ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

যৌন নিপীড়নের বিচার দাবিতে উত্তাল ঢাবি, প্রক্টর লাঞ্ছিত

প্রকাশিত: ০৫:৫৮, ১৮ জানুয়ারি ২০১৮

যৌন নিপীড়নের বিচার দাবিতে উত্তাল ঢাবি, প্রক্টর লাঞ্ছিত

বিশ^বিদ্যালয় রিপোর্টার ॥ সরকারী সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিলের দাবিতে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ে আন্দোলনরত ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত ও শ্লীলতাহানির বিচার দাবিতে দিনভর বিক্ষোভ করেন প্রগতিশীল ছাত্রজোট ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা। বুধবার বিশ^বিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক গোলাম রব্বানীকে সাত ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রেখে লাঞ্ছিত করেন তারা। আগামী রবিবারের মধ্যে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে লাগাতার আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন বিক্ষুব্ধরা। তিন দফা দাবিতে তারা বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসনকে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেয়। দাবিগুলো হলো- চিহ্নিত যৌন নিপীড়কদের বিশ^বিদ্যালয় হতে সাময়িক বহিষ্কার করা, ২৪ ঘটনার মধ্যে তদন্ত কমিটি করা এবং তাতে ছাত্রপ্রতিনিধি রাখা এবং ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তদন্ত কমিটি ফল প্রকাশ করা ও দোষীদের বিশ^বিদ্যালয় হতে স্থায়ী বহিষ্কার করা। মঙ্গলবার ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিলের দাবিতে সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা ভিসি কার্যালয়ে অবস্থান নেয়। এ সময় বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসন তাদের প্রতিহত করতে ছাত্রলীগ ডেকে আনে বলে অভিযোগ উঠে। ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা এসে কিছু আন্দোলনরতদের মারধর এবং আন্দোলন ছাত্রীদের ঘিরে ধরে শ্লীলতাহানি করে। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার বিশ^বিদ্যালয়ের প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠন এবং সাধারণ শিক্ষার্থীরা যৌন নিপীড়নের বিচার দাবিতে বিশ^বিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশ হতে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে বিশ^বিদ্যালয়ের প্রক্টরের কার্যালয়ে অবস্থান নেয়। এ সময় বিক্ষুব্ধরা কলাভবনের প্রক্টর কার্যালয়ের সামনের লোহার ফটক বন্ধ পেয়ে ভাঙচুর করে। ততক্ষণাৎ প্রক্টর গোলাম রব্বানী এসে তাদের বক্তব্য শোনেন। এ সময় আন্দোলনরতরা বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসন থাকতে কেন সরকার দলীয় ছাত্রসংগঠনের নেতাকর্মীরা এসে আন্দোলনরতদের মারধর এবং যৌন নিপীড়ন করে তার জবাব চান। তারা গণমাধ্যমে প্রকাশ হওয়া যৌন নিপীড়কদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক বহিষ্কারের দাবি জানান। কিন্তু প্রক্টর বলেন, বিষয়টি বিশ^বিদ্যালয় উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। প্রক্টর আলোচনায় বসে প্রক্রিয়া অনুসরণ করে দোষীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার আশ^াস দেন। কিন্তু বিক্ষুব্ধরা এতে রাজি হয়নি। তারা প্রক্টরের পদত্যাগের দাবিসহ বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে। পরে প্রক্টর তার কক্ষে চলে গেলে বিক্ষুব্ধরা প্রক্টর অফিসের সামনে বসে পড়েন। প্রক্টর দুপুর আড়াইটার দিকে তার কক্ষ থেকে বের হলে বিক্ষুব্ধরা আবার তাকে ঘিরে ধরে। এ সময় তারা বিচার না করে প্রক্টর কোথাও যেতে পারবে না বলে তাকে অবরুদ্ধ করে রাখে। দীর্ঘ দুই ঘণ্টা প্রক্টর আন্দোলনরতদের মাঝখানে দাঁড়িয়ে থাকেন। পরে তিনি বিক্ষুব্ধদের নিয়ে ভিসি কার্যালয়ে যান। সেখানে বিশ^বিদ্যালয় উপাচার্যে অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান বিক্ষুব্ধদের বক্তব্য শোনেন এবং লিখিত অভিযোগ দেয়ার আহ্বান জানান। ২৪ ঘণ্টার ভেতরে তদন্ত কমিটি গঠন করে আইন অনুযায়ী দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান উপাচার্য। দোষীদের বিরুদ্ধে শাস্তির আশ^াস পেয়ে বিক্ষুব্ধরা সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে ভিসি কার্যালয় ত্যাগ করেন।
×