ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

যুদ্ধাপরাধী বিচার

রাজশাহীর সামাদ মুসার বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল

প্রকাশিত: ০৬:০৬, ১৬ জানুয়ারি ২০১৮

রাজশাহীর সামাদ মুসার বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যা, নির্যাতন, অপহরণ, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে রাজশাহীর পুঠিয়ার রাজাকার আব্দুস সামাদ মুসা ওরফে ফিরোজ খাঁর (৬১) বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছে প্রসিকিউশন পক্ষ। ফরমাল চার্জ দাখিলের ১৫ মার্চ দিন নির্ধারণ করেছেন ট্রাইব্যুনাল। প্রসিকিউশনের তিন মাসের সময়ের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে চেয়ারম্যান বিচারপতি মোঃ শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যবিশিষ্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ সোমবার এ আদেশ প্রদান করেছে। এ সময় প্রসিকিউশন পক্ষে ছিলেন প্রসিকিউটর জাহিদ ইমাম। উল্লেখ্য গত ১৪ জানুয়ারি রাজাকার আব্দুস সামাদ মুসা ওরফে ফিরোজ খাঁর (৬১) বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন চূড়ান্ত করে । আব্দুস সামাদের বিরুদ্ধে পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়েছে। প্রতিবেদনে ৪০৯ পৃষ্ঠার নথিপত্র রয়েছে। আসামির বিরুদ্ধে চার সাঁওতালসহ ১৫ জনকে হত্যা, ২১ জনকে নির্যাতন ছাড়াও অপহরণ, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগসহ যুদ্ধাপরাধের মতো অভিযোগ রয়েছে। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় পুঠিয়ার ভালুকগাছি ইউনিয়নের শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান মোঃ নুরুল ইসলামের (মৃত) নেতৃত্বে রাজাকার বাহিনীর হয়ে এ আসামি পুঠিয়া ও দুর্গাপুর এলাকায় এসব অপরাধ ঘটান। পুঠিয়ার বাঁশবাড়ী এলাকার মৃত আব্বাস আলীর ছেলে মোঃ আব্দুস সামাদ (মুসা) ওরফে ফিরোজ খাঁ মুক্তিযুদ্ধের আগে মুসলিম লীগের সমর্থক ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় জামায়াতে ইসলামীর সমর্থক হিসেবে শান্তি কমিটির স্থানীয় নেতার নেতৃত্বে মানবতাবিরোধী অপরাধে লিপ্ত হন। আসামি ফিরোজ খাঁর বিরুদ্ধে চারজন সাঁওতালসহ ১৫ জনকে হত্যা, ২১ জনকে নির্যাতন, ৮ থেকে ১০টি বাড়িঘর লুণ্ঠনসহ ৫০ থেকে ৬০টি বাড়িঘর অগ্নিসংযোগ করে ধ্বংস করে দেয়ার ঘটনায় পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ১৯৭১ সালের ২০ এপ্রিল সাড়ে ৫টা থেকে সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে পুঠিয়া থানার ভালুকগাছি ইউনিয়নের সাঁওতাল পাড়ায় গিয়ে আসামি ফিরোজ খাঁ, পাকিস্তানী আর্মি ও তাদের সহযোগীরা স্বাধীনতার পক্ষের লাড়ে হেমব্রম, কানু হাসদা, জটু সরেন ও এবং টুনু মাড্ডিকে তরবারি দিয়ে কুপিয়ে ও আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করে। এ আসামি ‘খুবই ধূর্ত’ । তদন্তের সময় নাশকতার এক মামলায় গ্রেফতার হলে ফিরোজ খাঁকে পরে গত বছরের ২৪ জানুয়ারি যুদ্ধাপরাধের এ মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। তার পূর্বপুরুষ ভারতের মুর্শিদাবাদ থেকে আসা। মুক্তিযুদ্ধের পর সে পালিয়ে গিয়েছিল। ২০১৬ সালের ১১ ডিসেম্বর মামলাটির তদন্ত শুরু হয়। তখন এ মামলায় আসামি ছিল ছয়জন। কিন্তু তদন্তকালে পাঁচ আসামির মৃত্যু হয়। তদন্তের সময় ৪৪ জনের জবানবন্দী নেয়া হয়েছে। যাদের প্রত্যেককেই ঘটনার সাক্ষী করা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের আগে তিনি মুসলিম লীগ সমর্থক ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি জামায়াতে ইসলামীর সমর্থক হিসেবে শান্তি কমিটিতে যোগ দেন। শান্তি কমিটির স্থানীয় নেতৃত্বে মানবতাবিরোধী অপরাধ করেন।
×