স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ নিষ্প্রাণ ম্যাচে দুষ্পাপ্য গোল। ম্যাচের অন্তিম মুহূর্ত পর্যন্ত অবস্থাটা এমনই ছিল। কিন্তু খেলা শেষ হবার ঠিক দুই মিনিট আগে দুই দলই দেখাল দারুণ ঝলক। আর তাতেই প্রতি দলই করলো একটি করে গোল। শেষ গোলটি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই খেলা শেষ হবার বাঁশি বাজিয়ে দিলেন রেফারি আনিসুর রহমান সাগর। এতে নিশ্চিত হারের কবল থেকে রক্ষা পেয়ে আনন্দে ভাসলো সাইফ স্পোার্টিং ক্লাব লিমিটেড। আর নিশ্চিত জয় বঞ্চিত হয়ে যেন শোকে বজ্রাহত হয়ে গেল বর্তমান চ্যাম্পিয়ন চট্টগ্রাম আবাহনী লিমিটেড। মঙ্গলবার থেকে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে শুরু হওয়া মৌসুম শেষের ফুটবল আসর ‘স্বাধীনতা কাপে’র উদ্বোধনী ম্যাচে এই দুই দলের খেলাটি ড্র হয় ১-১ গোলে। খেলার প্রথমার্ধের কোন দলই গোল করতে পারেনি।
সদ্য সমাপ্ত বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগে দুই দলই ছিল পয়েন্ট টেবিলে পিঠাপিঠি অবস্থায়। বন্দর নগরীর দল ছিল তৃতীয় এবং নবাগত সাইফ ছিল চতুর্থ স্থানে। স্বাধীনতা কাপের আসরে খেলতে নেমেও দুই দলের অবস্থান, খেলার ধরন ছিল অনেকটা তেমনই। শেষ পর্যন্ত ফলেও একই অবস্থা। নির্ধারিত ৯০ মিনিট ছিল গোলশূন্য ড্র। তবে ইনজুরি টাইমে নাটকীয় মোড় নেয় ম্যাচ। দুই দলই করে একটি করে গোল। ফলে শেষ পর্যন্ত পয়েন্ট ভাগাভাগি করে মাঠ ছাড়ে দুই দল।
মঙ্গলবার বেলুন উড়িয়ে টুর্নামেন্টের উদ্বোধন করেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন বাফুফের সহ-সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ মহি, বাফুফের সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগ, বাফুফে সদস্য শওকত আলী খান জাহাঙ্গীর, ওয়ালটন গ্রুপের হেড অব স্পোর্টস ইকবাল বিন আনোয়ার (ডন) প্রমুখ। যদিও ম্যাচ শুরু হবার কথা ছিল বিকেল সাড়ে তিনটায়। কিন্তু প্রধান অতিথি হিসেবে তথ্যমন্ত্রী আসতে বিলম্ব করেন। এ জন্য আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে ২০ মিনিট দেরিতে শুরু হয় ম্যাচ।
এই আসরে খেলার সুযোগ পাচ্ছে না বিদেশী ফুটবলাররা। তাই স্থানীয় ফুটবলারদের নিজেদের প্রমাণের বড় সুযোগ। কিন্তু বিদেশী ফুটবলারদের অনুপস্থিতিতেও স্থানীয় ফুটবলাররা প্রথমদিনে প্রথম ম্যাচে হতাশাজনক পারফর্ম করেন। বিশ্বাস করা মুশকিল তাদের খেলার মান এতটাই নিম্নমানের। ছন্নœছাড়া, এলোমেলো, পরিকল্পনাহীন, ধারহীন ফুটবল। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠতে পারেÑ এমন ফুটবল খেললে দর্শকরা কেন তাদের গাঁটের পয়সা খরচ করে স্টেডিয়ামে আসবেন খেলা দেখতে?
৪ মিনিটেই গোল করে এগিয়ে যেতে পারতো সাইফ স্পোর্টিং। মিডফিল্ডার মোহাম্মদ ইব্রাহিমের কৌনিক শট গোলরক্ষক ঝাঁপিয়ে পড়ে বল ধরলেও হাত ফসস্কে যায়। সতীর্থ ডিফেন্ডার বল সরিয়ে দিলে বেঁচে যায় চট্টলাবাহিনী। ১৪ মিনিটে বক্সে বল পেয়ে হেড নেন ডিফেন্ডার রেদুয়ান বিন রহমান রাকিন। কিন্তু বল অল্পের জন্য ঢোকেনি সাইফের জালে।
৫৬ মিনিটে বাঁপ্রান্ত দিয়ে বক্সে ঢুকে একটা জোরালো শট নেন চট্টগ্রাম আবাহনীর মিডফিল্ডার জাফর ইকবাল। কিন্তু তার শট সরাসরি লুফে নেন প্রতিপক্ষ গোলরক্ষক। ৬৮ মিনিটে প্রায় মাঝমাঠ থেকে মিডফিল্ডার আব্দুল্লাহর ফ্রি কিক জটলার মধ্যে প্রথমে ক্লিয়ার করেন সাইফের গোলরক্ষক। এরপর ডিফেন্ডাররা সীমানার বাইরে পাঠান বল। পুরো ৯০ মিনিট জুড়ে নিরুত্তাপ ম্যাচটা নাটকীয় মোড় নেয় ইনজুরি টাইমে। ৯২ মিনিটে আব্দুল্লাহর কর্নার বক্সে পেয়ে শটে জালে পাঠান চট্টগ্রাম আবাহনীর মাসুক মিয়া জনি (১-০)। পরের মিনিটেই পেনাল্টি পায় সাইফ। জুয়েল রানার শট বল জালে জড়ানোর সঙ্গে সঙ্গেই শেষ বাঁশি বাজান রেফারি (১-১)।