ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

হাতুরাসিংহেকে ‘স্যালুট’ টাইগার অধিনায়কের

জয় ছাড়া অন্য কিছু ভাবছেন না মাশরাফি

প্রকাশিত: ০৭:০৫, ১৫ জানুয়ারি ২০১৮

জয় ছাড়া অন্য কিছু ভাবছেন না মাশরাফি

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ‘আমরা অবশ্যই জিততে চাই এবং ভালভাবে জিততে চাই।’ কথাগুলো বলেছেন বাংলাদেশ ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। আজ জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে ত্রিদেশীয় ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচ খেলতে নামবে বাংলাদেশ। এই ম্যাচে খেলতে নামার আগে রবিবার ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে মাশরাফির কণ্ঠে এমন সুরই বের হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মাশরাফির দেয়া উত্তরগুলোর সারসংক্ষেপ এখানে তুলে ধরা হলো। এ সংবাদ সম্মেলনেই বাংলাদেশ দলের সাবেক প্রধান কোচ এখন শ্রীলঙ্কার কোচ চন্দিকা হাতুরাসিংহেকে ‘স্যালুট’ও জানিয়েছেন মাশরাফি। উইকেট ও প্রত্যাশা মাশরাফি বিন মর্তুজা ॥ উইকেট সো ফার ভাল উইকেট মনে হচ্ছে। আর প্রত্যাশা অবশ্যই সবার যা আমাদেরও তা। আমরা অবশ্যই জিততে চাই এবং ভালভাবে জিততে চাই। প্রতিপক্ষ যেই হোক সেটা সহজ হবে না। বিশেষ করে যদি জিম্বাবুইয়ের দিকে তাকান তাহলে তারাও ভাল দল। সম্প্রতি তারা শ্রীলঙ্কাকে তাদের মাটিতে হারিয়ে এসেছে। শ্রীলঙ্কাও ভাল দল। ভারতে তারা একটা ম্যাচ জিতে এসেছে। আবহাওয়া ও একাদশ মাশরাফি ॥ বিপিএলে আমাদের বেশিরভাগ খেলোয়াড়ই খেলেছে। আর আন্তর্জাতিক ম্যাচের শুরুতে এসব বিষয় বেশি সামনে আসে। এটা স্বাভাবিক। আসলে বিপিএলের সময় আপনাদের প্রশ্নও এমন ছিল না। তবে প্রত্যেকটা দলের ভিতরেই একটা ডাউট ছিল যে ওয়েদার কেমন হবে। কতটুকু রোল প্লে করবে। অনেক দলই ওভারকাম করেছে। আবার অনেক খেলোয়াড়ও ওভারকাম করেছে। আমার কাছে মনে হয় টুর্নামেন্টের শুরুতে এগুলো না ভেবে আমরা কিভাবে এক্সিকিউশন করতে পারি এবং এই চ্যালেঞ্জগুলো থাকবে এবং এগুলো ওভারকাম করে বাড়তি প্রেসার না নিয়ে কিভাবে কাজ করা যায় সেটা নিয়ে ভাবতে হবে। আর অবশ্যই একটু বেশি কুয়াশা থাকছে। তো ক্যাচিংয়ে একটু সমস্যা হতে পারে। আমরা অনুশীলন করছি শেষ কয়েকদিন ধরে। আন্ডারলাইটেও করেছি। আশাকরি কিছুটা হলেও সবাই ধারণা পেয়েছে কেমন হবে। বাকিটা এক্সিকিউশনের ওপর ডিপেন্ড করবে। টস মাশরাফি ॥ আসলে আমরাও ডাউটে আছি। ব্যাটিং করলে ভাল হবে, নাকি বোলিং করলে ভাল হবে। এটা কুয়াশার ওপর নির্ভর করে। ভারি কুয়াশা পড়লে, আবার শিশির বেশি না পড়লে বোলিংটা ভাল হয়। সো ডিপেন্ড করছে যে পার্টিকুলার ডে’তে ওয়েদার কেমন থাকছে। এক্সিকিউশনটা গুরুত্বপূর্ণ। আমার মনে হয় ব্যাটিং-বোলিং ওরকম কোন পার্থক্য তৈরি করবে। আবার ওই পার্থক্য কমানোর খেলোয়াড় এবং সামর্থ্য আমাদের আছে। আমি মনে করি ওই দিকেই নজর থাকা গুরুত্বপূর্ণ। হাতুরাসিংহে-স্ট্রিক মাশরাফি ॥ আমাদের পুরো দল সম্পর্কে তাদের ধারণা থাকতে পারে। হিথ স্ট্রিক প্রায় দেড়-দুই বছর হলো বাংলাদেশ থেকে গিয়েছে। হাতুরাসিংহে রিসেন্টলি গিয়েছে। তার এ্যানালাইসিস কিছুটা হলেও ক্লোজ হতে পারে। সে আমাদের শেষ সিরিজেও ছিল। ওদের চিন্তা-ভাবনা যে পরিকল্পনা করতে পারে সেটা আমাদেরও সবাই জানে। আমাদেরও ওভাবে পরিকল্পনা করতে হবে। আমাদের পরিকল্পনার মিনিমাম ৭০-৮০ ভাগ যদি মাঠে প্রয়োগ করতে পারি তাহলে আশাকরি সমস্যা হবে না। আমাদের নজর এখন সেখানেই। দেখেন বাংলাদেশের ড্রেসিং রুমে যারা খেলোয়াড় আছে তারা অনেক বড় মানসিকতা নিয়ে ঘোরে। অন বিহাফ অফ দ্য প্লেয়ার আমি হাতুরাসিংহেকে স্যালুট জানাই। অবশ্যই তার আন্ডারে খেলে আমরা