ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সংসদে আইনমন্ত্রী

দলিল নিবন্ধনের শত বছরের পুরনো পদ্ধতির অবসান হচ্ছে

প্রকাশিত: ০৫:৫৯, ১৭ জানুয়ারি ২০১৮

দলিল নিবন্ধনের শত বছরের পুরনো পদ্ধতির অবসান হচ্ছে

সংসদ রিপোর্টার ॥ দলিল নিবন্ধনের শত বছরের পুরনো পদ্ধতির অবসান হচ্ছে। আসছে ডিজিটাইলজড পদ্ধতিতে দলিল নিবন্ধনের প্রক্রিয়া। দলিল নিবন্ধনের শত বছরের পুরনো পদ্ধতির অবসান ঘটিয়ে আধুনিকায়নের কার্যক্রম হাতে নিয়েছে সরকার। স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে মঙ্গলবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে স্বতন্ত্র দলীয় সংসদ সদস্য ডাঃ রুস্তম আলী ফরাজীর প্রশ্নের জবাবে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক এ তথ্য জানান। তিনি জানান, প্রথম পর্যায়ে পাঁচ রেজিস্ট্রি অফিসের রেকর্ড রুম ডিজিটালাইজেশন পদ্ধতি চালু করা হয়েছে। সফটওয়্যারও প্রস্তুত পর্যায়ে রয়েছে। রেজিস্ট্রি অফিসসমূহে দলিল রেজিস্ট্রির কাজ আধুনিকায়নসহ কম্পিউটারাইজড করার কার্যক্রম দ্রুত ও স্বল্প সময়ের মধ্যেই বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী জানান, দেশের উচ্চ আদালতে ও অধস্তন আদালতে গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিচারাধীন মামলার সংখ্যা ৩০ লাখ ৯ হাজার ৭৮৯টি। এর মধ্যে আপীল বিভাগে ১৬ হাজার ৫৬৫টি, হাইকোর্ট বিভাগে ৪ লাখ ৭৬ হাজার ৭৫০টি এবং অধস্তন আদালতে বিচারাধীন মামলার সংখ্যা ২৮ লাখ ১৬ হাজার ৪৭৪টি। এছাড়া গত ৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে চলমান মোট মামলার সংখ্যা ৮ লাখ ৩৯ হাজার ২৮৬টি। সংসদ সদস্য আবদুল মতিনের প্রশ্নের জবাবে আনিসুল হক জানান, ভুয়া গ্রেফতারি পরোয়ানা ও ভুয়া মামলার বিষয়ে আদালতের নজরে আসলে আদালত ভিন্ন কোন মামলায় তাকে আটক রাখার প্রয়োজন না হলে মুক্ত করে দেন। ভুয়া গ্রেফতারি পরোয়ানা ও ভুয়া মামলার উৎস অনুসন্ধানপূর্বক দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়ে থাকে। দৃষ্টান্তমূলক সাজা প্রদানের মাধ্যমে ভবিষ্যতে এ ধরনের বেআইনী কাজ করতে নিরুৎসাহিত করা হয়। এসব পদক্ষেপের কারণে বর্তমানে ভুয়া গ্রেফতারী পরোয়ানা ও ভুল মামলার ফাঁদ পেতে প্রতারক চক্রের প্রাদুর্ভাব অনেকাংশে হ্রাস পেয়েছে। সরকারদলীয় সংসদ সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরী শাওনের প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী জানান, সারাদেশে মামলার জট কমিয়ে বিচার কাজ ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে এবং এক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জিত হয়েছে। পুরাতন মামলাগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিষ্পত্তির লক্ষ্যে প্রত্যেক আদালতে সাক্ষীর সমন জারি নিশ্চিতপূর্বক সাক্ষীগণকে হাজির করে দ্রুততম সময়ে সাক্ষ্য গ্রহণ করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি জানান, পুরাতন মামলাগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিষ্পত্তির লক্ষ্যে সলিসিটরের নেতৃত্বে মনিটরিং সেল কাজ করছে। মনিটরিং সেল গঠিত হওয়ার পর হতে দেশের বৃহত্তর জেলাগুলোতে পর্যায়ক্রমে ৫-১০ বছর এবং ১০ বছরের অধিক সময়ের পুরাতন ফৌজদারী মামলসমূহ দ্রুত নিষ্পত্তির লক্ষ্যে মতবিনিময়সভার আয়োজন করছে এবং মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তির লক্ষ্যে সুপারিশমালা প্রণয়ন করছে। এছাড়া মামলা জট কমানোর জন্য সরকার আরও অধিকসংখ্যক বিচার নিয়োগের বিষয়টিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার প্রদান করেছে। সরকারদলীয় সংসদ সদস্য এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী জানান, বাধ্যতামূলক বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি সংক্রান্ত বিধান সংযোজন করা হয়েছে সংশোধনীর মাধ্যমে। সংযোজিত ২১ক ধারায় প্রচলিত আইনের অধীন কোন আদালত বা ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক প্রেরিত কোন বিরোধ বিকল্প পদ্ধতিতে নিষ্পত্তির ক্ষমতা লিগ্যাল এইড কর্মকর্তাকে প্রদান করা হয়। এ পদ্ধতি জনগণের জন্য ও জনগণের কল্যাণের উদ্দেশ্যে প্রচার ও প্রসার করতে সরকার সর্বদা সচেতন।
×