ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

উত্তরাঞ্চলে ধরাশায়ী মধ্যাঞ্চল

প্রকাশিত: ০৫:২১, ১৩ জানুয়ারি ২০১৮

উত্তরাঞ্চলে ধরাশায়ী মধ্যাঞ্চল

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ ক্রিকেট লীগের (বিসিএল) ষষ্ঠ আসরের প্রথম রাউন্ডের খেলা তৃতীয়দিন গড়াতেই দুই ম্যাচের ভবিষ্যত বোঝা হয়ে গিয়েছিল। বিসিবি উত্তরাঞ্চলের বিপক্ষে ওয়ালটন মধ্যাঞ্চল হারের মুখে পড়েছে আর প্রাইম ব্যাংক দক্ষিণাঞ্চল-ইসলামী ব্যাংক পূর্বাঞ্চল ম্যাচটি ড্র হতে চলেছে তা আগেই বোঝা হয়ে যায়। হয়েছেও তাই। উত্তরাঞ্চলের কাছে ৯ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে হেরেছে মধ্যাঞ্চল। দক্ষিণাঞ্চল-পূর্বাঞ্চল ম্যাচটি ড্র’ই হয়েছে। বিকেএসপিতে ডাবল সেঞ্চুরিয়ান মুমিনুল হক ও সেঞ্চুরিয়ান জাকির হাসানের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে পূর্বাঞ্চল যেন উড়তে থাকে। মুমিনুলের ২৫৮ রান ও জাকিরের ১১৯ রানে প্রথম ইনিংসে ৫৪৬ রান করে। তাতে দক্ষিণাঞ্চলের বিপদ রেখা দেখা যায়। কিন্তু মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ও তুষার ইমরান মিলে দুর্দান্তভাবে ম্যাচকে ঘুরিয়ে দেন। দুইজনই সেঞ্চুরি করেন। মোসাদ্দেক ১১০ ও তুষার ১০৫ রান করেন। তারা দুইজন যখন ২১৮ রানের জুটি গড়ে বড় স্কোর গড়ার দিকে দলকে এগিয়ে নেন তখনই ম্যাচটি ড্র হওয়ার দিকে ঝুঁকে যায়। তৃতীয়দিন শেষে মোসাদ্দেক ও তুষারের জোড়া সেঞ্চুরিতে দক্ষিণাঞ্চল ৫ উইকেট হারিয়ে ৩১৮ রান করে দিন শেষ করে। পূর্বাঞ্চল থেকে ২২৮ রানে পিছিয়ে থাকে। কিন্তু দুই দলেরই একটি করে ইনিংস বাকি থাকায় ধরেই নেয়া হয় ম্যাচটি ড্র হবে। শেষ পর্যন্ত চতুর্থদিন দক্ষিণাঞ্চল প্রথম ইনিংসে ৩৯৫ রান করতেই গুটিয়ে যায়। সোহাগ গাজীর (৫/৮৬) স্পিন ঘূর্ণিতে চতুর্থদিন বেশিদূর এগিয়ে যেতে পারেনি দক্ষিণাঞ্চল। পূর্বাঞ্চল ১৪৮ রানে এগিয়ে যায়। এরপর পূর্বাঞ্চল ৪ উইকেট হারিয়ে ৯৩ রান করে ২৪১ রানে এগিয়ে থাকতেই দিন শেষ হয়। দিন শেষ হওয়ার তখনও আধাঘণ্টা বাকি থাকে। কিন্তু ম্যাচ থেকে কোন রেজাল্ট বের হবে না। তাই দুই দলের সম্মতিতে আগেই দিন শেষ করা হয়। ম্যাচটিও ড্র হয়। লিটন কুমার দাস অপরাজিত ৫১ রান করেন। সিলেটে তৃতীয়দিনেই হারের শঙ্কায় পড়ে গেছে মধ্যাঞ্চল। প্রথম ইনিংসের পর দ্বিতীয় ইনিংসেও মধ্যাঞ্চল ব্যাটসম্যানরা ব্যাট হাতে ব্যর্থ হয়েছেন। প্রথম ইনিংসে ১৮৮ রানেই অলআউট হয়ে গিয়েছিল মধ্যাঞ্চল। সেই