ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

তারা অনশন চালিয়ে যাবেন

এবার ইবতেদায়িরাও শিক্ষামন্ত্রীর অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করলেন

প্রকাশিত: ০৫:১৭, ১৫ জানুয়ারি ২০১৮

এবার ইবতেদায়িরাও শিক্ষামন্ত্রীর অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করলেন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নন-এমপিও শিক্ষকদের পর এবার শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ ও প্রতিমন্ত্রী কাজী কেরামত আলীর অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করে অনশন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ইবতেদায়ির শিক্ষকরা। ইবতেদায়ি মাদ্রাসা জাতীয়করণের সুস্পষ্ট ঘোষণা না দেয়া পর্যন্ত জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনশন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। শিক্ষকরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। শিক্ষকরা বলছেন, অনশন করতে গিয়ে মৃত্যু হলেও তারা রাস্তা ছাড়বেন না। এর আগে এমপিওভুক্তির দাবিতে ৩১ ডিসেম্বর থেকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আমরণ অনশন শুরু করেছিলেন নন-এমপিও শিক্ষকরা। অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে ইতিবাচক আলোচনার পর শিক্ষামন্ত্রী অনশনস্থলে এসে দাবি পূরণের আশ্বাস দিলেও তা প্রত্যাখ্যান করে দাবি পূরণের সুনির্দিষ্ট ঘোষণার আহ্বান জানিয়ে অনশন চালিয়ে যান। এক পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে একই বার্তা নিয়ে একান্ত সচিব ও শিক্ষা সচিব অনুরোধ করলে ৫ জানুয়ারি অনশন ভাঙ্গেন তারা। এবার ইবতেদায়ি মাদ্রাসার শিক্ষকরাও হাঁটছেন একই পথে। তবে এবার কেবল শিক্ষামন্ত্রী নন, একই সঙ্গে নতুন প্রতিমন্ত্রীর অনুরোধও প্রত্যাখ্যান করে জাতীয়করণের সুস্পষ্ট ঘোষণা না দেয়া পর্যন্ত অনশন ভাঙ্গবেন না বলে ঘোষণা দিয়ে শিক্ষকরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। রবিবার সচিবালয়ে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এবং মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী কাজী কেরামত আলীর সঙ্গে আন্দোলনরত শিক্ষক নেতাদের দীর্ঘ আড়াই ঘণ্টা বৈঠকের পর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, আন্দোলনরত বাংলাদেশ স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা শিক্ষকগণের দাবির বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয় বৈঠকে। শিক্ষামন্ত্রী তাদের বলেছেন, চলমান সঙ্কট নিরসনে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সক্রিয় প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। শীঘ্রই এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীকে অবহিত করা হবে। শিক্ষামন্ত্রী ইবতেদায়ি মাদ্রাসা শিক্ষক সমিতির সভাপতি কাজী রুহুল আমিন চৌধুরী ও মহাসচিব কাজী মোখলেছুর রহমানকে সভার সিদ্ধান্ত অবহিত করে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আন্দোলনরত আমরণ অনশনকারী শিক্ষকদের নিয়ে ঘরে ফিরে যাওয়ার অনুরোধ জানান। তিনি এই তীব্র শীতের মধ্যে আর কষ্ট না করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, আপনাদের দাবি ও সমস্যা যথাযথভাবে আমরা প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরব। আপনারা ঘরে ফিরে যান। এ সময় শিক্ষক নেতারা মন্ত্রীর প্রস্তাবে সাড়া দিয়ে বলেন, সারাদেশের শিক্ষক প্রতিনিধিরা যেহেতু অনশনে আছে, সেখান থেকে ২০ জনের একটি প্রতিনিধি দলের সামনে এই প্রস্তাব তুলে ধরলে ভাল হয়। সেই অনুযায়ী বিকেল ৩টায় আবার ২০ জনকে তারা মন্ত্রীর অফিসকক্ষে নিয়ে আসেন। মন্ত্রী এবার ২০ জন শিক্ষক প্রতিনিধির কাছে ঘরে ফিরে যাওয়ার অনুরোধ জানান। তাদের দাবি বিষয়ে শীঘ্রই প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীর কাছে যথাযথভাবে তুলে ধরার আশ্বাস দেন । সভায় মন্ত্রী এবং প্রতিমন্ত্রী ছাড়াও কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা সচিব মোঃ আলমগীর, অতিরিক্ত সচিব এ কে এম জাকির হোসেন ভূঁইয়া, অশোক কুমার বিশ্বাস ও রওনক মাহমুদ, মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক মোঃ বিল্লাল হোসেনসহ সংশ্লিষ্ট উর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। অনশনস্থালে আসার পরই তাদের অনড় অবস্থানের কথা জানান সমিতির সভাপতি আলহাজ কাজী রুহুল আমিন চৌধুরীসহ অন্যান্য নেতা। রুহুল আমিন চৌধুরী বলছিলেন, আন্দোলন প্রত্যাহারের অনুরোধ জানালে শিক্ষামন্ত্রীকে আমরা বলেছি প্রতিশ্রুতি দিতে। তিনি (মন্ত্রী) প্রতিশ্রুতি দিতে রাজি নন। পরে আমরা বলেছি, যদি অর্থ বরাদ্দ না থাকে তাহলে পরবর্তী অর্থবছর থেকে নিবন্ধন পাওয়া সব ইবতেদায়ি মাদ্রাসাগুলোকে যাচাই-বাছাই করে ‘ক’, ‘খ’ ও ‘গ’ গ্রুপে ভাগ করে ধাপে ধাপে জাতীয়করণ করেন। তিনি (মন্ত্রী) এতেও রাজি নন। তখন আমরা মিটিং থেকে বের হয়ে সিন্ধান্ত নিলাম জাতীয়করণের দাবি বাস্তবায়নে সুনির্দিষ্ট ঘোষণা না দেয়া পর্যন্ত অনশন ভাঙ্গব না। পরে প্রেসক্লাবের সামনে অনশনস্থলে অনশন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয়া হয়েছে।
×