ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

বগুড়া সামাজিক প্রতিবন্ধী কেন্দ্রের প্রশিক্ষণ কর্মসূচীর অর্ধেক বন্ধ

প্রকাশিত: ০৬:৫০, ১৬ জানুয়ারি ২০১৮

বগুড়া সামাজিক প্রতিবন্ধী কেন্দ্রের প্রশিক্ষণ কর্মসূচীর অর্ধেক বন্ধ

স্টাফ রিপোর্টার, বগুড়া অফিস ॥ বগুড়ার সামাজিক প্রতিবন্ধী নারীদের প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্রের প্রশিক্ষণ কর্মসূচীর অর্ধেক বন্ধ হয়েছে। কেন্দ্রটি প্রকল্প থাকা অবস্থায় যত প্রশিক্ষণ কর্মসূচী ছিল কর্মকর্তা কর্মচারী কমিয়ে রাজস্বখাতে নেয়ার পর অনেক কর্মসূচী বন্ধ করা হয়। পরে জনবল বাড়িয়ে এসব প্রশিক্ষণ চালু করা হয়নি। ফলে প্রতিষ্ঠানটি স্থাপনে যে লক্ষ্য ছিল তা সম্পূর্ণ পূরণে ভাটা পড়েছে। সামাজিক প্রতিবন্ধী নারীদের সংশোধনের পাশাপাশি প্রশিক্ষণ দিয়ে স্বাবলম্বী করে গড়ে তুলে মূল স্রোতে ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে প্রায় দেড়যুগ আগে বগুড়া শহরতলির বারবাকপুরে কেন্দ্রটি স্থাপিত হয়। সরকারী এই প্রতিষ্ঠানটি সমাজসেবা অধিদফতরের অধীনে পরিচালিত। দেশের বিভিন্ন স্থানে পুলিশ ও বেসরকারী সংস্থা কর্তৃক উদ্ধারকৃত যৌনকর্মীদের সংশোধন ও প্রশিক্ষণের জন্য পাঠানো হয় এই কেন্দ্রে। আসন সংখ্যা এক শ’। ভর্তির পর এদের পরিচিতি হয় নিবাসী। গত প্রায় দেড় যুগে এই কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে ২শ’৬৮ জন। কাউন্সিলিং ও প্রশিক্ষণ শেষে তাদের সামাজিকভাবে প্রতিষ্ঠার পথ করে দেয়া হয়। নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত তাদের থাকতে হয়। এই সময়কাল এক থেকে দেড় বছর। খরচ বহন করে সরকার। প্রকল্প থাকা অবস্থায় এই কেন্দ্রে নিবাসীদের প্রশিক্ষণ দেয়ার জন্য চারটি বিষয় নির্ধারণ করা ছিল। এগুলো হলো- বাটিক ও স্ক্রিন প্রিন্টিং, সেলাই ও এমব্রয়ডারি, ইলেকট্রনিক্স, সবজি আবাদ ও হাঁস-মুরগি পালন। বর্তমানে চালু রয়েছে প্রথম দুটি। এর সঙ্গে সাধারণ শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা আছে। প্রশিক্ষক না থাকায় ইলেকট্রনিক্স এবং সবজি আবাদ ও হাঁস-মুরগি পালন বন্ধ রয়েছে। বর্তমানে ইলেকট্রনিক্স মেকানিক্সের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। প্রশিক্ষণ নিয়ে মাঠে নামলেই রোজগার। এমন একটি ট্রেড দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ। চাষাবাদ ও পোলট্রি সেকশনটিও বন্ধ হয়ে আছে। প্রকল্প থাকাকালীন এই কেন্দ্রে সৃষ্টি করা হয় ২৯টি পদ। তখন বলা হয় প্রকল্পটি রাজস্ব খাতে স্থানান্তর হওয়ার সঙ্গেই অস্থায়ী পদগুলো স্থায়ী হবে। প্রায় দেড় বছর আগে প্রতিষ্ঠানটির ১০টি পদকে রাজস্ব খাতে নিয়ে বাকি পদগুলো উঠিয়ে দেয়া হয়। বর্তমানে ব্যবস্থাপকসহ কর্মরত আছেন মাত্র ১০ জন। কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক মোঃ আব্দুল মানিক জানান, সামাজিক প্রতিবন্ধীদের পুনর্বাসনে এই কেন্দ্রের আসন সংখ্যা এক শ’। তাদের এই কেন্দ্রে নিবাসীর মতোই রাখা হয়। প্রত্যেকের থাকার ও খাবারের সঙ্গে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে কেন্দ্র। বর্তমানে এই কেন্দ্রে আছে ১৫ জন নিবাসী। এত কম নিবাসীর অন্যতম একটি কারণ যাদের মাধ্যমে কেন্দ্রে সামাজিক প্রতিবন্ধী পাঠানোর কথা তারা তা পারেন না। তবে যারা কেন্দ্রে আসে তাদের প্রশিক্ষণ দিয়ে মূল স্রোতে ফিরিয়ে দেয়া হয়। নিবাসীদের কেউ অসুস্থ হলে বাইরে নিয়ে চিকিৎসা করাতে ভোগান্তি পোহাতে হয়। বর্তমানে দুইটি ট্রেডে প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। নিবাসীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে সমাজে সন্মানজনক অবস্থানে পৌঁছে দিতে কাজ করা হচ্ছে। তারা অবহেলা ও করুণার পাত্র হয়ে থাকবে না।
×