তুলনায় দ্বিতীয় ইনিংসে উন্নতি হয়। তবে রকিবুল হাসানের (১০৫) সেঞ্চুরির পর মোশাররফ হোসেন রুবেলের ৬১ রানে ৩৩৬ রানের বেশি করতে পারেনি মধ্যাঞ্চল। আর তাই প্রথম ইনিংসে যে উত্তরাঞ্চল ৪৫৭ রান করেছিল তা থেকে ৬৭ রানে এগিয়ে যেতে পেরেছে। এই এগিয়ে যাওয়ার পর উত্তরাঞ্চলের সামনে জিততে ৬৮ রানের টার্গেট পড়ার পর মনে হয়েছিল ১০ উইকেটেই হারতে পারে মধ্যাঞ্চল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ১ উইকেট ফেলা গেছে। উত্তরাঞ্চল ১ উইকেট হারিয়ে ৭০ রান করে জিতে গেছে। জহুরুল ইসলাম অমির (১৫২*) সেঞ্চুরি ও ধীমান ঘোষের ৯৩ রানে ৯ উইকেটে ৪৫৭ রান করা উত্তরাঞ্চল প্রথম ইনিংস ঘোষণা করে। এরপর দ্বিতীয় ইনিংসে খেলতে নেমে তৃতীয়দিন শেষে মধ্যাঞ্চল ৭ উইকেট হারিয়ে ২৩৪ রান করতে পারে। রকিবুল হাসানের (১০৫) সেঞ্চুরিতেই তা সম্ভব হয়। কিন্তু হারের শঙ্কাতেই ছিল দলটি। তৃতীয়দিনেও ৩৫ রানে পিছিয়ে ছিল। হাতে ছিল ৩ উইকেট। ম্যাচের চতুর্থ ও শেষদিনে মোশাররফ হোসেন রুবেল দুর্দান্ত ব্যাটিং করাতে টার্গেট দিতে পেরেছে মধ্যাঞ্চল। না হলে ইনিংস ব্যবধানে হারের শঙ্কাতেও ছিল। এরপরও ৯ উইকেটের বড় হারই হয়েছে। স্কোর ॥ পূর্বাঞ্চল-দক্ষিণাঞ্চল ম্যাচ পূর্বাঞ্চল প্রথম ইনিংস ৫৪৬/১০; ১২৯.৫ ওভার (মুমিনুল ২৫৮, জাকির ১১৯; রাজ্জাক ৬/১৭৮, সাকলায়েন ৩/৯৩) এবং দ্বিতীয় ইনিংস ৯৩/৪; ২৯ ওভার (লিটন ৫১*, ইয়াসির ১৯; রাজ্জাক ৩/৪১)। দক্ষিণাঞ্চল প্রথম ইনিংস তৃতীয়দিন শেষে ৩১৮/৫; ৮৯ ওভার (মোসাদ্দেক ১১০, তুষার ১০৫, আল-আমিন ১৭*, সোহান ১৩*; সোহাগ ৩/৬৫) ও চতুর্থদিন ৩৯৫/১০; ১১০.৫ ওভার (আল-আমিন ৪৯*, সোহান ৪৭; সোহাগ ৫/৮৬, নাজমুল অপু ৩/১২৭)। ফল ॥ ম্যাচ ড্র। ম্যাচসেরা ॥ মুমিনুল হক (পূর্বাঞ্চল)। উত্তরাঞ্চল-মধ্যাঞ্চল ম্যাচ মধ্যাঞ্চল প্রথম ইনিংস ১৮৮/১০; ৫৬ ওভার (ইরফান ৫৭*, মেহরাব ২৭, তাসকিন ৩৪; আরিফুল ৪/৫৫) এবং দ্বিতীয় ইনিংস তৃতীয়দিন শেষে ২৩৪/৭; ৭৭ ওভার (রকিবুল ১০৫, তানভির ৩৮, ইরফান ২৪, মোশাররফ ১৪*, মেহরাব জুনিয়র ৭*; আরিফুল ২/৩১) ও চতুর্থদিন শেষে ৩৩৬/১০; ১১৬.৫ ওভার (মোশাররফ ৬১, শরীফ ২৪; সোহরাওয়ার্দী শুভ ৪/৭১, আরিফুল ৩/৫০)। উত্তরাঞ্চল প্রথম ইনিংস ৪৫৭/৯; (ইনিংস ঘোষণা); ১১৯.৪ ওভার (জহুরুল ১৫৮; তাসকিন ৪/১২২) ও দ্বিতীয় ইনিংস (টার্গেট ৬৮ রান) ৭০/১; ১২.১ ওভার (নাজমুল ৩১*, মিজানুর ২৫, জুনায়েদ ১০*; তানভির ১/১৫)। ফল ॥ উত্তরাঞ্চল ৯ উইকেটে জয়ী। ম্যাচসেরা ॥ জহুরুল ইসলাম অমি (উত্তরাঞ্চল)।
×