ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

গরিব লঙ্গরখানায় যাচ্ছে, এমন দৃশ্য আর দেখতে হবে না

প্রকাশিত: ০৫:৪০, ১৯ জানুয়ারি ২০১৮

গরিব লঙ্গরখানায় যাচ্ছে, এমন দৃশ্য আর দেখতে হবে না

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তাঁর সরকার কেবল রংপুরকে সিটি কর্পোরেশন ঘোষণা করে নাই, একে বিভাগ হিসেবে ঘোষণা করেছে এবং রংপুরের সার্বিক উন্নয়নে ব্যাপক পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে। মঙ্গার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ অঞ্চলে একদা মঙ্গা জনগণের দুঃখের কারণ থাকলেও বর্তমান সরকার এই মঙ্গা দূর করতে সক্ষম হয়েছে। এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দরিদ্র জনগণ লঙ্গরখানায় যাচ্ছে, ভবিষ্যতে এই দৃশ্য আর দেখতে হবে না। রংপুর সিটি কর্পোরেশনের নব নির্বাচিত মেয়র মোস্তাফিজার রহমানের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার সকালে তাঁর তেজগাঁওস্থ কার্যালয়ে এ শপথবাক্য পাঠ করান। এলজিআরডি এবং সমবায়মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন, প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ এবং এলজিআরডি ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী মশিউর রহমান রাঙ্গা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। -খবর বাসসর এলজিআরডি এবং সমবায় মন্ত্রণালয়ের সচিব আব্দুল মালেক শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন। পরে, নব নির্বাচিত ৩৩ জন ওয়ার্ড কাউন্সিলর এবং ১১ জন সংরক্ষিত মহিলা আসনের কাউন্সিলররাও অনুষ্ঠানে শপথ গ্রহণ করেন। এলজিআরডি এবং সমবায়মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন তাদেরকে শপথবাক্য পাঠ করান। প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে নব নির্বাচিত মেয়র এবং কাউন্সিলরদের স্থানীয় জনগণকে তাদের কাক্সিক্ষত সেবা প্রদানের আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলে ২০ প্রতিষ্ঠানের অনুদান ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলে ২০ সরকারী ও বেসরকারী প্রতিষ্ঠান এবং ব্যক্তিবর্গের কাছ থেকে অনুদানের অর্থ এবং অনুদান হিসেবে প্রদত্ত কম্বল গ্রহণ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী বৃহস্পতিবার দুপুরে তাঁর তেজগাঁওস্থ কার্যালয়ে ৪ কোটি ২৫ লাখ টাকা অনুদানের চেক এবং ৫ হাজার পিস কম্বল গ্রহণ করেন। অনুদানের চেক প্রদানকারীরা হচ্ছেন- মৎস ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি), ইউএনডিপি’র কান্ট্রি ডিরেক্টর সুদীপ্ত মুখার্জি, ফরেন অফিস স্পাউজ এ্যাসোসিয়েশন (এফওএসএ), বাংলাদেশ প্রেট্রোলিয়াম ট্যান্কার্স ওউনার্স এ্যাসোসিয়েশন, হোসাফ গ্রুপ, এইচটিএমএস লিমিটেড, শিপার্স কাউন্সিল অব বাংলাদেশ, হামদর্দ ল্যাবরেটরিজ, বাংলাদেশ টয় মার্চেন্ট ম্যানুফ্যাকচারিং এসোসিয়েশন, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালুমনাই এ্যাসোসিয়েশন, সুরাইয়া ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড কোম্পানী, বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অফিসার্স এ্যাসোসিয়েশন, সানি ডেল স্কুল এবং গুলশান জগার্স সোসাইটি। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব নজিবুর রহমান এবং প্রেস সচিব ইহসানুল করিম এ সময় উপস্থিত ছিলেন। পরে, বঙ্গবন্ধু টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার্স এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এবং জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মাদ মোজাফ্ফর হোসেন প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলে ৫ হাজার পিস কম্বল প্রদান করেন। ওপেক বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক সম্প্রসারণে আগ্রহী ॥ ওপেক ফান্ড ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট (ওএফআইডি)-এর মহাপরিচালক ও সিইও সুলেইমান জাসির আল হারবিশ বলেছেন, ওপেক বাংলাদেশের সঙ্গে সহযোগিতা সম্প্রসারিত করতে চায়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৃহস্পতিবার তাঁর তেজগাঁও কার্যালয়ে এক সৌজন্য সাক্ষাৎকালে জাসির আল হারবিশ বলেন, বাংলাদেশ হচ্ছে ওপেকের এক বড় অংশীদার এবং ৩২ বছর থেকে উভয়ের মধ্যে সুসম্পর্ক বিদ্যমান। এখন আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক সম্প্রসারণে নতুন নতুন বিষয় নিয়ে কাজ করতে চাই। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম বলেন, বৈঠকে বিশেষ করে জ্বালানি ও জ্বালানি সমস্যা নিরসনসহ পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়। প্রেস সচিব বলেন, ওপেক মহাপরিচালক বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, বিশ্বের ১ দশমিক ৩ বিলিয়ন মানুষ বিদ্যুত থেকে বঞ্চিত। ওপেক পানি, খাদ্য ও জ্বালানির ওপর গুরুত্বারোপ করেছে। বিদ্যুত, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে মহাপরিচালক বলেন, বাংলাদেশের জন্য আরও বেশি কিছু করতে ওপেকের জুন মাসের কাউন্সিল সভায় তিনি এক প্রতিবেদন পেশ করবেন। সুলেইমান রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, তিনি (শেখ হাসিনা) শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়ে অতি মানবিক দায়িত্ব পালন করেছেন। মহাপরিচালক রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের ব্যাপারে খোঁজখবর নেন। প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ সফরের জন্য ওএফআইডি মহাপরিচালককে ধন্যবাদ জানিয়ে জ্বালানি সংকট সমাধানে বাংলাদেশের প্রচেষ্টার কথা জানান। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ও মিয়ানমার তাদের প্রত্যাবাসনে ইতোমধ্যে চুক্তি করেছে। নিকট প্রতিবেশী হিসেবে বাংলাদেশ সব সময় সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধান চায়। অনুষ্ঠানে মুখ্য সচিব মোঃ নজিবুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
×