ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

শিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে ইবতেদায়ি মাদ্রাসা শিক্ষকদের বৈঠক

এমপিওভুক্ত বেসরকারী শিক্ষক কর্মচারীদের এবার অনশন শুরু

প্রকাশিত: ০৬:৪৬, ১৬ জানুয়ারি ২০১৮

এমপিওভুক্ত বেসরকারী শিক্ষক কর্মচারীদের এবার অনশন শুরু

স্টাফ রিপোর্টার ॥ শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণের দাবিতে এবার আমরণ অনশন শুরু করেছেন সরকারী শতভাগ বেতন পেয়ে আসা এমপিওভুক্ত বেসরকারী শিক্ষক-কর্মচারীরা। সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সকাল ১০টা থেকে তারা এ কর্মসূচী শুরু করেছেন। এদিকে শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী কাজী কেরামত আলীর সঙ্গে ফের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে অনশনরত ইবতেদায়ি মাদ্রাসা শিক্ষকদের। তবে এবারেও কোন সুরাহা হয়নি। এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের অংশটি গত ১০ জানুয়ারি থেকে একই স্থানে অবস্থান কর্মসূচী পালন করে আসছিলেন। পরে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ঘোষণা না আসায় তারা অনশন শুরু করেছেন। শিক্ষকরা বলছেন, দেশের বেসরকারী শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণের ঘোষণা দিতে হবে। অন্যথায় তারা রাজপথ ছাড়বেন না। আন্দোলনরত বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির (নজরুল) সভাপতি ও আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী নজরুল ইসলাম রনি বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষণা না আসায় আমরণ অনশনে যেতে বাধ্য হয়েছি। আমরা চাই সরকার বেসরকারী শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণ করুক। শিক্ষকদের একটি অংশ বলছে, দাবি বাস্তবায়নে প্রয়োজনে তারা কাফনের কাপড় পরিধান করে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অভিমুখে পদযাত্রা করারও চিন্তা করছেন। বেসরকারী শিক্ষা জাতীয়করণ লিয়াজোঁ কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ও খিলগাঁও মডেল স্কুলের সহকারী শিক্ষক মতিউর রহমান দুলাল বলেন, সোমবার সকাল থেকেই আমাদের আমরণ অনশন শুরু হয়। আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা অনশন করে যাব। আমাদের দৃঢ়বিশ্বাস, প্রধানমন্ত্রী আমাদের কথা শুনবেন এবং শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণের ঘোষণা দেবেন। তিনি আরও বলেন, ‘শিক্ষকদের বেতন বৈষম্য এবং শিক্ষার্থীদের সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণের বিকল্প নেই। ঘোষণা না আসা পর্যন্ত আমাদের এ যৌক্তিক দাবি আদায়ে আমরা অনশন চালিয়ে যাব। বাংলাদেশ বেসরকারী শিক্ষক কর্মচারী ফোরাম, বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (নজরুল), বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (শাহ আলম-জসিম), জাতীয় শিক্ষক পরিষদ বাংলাদেশ, বাংলাদেশ শিক্ষক ইউনিয়ন মিলে গঠন করা হয়েছে বেসরকারী শিক্ষা জাতীয়করণ লিয়াজোঁ ফোরাম। শিক্ষকদের দাবি, শিক্ষার মান উন্নয়নে জাতীয়করণের বিকল্প নেই। শিক্ষকরা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান নিতে চাইলেও নিরাপত্তাজনিত কারণে সেখানে তাদের বসতে দেয়া হয়নি। পরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান নেন তারা। শিক্ষক নেতারা বলছেন, শিক্ষাব্যবস্থায় দুই নীতি থাকা জরুরী নয়। এটাকে জাতীয়করণ করতেই হবে। না হলে শিক্ষার মান এবং পরিবেশ বজায় রাখা সম্ভব হবে না। তারা বলেন, বেতন ভাতা, ইনক্রিমেন্ট, উৎসব ভাতা, ঈদ বোনাস নিয়ে বেসরকারী শিক্ষকদের সঙ্গে চরম বৈষম্য করা হয় বলে অভিযোগ করেন তরা। এমন বৈষম্য দূর করতে তারা প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপও কামনা করেন। এদিকে রবিবারের পর শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী কাজী কেরামত আলীর সঙ্গে সোমবার ফের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে আমরণ অনশনে থাকা স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা শিক্ষকদের। দুপুরে পরিবহন পুলে প্রতিমন্ত্রীর দফতরে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এ বৈঠকেও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে, অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপ করে পরবর্তী অগ্রগতি জানাবেন বলে শিক্ষকদের জানিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী। বৈঠকে উপস্থিত শিক্ষক সমিতির নেতারা বলেছেন, প্রতিমন্ত্রী কাজী কেরামত আলী তাদের আশ্বস্ত করে বলেছেন, শিক্ষকদের জাতীয়করণের দাবির বিষয়টি নিয়ে অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্তের কথা জানাবেন। এ বৈঠকেও শিক্ষক নেতৃবৃন্দ তাদের দাবির বিষয়ে সুনির্দিষ্ট ঘোষণা না আসা পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যাওয়ার কথা প্রতিমন্ত্রীকে জানিয়েছেন।
×