ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

যশোরে ভৈরব নদ খনন শুরু

প্রকাশিত: ০৪:০০, ১৯ জানুয়ারি ২০১৮

যশোরে ভৈরব নদ খনন শুরু

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ অপেক্ষার পালা শেষ। যশোরাঞ্চলের গণমানুষের প্রাণের দাবি ভৈরব নদ খনন শুরু হয়েছে বৃহস্পতিবার থেকে। ভৈরব নদের শহর অংশে শতাধিক অবৈধ স্থাপনা থাকায় শহরতলীর কনেজপুর অংশ থেকে খনন শুরু হয়েছে। তবে, পানি উন্নয়ন বোর্ড পুরোপুরি প্রস্তুত থাকলেও নদ সীমানার ১১৮ অবৈধ স্থাপনা বহাল থাকায় শহরের অংশ খননের টাগের্ট ব্যাহত হচ্ছে। ১১৮ স্থাপনার তালিকা হাতে পেলেও উচ্ছেদ সম্পন্ন করতে আরও কয়েক সপ্তাহ সময় লাগতে পারে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন। ভৈরব নদে নাব্যতা না থাকা, দখলদারদের কারণে নদ অংশ খালে পরিণত হওয়ার কারণে যশোরাঞ্চলের শহর, পাড়া-মহল্লা ও লোকালয়ে জলাবদ্ধতা সৃষ্টির অব্যাহত ঘটনায় এ অঞ্চলের গণমানুষের দাবি ছিল ভৈরব পুনঃখনন। দাবির মুখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সময়োপযোগী পদক্ষেপ হিসেবে ‘জলাবদ্ধতা দূরীকরণ ও টেকসই পানি ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন’ প্রকল্প হাতে নেন। আর এর আওতায় ভৈরব নদ পুনঃখননে ২৭২ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে নদী খননের কাজ শুরুর টার্গেট হাতে নেয়া হয়। খনন কাজ ১ জুলাই ২০১৭ থেকে শুরু হয়ে আগামী ২০২১ সালের মধ্যে শেষ করার টার্গেট গৃহীত হলেও ঠিকাদারি জটিলতায় অগ্রগতি হোঁচট খায়। গত অর্থবছরের শুরুতেই যশোর শহর অংশের বাবলাতলা ব্রিজ থেকে ভাটির দিকে ৬ কিলোমিটার খননের জন্য দুটি টেন্ডার আহ্বান করা হয়। ৩ কিলোমিটার খননের জন্য সরকারী খরচের টার্গেট ৬ কোটি টাকা। আর ৬ কিলোমিটারের জন্য ১২ কোটি টাকা। টেন্ডারে ৪টি বড় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দরপত্র জমা দিলেও তারা দর দেয় দ্বিগুণ, অর্থাৎ ৩ কিলোর জন্য তারা দর হাঁকে ১০ কোটি টাকা করে। এতে করে ওই দরপত্র পাউবো গ্রহণ করতে পারেনি। ওই দরপত্র গ্রহণ করলে প্রকল্পে খরচ বাড়ছিল আরও দুশো কোটি টাকার বেশি। তাই মূল বরাদ্দে কাজ নামাতে পুনঃটেন্ডার আহ্বান করে পাউবো। আর এখন পাউবো চাহিদামত দরপত্র ও ঠিকাদার পেয়ে গেছে। কার্যাদেশও দেয়া হয়েছে। শহর অংশে প্রথম খনন শুরু করার টার্গেট থাকলেও ভৈরবের দু’পাড়ের ১১৮টি কাঁচা পাকা অবৈধ স্থাপনা বহাল থাকায় খনন প্রথম শুরু হলো শহরতলীর কনেজপুর থেকে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যানুযায়ী ওইসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ না হওয়া পর্যন্ত কাজ চলবে অন্য অংশে। এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ড- পাউবো যশোরের নির্বাহী প্রকৌশলী প্রবীর কুমার গোশ্বামী জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার থেকে ভৈরব খনন শুরু হয়েছে। অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি এসে গেছে। তিনি আশা করছেন দু’পাড়ের ১১৮ অবৈধ স্থাপনা জেলা প্রশাসন ত্বরান্বিতভাবে উচ্ছেদ করতে পারলে খননও ত্বরান্বিত হবে। এ ব্যাপারে যশোরের জেলা প্রশাসক আশরাফ উদ্দিন জানিয়েছেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের দেয়া ভৈরব নদ সীমানার ১১৮টি অবৈধ স্থাপনা তালিকা পেয়েছেন। উচ্ছেদ প্রশ্নে বেশ কয়েকটি ধাপ পার হতে হবে। জেলা প্রশাসনের হাতে সড়ক ও জনপথের কয়েকটি উচ্ছেদ সংক্রান্ত কাজ রয়েছে। ভৈরব নদের দু’পাড়ের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে আরও কয়েক সপ্তাহ সময় লাগবে বলে তিনি জানান। এদিকে জেলা প্রশাসনের অপর একটি সূত্র জানিয়েছে, ভৈরব পাড়ের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ জেলা প্রশাসনের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ। অনেক আইনী প্রক্রিয়া পার করতে হবে।
×