ভাল ফল পেয়েছি। অবশ্যই ক্রেডিট তাকে দিতে আমাদের বিন্দুমাত্র সঙ্কোচ নেই। আমরা এমন না যে তাকে ক্রেডিট দিতে চাই না। আবার আমাদের বলতে হবে গত ২০ বছরে আমরা এক্সিকিউশন করেছি। আমাদের তামিমের রেকর্ড, মুশফিকের রেকর্ড শেষ বছরে যদি দেখেন। সাকিবের ম্যাক্সিমাম ক্যারিয়ার যদি দেখেন। মুস্তাফিজের কীর্তি। এগুলো যদি আলাদা আলাদা করে দেখেন কোচ তাদের বিশেষ কিছু করে দেয়নি। তাদের নিজেদের এটা করে নিতে হয়েছে। আলটিমেট প্রেসারটা তাদের নিতে হয়েছে এবং তারা করে নিয়েছে। মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ যখন এক ’শ মারে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তখন আমার কাছে মনে হয়নি কেউ ওখানে গিয়ে তাদের আলাদা করে ধরে খেলিয়ে দিয়ে আসছে। সে তার সামর্থ্য অনুযায়ী খেলার চেষ্টা করেছে এবং পারফর্মেন্স করেছে। আমি যেটা মনে করি যেই কোচ থাকুক তাকে শতভাগ আমরা ব্যাক করেছি খেলোয়াড়রাও। আমাদের বলতে সেটা দ্বিধা নেই। আবার ক্রেডিট ছেলেদের দিতে হবে যেভাবে তারা খেলেছে, আমার বিশ্বাস এখন যারা কোচিং স্টাফ আছেন, হ্যালসাল, সুজন ভাই চাচা আছেন, আমরা ওনাদেরও হানড্রেড পারসেন্ট ব্যাকআপ দেয়ার চেষ্টা করব এবং উনারাও আমাদের হানড্রেড পারসেন্ট ব্যাকআপ করছে। অবশ্যই পেশাদারিত্ব দেখিয়ে সবকিছু চলবে এবং চলছে। গুড লাক টু হাতু। আমরা আমাদেরটা নিয়ে বেশি চিন্তা করছি। পেসার মাশরাফি ॥ দেখেন যদি পেস বোলারদের কথা বলেন। চারজন নিয়ে খেলে সফল হয়েছি। এরপর তিন পেসারের কম নিয়ে খেলিনি। আমাদের পেস বোলারদের ওপর সব সময় একটা আস্থা আমরা রেখেছি। হয়তো বা অনেক সময় আমরা পেস ডেলিভার করতে পারিনি। আবার যখন ডেলিভারি করতে পেরেছি সেই ম্যাচগুলো কিন্তু আমরা জিতেছি। আবার যখন পারিনি আমাদের কারণেও ম্যাচ হেরেছি। আস্থা সবসময় ছিল। এখন অবশ্যই আস্থা আছে। আশা করছি ধারাবাহিকতাও আগের মতো ফিরে আসবে। যেটা ২০১৫-২০১৬ সালে ম্যাক্সিমাম টাইমে ধারাবাহিকভাবে করছিলাম। সৌম্য-তাসকিন বাদ মাশরাফি ॥ পরিবর্তন হয়। সৌম্য এবং তাসকিনের জন্য কিছুটা হলেও খারাপ লাগছে। তারা দলের জন্য খেলতে গিয়ে পারফর্ম করতে পারেনি বলে তারা আজ দলের বাইরে। অধিনায়ক হিসেবে সৌম্যকে আমি স্যালুট দিব যে, ও কোন সময় সেলফিস ছিল না এবং কঠিন সময়ে সে দলের জন্য খেলেছে। সে যদি দেখেন প্রথম দশ ওভারে কিভাবে খেলতে হবে সেটা মানিয়ে নিয়েছিল। এ রকম কঠিন পরিস্থিতিতে অনেক সময় অনেকে চিন্তা করে যে আমি আমার খেলাটা কিছুক্ষণ খেলি। ও কিন্তু এই টাইপের ছিল না। ও কিন্তু টিমের জন্য খেলতে গিয়ে পারফর্ম করতে পারেনি। এ কারণে বাইরে। আর তাসকিনের ওপর দিয়ে কঠিন সময় গিয়েছে। আমাদের অন্য ফাস্ট বোলারদেরও যায়। আমাদের কোচিং স্টাফের সঙ্গে ওদের কথা হয়েছে। বিশেষ করে সুজন ভাই কথা বলেছে দল থেকে বাদ পড়ার পর। ওরা ফার্স্ট ক্লাস ক্রিকেট খেলছে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সেখানে পারফর্ম করে আবার দলের সঙ্গে আসতে পারে। তাদের হানড্রেড পারসেন্ট ব্যাক করতে হবে। এখনও তাদের ব্যাক করছি। ওয়ানডেতে জয় মাশরাফি ॥ অবশ্যই প্রত্যেকটা খেলোয়াড় প্রতিটি ম্যাচ জয়ের জন্য খেলে। জয়টাই মুখ্য থাকে। মাঝে আমরা অনেকদিন ক্রিকেট খেলিনি, মনে হচ্ছে আমরা অনেকদিন আগে জয় পেয়েছি। দক্ষিণ আফ্রিকায় আমাদের অনেক সময় গিয়েছে। সব দলেরই কম-বেশি যাচ্ছে। আর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে জয় অনেকদিন আগে। আর আমাদের জন্য সামনে ভাল সুযোগ আছে। ভেরি ইন্টারেসটিং টুর্নামেন্ট শুরু হচ্ছে কাল (আজ) থেকে। আমাদের জন্য খুব ভাল একটা সুযোগ, যদি আমরা এটা কাজে লাগাতে পারি তাহলে ভাল কিছু আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে।
×