ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ত্রিদেশীয় সিরিজ

আজ বাংলাদেশ জিম্বাবুইয়ে লড়াই

প্রকাশিত: ০৪:৫৮, ১৫ জানুয়ারি ২০১৮

আজ বাংলাদেশ জিম্বাবুইয়ে লড়াই

মিথুন আশরাফ ॥ বাংলাদেশ-জিম্বাবুইয়ে ম্যাচ দিয়ে ত্রিদেশীয় সিরিজ শুরু হচ্ছে আজ। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে দুপুর ১২টায় শুরু হবে ম্যাচটি। ম্যাচটিতে দুই দলই জিততে চায়। বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা জয়ের আশা নিয়ে বলেন, ‘প্রত্যাশা অবশ্যই সবার যা আমাদেরও তা। আমরা অবশ্যই জিততে চাই এবং ভালভাবে জিততে চাই। প্রতিপক্ষ যেই হোক সেটা সহজ হবে না। বিশেষ করে যদি জিম্বাবুইয়ের দিকে তাকান তাহলে তারাও ভাল দল। সম্প্রতি তারা শ্রীলঙ্কাকে তাদের মাটিতে হারিয়ে এসেছে।’ জিম্বাবুইয়ে অধিনায়ক গ্রায়েম ক্রেমার জয়ের প্রত্যাশা করছেন। সঙ্গে প্রতিযোগিতাপূর্ণ সিরিজের আশাও করছেন। বলেছেন, ‘প্রত্যেকটি দলই ওয়ানডে ক্রিকেটে ভাল করার সামর্থ্য রাখে। তিন দলেরই ভাল স্পিনার রয়েছে। আমার মনে হয় মাঠে যে টিম সেরাটা দিতে পারবে ফল তাদের পক্ষে যাবে। আমার মনে হয় এটা বলা খুব কঠিন। প্রতিটি দল নিজের দিনে যে কাউকে হারানোর ক্ষমতা রাখে। আমার মনে হয় দারুণ একটা ত্রিদেশীয় সিরিজ হবে।’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘তারা নিজেদের মাঠে অনেক বেশি শক্তিশালী। আমি মনে করি তারুণ্য এবং অভিজ্ঞতা মিলিয়ে আমাদের দল। আমাদের অনেকেই এখানে দীর্ঘ সময় ক্রিকেট খেলেছে। আমরা জানি বাংলাদেশের খেলোয়াড়রাই এগিয়ে। আমরা শ্রীলঙ্কা সিরিজ থেকে আত্মবিশ্বাস নিয়ে ফিরেছি। আমি মনে করি আমাদের দলটাও এখন দারুণভাবে সজ্জিত।’ সিরিজে বাংলাদেশসহ, শ্রীলঙ্কা ও জিম্বাবুইয়ে খেলছে। সিরিজের প্রথম ম্যাচ এটি। এ ম্যাচ দিয়ে বাংলাদেশ ও জিম্বাবুইয়ের ত্রিদেশীয় সিরিজের মিশনও শুরু হচ্ছে। এরপর ১৭ জানুয়ারি লঙ্কানদের ত্রিদেশীয় সিরিজের মিশন শুরু হবে। ২৭ জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে সিরিজ। প্রতিটি দল সিরিজে পরস্পরের বিপক্ষে দুটি করে ম্যাচ খেলবে। পয়েন্ট তালিকায় যে দুটি দল সবার ওপরে থাকবে তারাই ২৭ জানুয়ারি ফাইনালে খেলবে। বাংলাদেশ-জিম্বাবুইয়ে প্রথম ম্যাচের পর ১৭ জানুয়ারি শ্রীলঙ্কা-জিম্বাবুইয়ে, ১৯ জানুয়ারি বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা, ২১ জানুয়ারি শ্রীলঙ্কা-জিম্বাবুইয়ে, ২৩ জানুয়ারি বাংলাদেশ-জিম্বাবুইয়ে ও ২৫ জানুয়ারি শ্রীলঙ্কা-জিম্বাবুইয়ের মধ্যকার সিরিজের শেষ ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। এরপর ২৭ জানুয়ারি ফাইনাল হবে। একটা সময় ছিল যখন জিম্বাবুইয়ের কাছে শুধু হারই হতো বাংলাদেশের। এখন একটা সময় এসেছে যখন জিম্বাবুইয়ে শুধু হারে। জয়ী দলটির নাম হয় বাংলাদেশ। ২০০৫ সাল থেকে বাংলাদেশই শুধু জিতে। দেশের মাটিতে খেলা হলে তো কথাই নেই। ১৯৯৭ সাল থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত ১৩ ম্যাচের ১২টিতেই হেরেছে বাংলাদেশ। টানা ১০ ম্যাচ হেরেছে। ২০০৫ সাল থেকে সেই চিত্র পাল্টে যেতে থাকে। ২০০৫ সালে ওয়ানডে সিরিজ জেতার পর থেকেই বাংলাদেশের জেতার পাল্লা বাড়তে থাকে। ২০০৬ সালে গিয়ে তো টানা ৮ ম্যাচে জিতে বাংলাদেশ। ২০১৪ সাল থেকে তো বাংলাদেশের বিপক্ষে কোন ওয়ানডে ম্যাচই জিততে পারেনি জিম্বাবুইয়ে। জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে এখন পর্যন্ত ৬৭ ওয়ানডে খেলে ৩৯টিতে জিতে বাংলাদেশ। হারে ২৮টি ম্যাচে। এমনই অবস্থা দাঁড়ায়, এ সিরিজেও জিম্বাবুইয়েকে হারানোর আশাই আছে বাংলাদেশের। দেশের মাটিতে খেলা হবে। বাংলাদেশ তো দেশের মাটিতে এখন অপ্রতিদ্বন্দ্বী দলে পরিণত হয়েছে। যত শক্তিশালী দলই হোক দেশের মাটিতে বাংলাদেশকে হারাতে হলে কঠিন পরীক্ষাই দিতে হয় প্রতিপক্ষকে। সর্বশেষ ২০১৬ সালের অক্টোবরে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে ম্যাচ খেলে বাংলাদেশ। সেই ম্যাচটিতেও বাংলাদেশই জিতে। সর্বশেষ মিরপুর স্টেডিয়ামে খেলা ম্যাচে এবং জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে ২০১৪ সাল থেকে জেতার ধারাবাহিকতা এবারও বজায় রাখতে চায় বাংলাদেশ। এ জন্য দলের ক্রিকেটাররাও প্রস্তুত। এ সিরিজকে সামনে রেখে মিরপুর স্টেডিয়ামে কঠোর পরিশ্রম করেছে মাশরাফিবাহিনী। জিম্বাবুইয়েও নিজ দেশে প্রস্তুতি নিয়ে এসেছে। তবে এবার সিরিজটি বাংলাদেশের জন্যও চ্যালেঞ্জের। দলে কোচ নেই। চন্দিকা হাতুরাসিংহে বাংলাদেশের কোচের পদ ছেড়ে দিয়ে এখন শ্রীলঙ্কার কোচ। জিম্বাবুইয়ে দলের কোচ আবার বাংলাদেশ দলের সাবেক বোলিং কোচ হিথ স্ট্রিক। স্ট্রিক বাংলাদেশ দল সম্পর্কে খুব ভাল করেই জানেন। স্ট্রিক জিম্বাবুইয়ের প্রধান কোচের দায়িত্ব নেয়ার পর শ্রীলঙ্কাকে সিরিজে হারায় জিম্বাবুইয়ে। সর্বশেষ সিরিজ শ্রীলঙ্কার মাটিতে খেলে জিম্বাবুইয়ে। সেই সিরিজেই জিতে। শ্রীলঙ্কাকে শ্রীলঙ্কার মাটিতে সিরিজে হারানোয় জিম্বাবুইয়ের আত্মবিশ্বাস বাড়তিই আছে। সেই আত্মবিশ্বাসের সামনে পড়তে হচ্ছে বাংলাদেশকে। এখন বাংলাদেশ সেই আত্মবিশ্বাসকে গুঁড়িয়ে দিতে পারলেই হয়। আজই জিম্বাবুইয়েকে হারিয়ে দিতে পারলে সিরিজে শুভ সূচনাও হয়ে যাবে।
×