ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ঘুষের প্রস্তাব দেয়ায় চায়না হারবার কোম্পানি কালো তালিকাভুক্ত ॥ অর্থমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৫:৫১, ১৭ জানুয়ারি ২০১৮

ঘুষের প্রস্তাব দেয়ায় চায়না হারবার কোম্পানি কালো তালিকাভুক্ত ॥ অর্থমন্ত্রী

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ একজন সচিবকে ঘুষের প্রস্তাব দেয়ায় চায়না হারবার কোম্পানি কালো তালিকাভুক্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। তিনি বলেন, বাংলাদেশে তারা আর কোন কাজ করতে পারবে না। ওই কোম্পানিটির অধীনে যেসব কাজ চলমান রয়েছে সেগুলোর বিষয়েও বিবেচনা করা হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। মঙ্গলবার বিকেলে সচিবালয়ে নিজ দফতরে বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট এনেট ডিক্সনের সাক্ষাত শেষে চায়না হারবার কোম্পানিকে কালো তালিকাভুক্তির কথা তিনি সাংবাদিকদের জানান। এর আগে সোমবার বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ফোরামের (বিডিএফ) সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ফোর লেন প্রকল্পে চীন অর্থায়ন করবে না। এই প্রকল্প নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়ন করবে সরকার। মুহিত বলেন, তারা (চায়না হারবার) সচিবকে প্রস্তাব করেছিল এবং তিনি আমাদের তা জানিয়েছেন। পরিমাণ নির্দিষ্ট করে বলতে না পারলেও অর্থমন্ত্রী বলেন, টাকার পরিমাণ হয়তো ৫০ লাখের মতো হবে। এই কোম্পানি কী এখন ব্ল্যাক লিস্টেড-এমন প্রশ্নে অর্থমন্ত্রী বলেন, ব্ল্যাক লিস্টেড, অবকোর্স। অন্যকোন কাজ করতে পারবে কিনা- জানতে চাইলে মুহিত বলেন, নো, দে ক্যান নট। তারা কিছু কাজ পেয়েছে, সেটাও দেখা যাক কী করা যায়। নরমালি নিয়ম হলো যে, ব্ল্যাক লিস্টেড মিনস ব্ল্যাক লিস্টেড। ব্যাংক কোম্পানি আইনের সংশোধনী হবে ॥ আপত্তি থাকলেও ব্যাংক কোম্পানি আইনের সংশোধন করা হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে একসঙ্গে এক পরিবারে চার সদস্য থাকার সুযোগ তৈরি এবং পরিচালক পদে একটানা নয় বছর থাকার বিধান রেখে ব্যাংক কোম্পানি আইন সংশোধনের বিল জাতীয় সংসদে পাস করানো হবে। এটা নিয়ে কারও কারও আপত্তি রয়েছে। তবে এ প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, আপত্তি থাকলে থাকুক, সংসদে এই বিলটি নিশ্চয় পাস হবে। প্রসঙ্গত, গত সেপ্টেম্বর মাসে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বিলটি উত্থাপন করেন। তবে গত বছরের ৮ মে মন্ত্রিসভার বৈঠকে সংশোধিত আইনের খসড়া অনুমোদনের পর থেকে ব্যাংক খাত সংশ্লিষ্টরা সরকারের এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে আসছেন। নতুন এই সিদ্ধান্তে বেসরকারী ব্যাংকে ‘পরিবারতন্ত্র’ কায়েমের সুযোগ তৈরি হবে বলেও বিভিন্ন মহলের প্রতিক্রিয়া আসে। প্রভাবশালীদের সুযোগ দিতে আইনে এই সংশোধন আনা হচ্ছে বলেও অভিযোগ ওঠে। তবে বিদ্যমান আইনে এক পরিবার থেকে সর্বোচ্চ দুজন সদস্য একটি ব্যাংকের পরিচালক হতে পারেন। আর তিন বছর করে পরপর দুই মেয়াদে মোট ছয় বছর একই ব্যক্তি পরিচালক হতে পারেন। এরপর তিন বছর বিরতি দিয়ে আবারও পরিচালক হতে পারেন। বিলটি পরীক্ষার জন্য পাওয়ার পর গত অক্টোবরে সংসদীয় কমিটির সভাপতি ড. আবদুর রাজ্জাক বলেছিলেন, কোন্্ যুক্তিতে আইন সংশোধনের এই প্রস্তাব আনা হয়েছে, তা অর্থমন্ত্রীর কাছে জানতে চাইবেন তারা। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে উপস্থিত হননি। তাতে অংশ নিয়ে সরকারের সিদ্ধান্তের পক্ষে যুক্তি দিয়েছিলেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান।
×