয়া ও সোমালিয়ার দুর্ভিক্ষ, দক্ষিণ সুদানের নৃশংস গৃহযুদ্ধ, সাহেলের বর্ধিত সন্ত্রাসবাদের হুমকি এবং মধ্য আফ্রিকার মানবিক সঙ্কট এগুলোর মধ্যে অন্যতম। চিহোমবরি আরও চিহ্নিত করেন যে, যখন আফ্রিকাকে পশ্চিমা গণমাধ্যমে নেতিবাচকভাবে উপস্থাপন করা হয় তখন বিশ্বের মধ্যে এই মহাদেশটিরই রয়েছে দ্রুত-বর্ধনশীল মধ্যবিত্ত শ্রেণী, বিশ্বের ১০টি দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির মধ্যে ৫টি এবং ৯ জন নারী সরকার ও রাষ্ট্র প্রধান। তবে কেউ কেউ বলেছেন, ট্রাম্পের ওই মন্তব্যের ফলে আফ্রিকা ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কে কোন প্রভাব পড়বে না।
×